কর্তব্য: জাঙ্গিপাড়ায় গাড়ি থামিয়ে নাকা পুলিশের (বাঁ দিকে) অকারণে কাউকে ঘুরতে দেখলে আটকানো বা মাস্ক পরানোর দায়িত্ব নিয়েছে ক্লাবের ছেলেরাই। উলুবেড়িয়া স্টেশন রোডে (ডান িদকে) ছবি: দীপঙ্কর দে ও সুব্রত জানা
মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা, প্রশাসনের লাগাতার প্রচার— কিছুতেই কাজ হচ্ছে না। করোনার চোখরাঙানি উপেক্ষা করেই গ্রামীণ হাওড়ার
বিভিন্ন এলাকায় রবিবার সকালেও অনেকে পথে বেরোলেন। বাজারে শারীরিক দূরত্বের বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করেই চলল কেনাকাটা। মাঠে খেলাও হল।
এ দিন অবশ্য লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশ কিছুটা কড়া হয়েছে। আমতার পাইকারি আনাজ ও মাছ বাজার বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিধি ভেঙে দোকান খোলার জন্য কয়েক জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, বহিরাগতরা সেখানে ভিড় করছিলেন। শারীরিক দূরত্ব মানা হচ্ছিল না। রাস্তায়, বাজারে অহেতুক ঘোরাঘুরি বন্ধ করতে পুলিশ নজরদারি বাড়ায়। বাজেয়াপ্ত করা হয় মোটরবাইক। শ্যামপুর, উলুবেড়িয়া, উদয়নারায়ণপুর, সাঁকরাইল এবং ডোমজুড়েও পুলিশি তৎপরতা চোখে পড়েছে।
সকালে উলুবেড়িয়া স্টেশন রোডে স্থানীয় ক্লাবের সদস্যেরা রাস্তায় নামেন। কাউকে অপ্রয়োজনে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে বাড়িতে ফেরতও পাঠানো হয়। খালি মুখে কেউ বেরোলে তাঁকে মাস্ক পরিয়ে দেওয়া হয়। অকারণে বের হওয়া লোকজনের সাইকেলের চাকার হাওয়া খুলে দেওয়া হচ্ছে, এমনও দেখা গিয়েছে। ক্লাবের সদস্য শেখ নকিবুদ্দিন বলেন, ‘‘উলুবেড়িয়া স্টেশন রোড এলাকায় হাসপাতাল এবং একাধিক নার্সিংহোম আছে। জনবহুল জায়গা। যথেষ্ট পুলিশ নেই। তাই ক্লাবের তরফে মানুষকে সচেতন করা হচ্ছে।’’ জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘পুলিশ নজরদারি চালানোর পাশাপাশি মানুষকে সচেতন করছে। নিয়ম মেনে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলি এগিয়ে এলে পুলিশের কাজে সুবিধা হবে।’’
হুগলির শ্রীরামপুরের মাহেশ বাজারে ক্রেতাদের মধ্যে শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকছিল না বলে অভিযোগ উঠছিল। পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য দোকানের মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর কথা বলা হয় প্রশাসনের তরফে। পুরসভা এই নিয়ে বাজার কমিটির কাছে আবেদন করে। দিন কয়েক ধরে রাস্তার ধারে আনাজ এবং মাছের দোকান কিছুটা ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যাঁরা দূরের এলাকা থেকে এই বাজারে আনাজ বেচতে আসেন, ভিড় কমাতে তাঁদের আপাতত কয়েক দিন আসতে নিষেধ করা হয়েছে। পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অসীম পণ্ডিত জানান, এ দিন মাহেশের ওই এলাকার বোসপাড়া, আশুতোষ চ্যাটার্জি লেনের বস্তি এলাকায় বাড়ি বাড়ি ‘থার্মাল গান’ দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছে। সকালে বৈদ্যবাটী চৌমাথায় পাইকারি মাছ বাজারে ভিড় জমে। চাঁপদানির
কিছু জায়গায় লকডাউনের প্রভাব যথারীতি বোঝা যায়নি। পুলিশ-প্রশাসনের তরফে অবশ্য সব জায়গাতেই সাধারণ মানুষকে সতর্ক করে প্রচার চালানো হয়েছে।
ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানির কয়েকটি বাজার মাঠে সরিয়ে দেওয়ায় ভিড় কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অ্যাঙ্গাস এলাকাতেও নজর দিচ্ছে প্রশাসন। নিমাইতীর্থ ঘাটের কাছে একটি মদের দোকান খোলা রয়েছে, এই গুজবে সেখানে ভিড় জমে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে লাঠি উঁচিয়ে ভিড় হঠিয়ে দেয়। অকারণে বেরোনোর অভিযোগে এ দিন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৭৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন।
লকডাউন বিধি ভাঙায় আরামবাগ মহকুমার চারটি থানা এলাকায় ২০ জনকে আটক করা হয়। মোটরবাইকের কাগজ না-থাকলে মামলা করা হচ্ছে। ড্রোনের মাধ্যমে জমায়েতের ছবি তোলা হচ্ছে। রাতে সেখানে গিয়ে আইনানুগ পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এ দিন চণ্ডীতলা এবং চাঁপাডাঙায় আনাজ বাজারে শারীরিক দূরত্ব বজায় না-রেখে কেনাকাটা করতে দেখা যায়। লকডাউন কার্যকর করতে পান্ডুয়া ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়েছে। অকারণে বের হওয়া লোকজনের সাইকেলের হাওয়া খুলে দিয়েছে পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশের নাকা চেকিং চলছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy