Advertisement
২১ জানুয়ারি ২০২৫
Coronavirus

বহুমুখী হিমঘরে পণ্যের আকাল

মাথায় হাত পড়েছে মালিক অশোক কোলে-র। কী ভাবে হিমঘর চালু রাখার খরচ তুলবেন, কী ভাবে শ্রমিকদের বেতন বা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করবেন ভেবে পাচ্ছেন না।

ধীরগতিতে: হাতে গোনা শ্রমিকই ভরসা হিমঘরে। নিজস্ব চিত্র

ধীরগতিতে: হাতে গোনা শ্রমিকই ভরসা হিমঘরে। নিজস্ব চিত্র

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০২০ ০২:৪৮
Share: Save:

হুগলি জেলার একমাত্র বহুমুখী হিমঘর রয়েছে শ্রীরামপুরের পিয়ারাপুরে। লকডাউনে সেখানেও তালা ঝোলার জোগাড়!

হিমঘরটি যখন পুরোদস্তুর চালু থাকে, তখন শ্রমিক-কর্মচারী মিলিয়ে ৪০-৪৫ জন নিয়মিত কাজ করেন। সেই সংখ্যা এখন এসে ঠেকেছে ৭-৮ জনে। বাকিরা বাড়ি ফিরে গিয়েছেন। কারণ, কাজ নেই। হিমঘরে না ঢুকছে ফল-আনাজ, না সে ভাবে ঢুকছে মাছ-মাংস।

মাথায় হাত পড়েছে মালিক অশোক কোলে-র। কী ভাবে হিমঘর চালু রাখার খরচ তুলবেন, কী ভাবে শ্রমিকদের বেতন বা ব্যাঙ্কের ঋণ শোধ করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘লকডাউনের পর থেকেই হিমঘরে মাল ঢোকা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। হিমঘরের দু’টি আলাদা চেম্বারের যা ক্ষমতা, তার মাত্র ১০-১২ শতাংশ মাল আছে এখন। মাল জাহাজে এসে খিদিরপুর বন্দরে দীর্ঘদিন ধরে আটকে রয়েছে। পরিবহণ সমস্যায় আনা যাচ্ছে না।’’

হুগলিতে বহু হিমঘর আছে। বেশিরভাগই আলুর হিমঘর। কিন্তু ফল, আনাজ থেকে মাছ-মাংস বা মিষ্টি উন্নত প্রযুক্তিতে রাখার মতো কোনও হিমঘরই এক সময় জেলায় ছিল না। প্রায় এক দশক আগে পিয়ারাপুর এলাকায় ফিয়ন গ্যাসে খাদ্যসামগ্রী রাখার ওই হিমঘরটি তৈরি করেন অশোক। দুই ‘চেম্বার’ বিশিষ্ট ওই হিমঘরে সাত হাজার টন খাদ্যসামগ্রী রাখা যায়। ওই হিমঘর তৈরির পর অনেক ব্যবসায়ীই হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছিলেন। কারণ, ফলের মতো পচনশীল পণ্য রাখার জন্য ওই ধরনের উন্নত প্রযুক্তির হিমঘর ছাড়া অন্য কোনও বিকল্প নেই।

ওই হিমঘরে ভিন্‌ রাজ্যের ফলও ঢোকে। কাশ্মীর থেকে আপেল, নাসিক থেকে আঙুর, বেদানা আসত নিয়মিত। নাগপুর, দার্জিলিং থেকে আসত লেবু। এ ছাড়াও, বিভিন্ন রাজ্যের সব গুরুত্বপূর্ণ ফলই ওই হিমঘরে ঢোকে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাছ-মাংস থেকে মিষ্টি— সবই রাখেন। ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনমতো ওই সব পণ্য হিমঘর থেকে নির্দিষ্ট দোকান-বাজারে পাঠান। কাশ্মীরের পরিস্থিতির কারণে সেখানের আপেল দীর্ঘদিন ধরেই ঢুকছে না। এখন অন্য রাজ্যের ফল আসাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে।

শুধু হিমঘরটিকে রক্ষা করাই এখন কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। অশোকের আক্ষেপ, "ব্যবসায় চূড়ান্ত ধাক্কা লাগল। এরপর সব কিছু চালু হলেও এই ধাক্কা সামলে আদৌ ব্যবসায় ঘুরে দাঁড়ানো যাবে কিনা, সংশয় রয়েছে।"

অন্য বিষয়গুলি:

coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy