Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
বিদ্যুৎকর্মীদের মার, বিদায়ী কাউন্সিলরকে হেনস্থা
Cyclone Amphan

বিদ্যুৎ-ভোগান্তি অব্যাহত, হুগলিতে বিক্ষোভ চলছেই

অবিলম্বে বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিতে উত্তরপাড়া স্টেশন সংলগ্ন সিএ মাঠের সামনে রাস্তায় আবর্জনা ফেলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দা।

বিদ্যুতের দাবিতে চুঁচুড়ার তামলিপাড়ায় বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ

বিদ্যুতের দাবিতে চুঁচুড়ার তামলিপাড়ায় বিক্ষোভ। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০২০ ০০:১৯
Share: Save:

আমপান বিদায়ের তিন দিন পরেও হুগলি জেলার বিস্তীর্ণ অংশে বিদ্যুতের দেখা নেই। তার ফলে শহর থেকে গ্রাম সর্বত্রই সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ চরমে। ভোগান্তির সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্ষোভ। জেলার বহু জায়গায় এ দিন বিদ্যুৎ ও জলের দাবিতে অবরোধ হয়। কোথাও জনতার ক্ষোভ গিয়ে পড়ে বিদায়ী কাউন্সিলরের উপরে, কোথাও গ্রামবাসীর হাতে বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের নিগ্রহের অভিযোগ ওঠে। কোথাও আবার অবরোধ তুলতে পুলিশকে লাঠি চালাতে হয়।

অবিলম্বে বিদ্যুৎ সংযোগের দাবিতে উত্তরপাড়া স্টেশন সংলগ্ন সিএ মাঠের সামনে রাস্তায় আবর্জনা ফেলে বিক্ষোভ দেখান স্থানীয় বাসিন্দা। কিছু লোক বিদায়ী কাউন্সিলর উৎপলাদিত্য বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চড়াও হন। রাস্তায় তাঁকে পেয়ে ধাক্কাধাক্কি করা হয় বলেও অভিযোগ। শহরের এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা তো অজ পাড়া-গাঁয়ে থাকি না। ঝড়ের তিনদিন পরেও পানীয় জল, বিদ্যুৎ মিলবে না! প্রশাসনের কর্তারা কী করেন?’’ যদিও তৃণমূলের বিদায়ী কাউন্সিলর উৎপলাদিত্যবাবু বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি। কিন্তু বিদ্যুৎ দফতর তো পুরসভার হাতে নয়। গণ্ডগোল করে কী সমস্যা মিটবে?’’ হিন্দমোটর বটতলায় শুক্রবার সকাল থেকে দফায় দফায় জিটি রোড অবরোধ হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। শনিবার দুপুরেও এখানে অবরোধ হয়। কোন্নগর, শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটী, ডানকুনি, চুঁচুড়া, ব্যান্ডেলে এ দিন অবরোধ হয়। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় সিইএসসি-র কাজে ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে নাজেহাল হতে হয়।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘জল, বিদ্যুৎ না পেয়ে পাঁচটি ভিন্ন এলাকায় মানুষ অবরোধ করেন। উত্তরপাড়ায় বিদায়ী কাউন্সিলরকে হেনস্থার ঘটনায় পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’

এ দিন সকাল ১১ টা থেকে কোন্নগর পুরসভার সামনে বিক্ষোভ দেখান ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। চয়ন ভট্টাচার্য নামে এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘সিইএসসি এবং পুরসভাকে বার বার বলেও সমস্যার সুরাহা হচ্ছে না।’’ শুক্রবার রাতে চুঁচুড়ার সুকান্তনগরে স্থানীয় বাসিন্দারা জল ও বিদ্যুতের দাবিতে জিটি রোড অবরোধ করেন। ঘণ্টাখানেক অবরোধের পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছলে দু’পক্ষের বচসা হয়। পুলিশ লাঠি চালিয়ে বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়। শনিবার সকালে চুঁচুড়ার তামলিপাড়ায় অবরোধ হয়। বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা সেখানে গেলে তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামলায়।

শুক্রবার গভীর রাতে পান্ডুয়া ব্লকের বেলুন-ধামাসিন পঞ্চায়েতের রোসনা গ্রামে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ সেখানে হাই-টেনশন লাইন মেরামতের কাজ চলছিল। গ্রামবাসীদের একাংশ দাবি তোলেন, আগে বাড়ি বাড়ি বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে হবে। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন, আগে হাই-টেনশন লাইন ঠিক করতে হবে। অভিযোগ, গ্রামবাসীরা সেই কথা না শুনে ওই কর্মীদের মারধর করেন। রাত ২টো নাগাদ পুলিশ গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে। পান্ডুয়া বিদ্যুৎ দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মিন্টু মাকাল বলেন, ‘‘আমরা দিনরাত কাজ করছি। কিন্তু যে ভাবে হেনস্তা হতে হল, তাতে কর্মীদের মনোবল ভেঙে যাচ্ছে।’’ বিষয়টি নিয়ে ৭ জনের নামে পুলিশে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে তিনি জানান। মারধরের অভিযোগ গ্রামবাসীরা মানেননি। অভিযোগের তদন্ত চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। অনেকের কষ্ট হচ্ছে, জানি। একটু ধৈর্য ধরতে হবে।’’ ফিরহাদ জানান, যেখানে জলের সমস্যা রয়েছে, সেখানে জলের গাড়ি পৌঁছনোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে স্থানীয় পুর-কর্তৃপক্ষকে। রাস্তা অবরোধ প্রসঙ্গে পুরমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘কিছু জায়গায় উস্কানি আছে।’’

আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে শনিবার পান্ডুয়ায় যান হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। সঙ্গে ছিলেন দলের নেতা সায়ন্তন বসু।

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Hoogle Electricity
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy