প্রতীকী ছবি।
করোনা-জুজুতে সরকারি স্তরে শিশুদের টিকাকরণ বন্ধ। ফলে, তাদের বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ ঘটার আশঙ্কা করছেন পরিবারের লোকেরা। বিশেষত, ডায়রিয়া এবং হাম নিয়ে বেশি সংশয় দেখা দিয়েছে দুই জেলাতেই।
হুগলির বিভিন্ন গ্রামে বিক্ষিপ্ত ভাবে ডায়রিয়া এবং হাম দেখা যাচ্ছে বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকদের বক্তব্য, বেশ কয়েকটি রোগ থেকে সুরক্ষার একমাত্র উপায় টিকাকরণ। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে লকডাউনের সময় শিশুদের টিকাকরণ এবং গর্ভবতীদের রুটিন পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।’’
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাসও বলেন, ‘‘শিশুদের নিরাপত্তার জন্যই টিকাকরণ বন্ধ। তবে তা দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা শিশুদের পক্ষে ভাল নয়। ৩ মে-র পর থেকে হাসপাতালে টিকাকরণ চালু হবে।’’
শিশুর জন্মের সময় পোলিয়ো এবং যক্ষ্মা রোগের জন্য বিসিজি টিকা দেওয়া হয়। দেড় মাস বয়স থেকে রুটিন টিকাকরণ শুরু হয়। ১৬ বছর বয়স পর্যন্ত যে সব গুরুত্বপূর্ণ টিকা দেওয়া হয় সেগুলির মধ্যে রয়েছে পেন্টাব্যালেন্ট টিকা। এতে ডিপথেরিয়া, হুপিং কাশি, ধনুষ্টঙ্কার, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং হেপাটাইটিস-বি রোগের সংক্রমণ আটকানো যায়। শিশুর ৬ সপ্তাহ বা দেড় মাসে দেওয়া হয় পোলিয়ো এবং পেন্টা-১ ডোজ, হেপাটাইটিস-বি, হিমোফাইলাস ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা। ১০ সপ্তাহ বা আড়াই মাসে ফের পোলিয়ো ইঞ্জেকশন (আইপিভি), পেন্টাব্যালেন্ট টিকা দেওয়া হয়। এগুলির পাশাপাশি রোটা ভাইরাস, হাম রুবেলার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ টিকাকরণও বন্ধ।
শিশু বিশেষজ্ঞরা জানান, শিশুদের মধ্যে রোগ প্রতিরোধের প্রাথমিক ক্ষমতা গড়ে ওঠে টিকাকরণের মাধ্যমে। টিকাকরণ করা হয় সরকারি হাসপাতাল, প্রাথমিক ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অনেক চিকিৎসকও টিকাকরণ করিয়ে থাকেন। লকডাউনের ফলে ২৩ মার্চ থেকে হাওড়া জেলায় হাসপাতাল ও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টিকাকরণ বন্ধ। বেসরকারি ক্লিনিকগুলিও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকদের দিয়েও টিকাকরণ প্রায় বন্ধ। দু’-একজন চিকিৎসক ব্যক্তিগত উদ্যোগে টিকাকরণ করাচ্ছেন। কিন্তু বাজারে ভ্যাকসিনের জোগান না-থাকায় ঠিকমতো সেই কাজ হচ্ছে না বলে তাঁরা জানিয়েছেন।
বাগনানের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অনুপকুমার মঙ্গল বলেন, ‘‘আমি শিশুদের টিকাকরণ করাচ্ছি। কিন্ত বাজারে ভ্যাকসিনের অভাব। গাড়ি না-চলায় ওষুধের দোকানে ভ্যাকসিনের যথেষ্ট জোগান নেই। ফলে, খুব সমস্যা হচ্ছে।’’ জন্মের সময় শিশুকে যে টিকা দিতে হয়, হাওড়ার নার্সিংহোম এবং হাসপাতালে তা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সরকারি হাসপাতাল ও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ওই সময়ের টিকাকরণ হচ্ছে না বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সুত্রের খবর।
হুগলিতেও কিছু ক্ষেত্রে বেসরকারি ভাবে টিকাকরণ চলছে। চিকিৎসক সংগঠন আইএমএ-র শ্রীরামপুর শাখার ভবনে শিশুদের টিকা দেওয়া চলছে। মঙ্গলবারেও এখানে টিকাকরণ হয়েছে। আইএমএ-র শ্রীরামপুর শাখার সভাপতি চিকিৎসক প্রদীপকুমার দাস বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট সময়ে টিকাকরণ না হলে পোলিয়ো-সহ অন্যান্য সংক্রামক রোগ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণে টিকাকরণ চালু রাখাই যুক্তিপূর্ণ বলে আমরা মনে করি। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই আমরা করছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy