Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
জনসমাগম এড়ানোর আর্জি স্বাস্থ্যকর্তার
Coronavirus in West Bengal

করোনার রেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হুগলিতে

রবিবার অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন ১৮০২ জন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২০ ০৮:২৪
Share: Save:

সংখ্যাটা বাড়ছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ১০ দিনে হুগলিতে গড়ে দৈনিক প্রায় ২৫০ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন।

জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এই জেলায় দুর্গাপুজোর পরে সংক্রমণ মাত্রাছাড়া হয়নি। গত ২৬ অক্টোবর ছিল দশমী। সে দিন থেকে গত ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ১০ দিনে সংক্রমিত হয়েছিলেন ১৮২১ জন। অর্থাৎ গড়ে দৈনিক ১৮২ জন। ওই ক’দিনে এক দিনও সংক্রমিতের সংখ্যা দু’শোর গণ্ডি ছোঁয়নি। কিন্তু তার পরের দিন, অর্থাৎ ৫ নভেম্বর থেকে রবিবার পর্যন্ত ১১ দিনের মধ্যে এক দিনও সংক্রমণ দু’শোর নীচে নামেনি। শেষ ১০ দিনে মোট সংক্রমিত হয়েছেন ২৫৩৭ জন। অর্থাৎ, গড়ে দৈনিক ২৫৩.৭ জন। রেখচিত্রের এই ঊর্ধ্বগামিতা থেকেই সংক্রমণের বৃদ্ধি পরিষ্কার।

চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, আনলক-পর্বের সময় থেকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড চালু হয়েছে। মানুষের একাংশের মধ্যে সচেতনতা কমেছে। তাই সংক্রমণ বেড়েছে। যদিও, এ নিয়ে জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের বক্তব্য ভিন্ন। তাঁদের দাবি, সাম্প্রতিক পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, দু’টি ল্যাবরেটরির ক্ষেত্রে করোনা পরীক্ষার পজ়িটিভিটির হার অনেকটা বেশি। এত বেশি সংখ্যক রিপোর্ট পজ়িটিভ হওয়া কার্যত অসম্ভব বলে তাঁদের ধারণা। কিটের সমস্যার জন্য এমনটা হয়ে থাকতে পারে বলে তাঁরা মনে করছেন।

জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘দু’টি বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষায় প্রায় ৪০% মানুষের রিপোর্ট পজ়িটিভ বেরোচ্ছে। এটা কার্যত অসম্ভব। সংশ্লিষ্ট ল্যাবরেটরির সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে এ নিয়ে আমরা কথা বলেছি। কিটের গুণগত মান পরীক্ষা করে দেখতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিষয়টি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের গোচরে আনা হয়েছে।’’

তিন সপ্তাহ আগে হুগলিতে অ্যাক্টিভ আক্রান্ত দু’হাজার ছুঁইছুঁই ছিল। পরে কমতে কমতে ১৫০০-র ঘরে পৌঁছয়। গত কয়েক দিনে এই সংখ্যাও বেড়েছে। রবিবার অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন ১৮০২ জন। এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের ব্যাখ্যা, ‘‘সংক্রমিত বাড়লে স্বাভাবিক কারণেই অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যাও তো বাড়বে।’’ এর সঙ্গেই তিনি মনে করিয়ে দেন, ‘‘করোনার ছোঁয়াচ থেকে বাঁচতে মানুষকে অত্যন্ত সচেতন থাকতে হবে। মাস্ক ছাড়া বেরনো চলবে না। শীতে এই ভাইরাস বেশি করে ছড়াতেই পারে।’’

চিকিৎসকদের একাংশের বক্তব্য, এখন ট্রেনও চালু হয়ে গিয়েছে। অফিস-টাইমে ট্রেনে চিরাচরিত ভিড় দেখা যাচ্ছে। ট্রেনে অসেচতন ভাবে যাত্রা করোনার বিপদ বাড়িয়ে দিতে পারে। তার উপরে প্রশাসনের কড়া নজরদারিতে দুর্গাপুজো ভালয় ভালয় মিটলেও কালীপুজোর ক্ষেত্রে কিছু জায়গায় ফস্কা গেরো দেখা যাচ্ছে। পান্ডুয়ায় কালীপুজোর মণ্ডপে জনসমাগম চোখে পড়েছে। অনেককে দেখা গিয়েছে মাস্কবিহীন অবস্থায়। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী বা বাঁশবেড়িয়ার কার্তিক পুজোয় জন সমাগম কেমন হয়— তা নিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের মাথাব্যথা রয়েছে।

সরকারি হাসপাতালের এক চিকিৎসকের কথায়, ‘‘পুজো মণ্ডপে প্রবেশে থেকে বাজি পোড়ানোয় নিষেধাজ্ঞা— এ সবে মানুষের ভাল হয়েছে। কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে বিচ্যুতি দেখা যাচ্ছে। বিনোদনের জন্য বিধিনিষেধ অগ্রাহ্য করলে কিন্তু খাল কেটে কুমির আনার মতো করোনার মতো বিপদকে আমন্ত্রণের শামিল হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy