১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বৃক্ষরোপণের বিশেষ পরিকল্পনা করেছে হাওড়া জেলা প্রশাসন।
ঘূর্ণিঝড় আমপানে হাওড়া জেলায় ভেঙে পড়েছে অসংখ্য গাছ। পরিবেশের সেই ক্ষতি পূরণ করতে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বৃক্ষরোপণের বিশেষ পরিকল্পনা করেছে হাওড়া জেলা প্রশাসন।
প্রতি বছরই ৭-১৪ জুন বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করা হয়। এর জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাও থাকে। এ বছর আমপানের পরিপ্রেক্ষিতে সেই কর্মসূচির পাশাপাশি চলবে এই বিশেষ অভিযানও। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের এ বছরের লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল,
সেই অনুযায়ী বৃক্ষরোপণ তো হবেই, তার সঙ্গে ঘূর্ণিঝড়ে যত গাছ ভেঙেছে, তার দশ গুণ বেশি চারা রোপণ করা হবে।’’ কতগুলি গাছ ভেঙে পড়েছে তার চূড়ান্ত হিসাব চলছে বলে ইন্দ্রনীলবাবু জানান।
প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি বছরে তিন লক্ষ চারা রোপণের কর্মসূচি আগেই নেওয়া হয়েছিল। চারাগুলি রোপণের সময়সীমা এ বার বাড়ানো হবে। বর্ষা নামার আগে পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি চালানো হবে। চারার জোগান দেবে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসন। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পেই প্রতি বছর ব্লক প্রশাসনগুলির উদ্যোগে নার্সারিতে চারা তৈরি হয়। জেলায় আপাতত ২ লক্ষ চারা আছে। বাকি চারা নেওয়া হবে অ্যাগ্রো-ইন্ডাস্ট্রিজ কর্পোরেশন, রাজ্য উদ্যানপালন বিভাগ এবং কম্প্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন-এর কাছ থেকে। সরকারের এই তিনটি বিভাগের নিজস্ব নার্সারি আছে। কিছু চারা নেওয়া হবে জেলা বন দফতরের কাছ থেকে। এর পরেও যদি চারা কম পড়ে, তা হলে তা বেসরকারি নার্সারিগুলি থেকে কিনে নেওয়া হবে। একশো দিনের কাজের প্রকল্পেই
চারা কেনার জন্য টাকা বরাদ্দ করা থাকে বলে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান।
আমপানে যে তিনটি ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, তা হল— কাঁচাবাড়ি পড়ে যাওয়া, পাকা বাড়ির টিন বা টালির ছাউনি উড়ে যাওয়া, আর গাছ পড়া। যত গাছ পড়েছে সাম্প্রতিক অতীতে তার নজির নেই। ছোটবড় সব গাছ শিকড় থেকে উপড়ে গিয়েছে। এত গাছ পড়ার ফলে পরিবেশের ক্ষতি হয়েছে বলে জানান পরিবেশবিদরা। এই অবস্থায় দেরি না-করে আমপান পরবর্তী জীবনযাত্রা স্বাভাবিক করার কর্মসূচির সঙ্গে সঙ্গে বৃক্ষরোপণেরও পরিকল্পনা করেছে জেলা প্রশাসন।
বৃক্ষরোপণের ফলে শুধু পরিবেশের ভারসাম্যই রক্ষা হবে না, অনেকের কর্মসংস্থানও হবে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। লকডাউনে যখন অন্য কাজের জগতে মন্দা দেখা দিয়েছে, তখন বনসৃজনের মাধ্যমে অনেকে কাজ পাবেন। গাছ লাগানোর জায়গা পরিষ্কার করা, গর্ত করা, তাতে বেড়া দেওয়ার জন্য অনেক মজুর লাগে। শুধু তা-ই নয়, বৃক্ষরোপণের পর গাছগুলি যাতে কেউ নষ্ট করে ফেলতে না পারে, সে জন্য নজরদার নিয়োগ করারও সংস্থান আছে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে।
জেলা প্রশাসনের ওই নতুন কর্মসূচিতে খুশি পরিবেশকর্মীরা। পরিবেশকর্মী উলুবেড়িয়ার মাধবপুরের জয়িতা কুণ্ডু কুঁতি বলেন, ‘‘সরকারের উদ্যোগ প্রশংসনীয়। প্রশাসন চাইলে আমরাও সহায়তা করতে পারি। গাছ লাগানো খুব দরকার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy