প্রতীকী ছবি।
হাওড়ায় বহুতল আদালত ভবন তৈরির ক্ষেত্রে দীর্ঘ দেড় দশকের জটিলতা কাটল। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, আদালত ভবন তৈরির জন্য নির্ধারিত ১১কাঠা জমি ইতিমধ্যে জেলা কালেক্টরেটের দফতর থেকে বিচার বিভাগীয় দফতরে হস্তান্তরিত হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি ভবন তৈরির ক্ষেত্রে হাওড়া আদালতের দায়িত্বে থাকা জোনাল জজ ও হাওড়া জেলা জজের যে অনুমোদন প্রয়োজন তাও মিলেছে। বাকি শুধু রাজ্য পূর্ত দফতরের দেওয়া নির্মাণ খরচের অনুমোদন। জেলা প্রশাসনের ধারণা, সব কিছু ঠিকঠাক চললে মাস তিনেকের মধ্যেই দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বহুতল আদালত ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে।
হাওড়া পুরসভার ঠিক উল্টো দিকে ২৫ কাঠা জায়গার উপরে এক অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বিক্ষিপ্ত ভাবে গড়ে উঠেছে হাওড়া আদালত চত্বর। নিকাশি ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। তার উপরে চত্বরের মধ্যেই রয়েছে একাধিক হোটেল, চা টিফিনের স্টল। সেই সব হোটেল, স্টলের বর্জ্য গিয়ে পড়ে প্রায় বুজে যাওয়া নর্দমাগুলিতে। অধিকাংশ আইনজীবীদের বসার জায়গা না থাকায় তারই মধ্যে কোনওরকমে অস্থানী ছাউনিতে বসে সেরেস্তা চালান তাঁরা। তাই প্রথম দিকে পুরো জায়গা জুড়ে সংস্কারের পরিকল্পনা হলেও শেষ পর্যন্ত নানা কারণে তা ভেস্তে যায়। শেষে পুরনো পুলিশ সুপারের অফিস ও কোর্ট লকআপ যে জায়গায় ছিল সেই জায়গায় আদালত ভবন তৈরির পরিকল্পনা হয়।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য, এই জমি ঠিক করতেও কম সমস্যা হয়নি। কতগুলি কোর্ট হবে এবং সেই ঘরগুলি কী মাপের হবে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনার পর ঠিক হয় ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টের গাইডলাইন মোতাবেক আদালত ভবনের কোর্টগুলি তৈরি হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অভিজিৎ লাটুয়া এ নিয়ে দফায় দফায় জেলা জজের সঙ্গে বৈঠক করেন। জেলা জজের অনুমতিক্রমে সিদ্ধান্ত হয় ১০ তলা আদালত ভবনটিতে থাকবে ৭টি বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটের কক্ষ, ১টি অতিরিক্ত জেলা জজের কক্ষ, ২টি ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট, ২টি মুনসেফ কোর্ট, ১টি সাব জজ কোর্ট, ১টি ফোরাম কোর্ট। জায়গার অভাবে এর আগে সিবিআই কোর্ট ব্যাঙ্কশাল কোর্টে উঠে গিয়েছিল। ওই কোর্টও নতুন ভবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা হবে।
হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) বলেন, ‘‘আদালত ভবন তৈরির জন্য মোট ১৩ কাঠা ৪ ছটাক ২৬ বর্গফুট জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। জমিও বিচার বিভাগকে হস্তান্তর করে দেওয়া হয়েছে। জেলা জজের নির্দেশে ওই জায়গা কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে দেওয়ার কাজও শেষ।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ১০ তলা ভবনে প্রতিটি তলে থাকবে ২০০০ বর্গ ফুট জায়গা। ওই জায়গায় আইনজীবীদেরও বসার ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। হাওড়ার ক্রিমিনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কৃষ্ণচন্দ্র চন্দ ও হাওড়া বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন্ত্র বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে ভবনটি তৈরির জন্য ১৮ কোটি টাকা খরচ ধরা হয়েছে। এর সঙ্গে রয়েছে বৈদ্যুৎতিক সরঞ্জামের খরচ। এর মধ্যে কেন্দ্র দেবে ৬০ শতাংশ ও রাজ্য দেবে ৪০ শতাংশ টাকা। পুজোর পরেই জমির ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করা হবে।’’ হাওড়া আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্য পূর্ত দফতর ইতিমধ্যে ভবনটি নির্মাণ মূল্য তৈরি করে ফেলেছে। এই নির্মাণ মূল্য প্রথমে জেলা জজ অনুমোদন করবেন। পরে তা যাবে হাইকোর্টে জোনাল জজের কাছে। সেখান থেকে অনুমোদন পেলে যাবে রাজ্য আইন দফতরের কাছে। জেলা প্রশাসনের ধারণা, মাস তিনেকের মধ্যেই প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে। তার পরেই ভবন তৈরি শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy