উদ্যোগ: জ্বর, সর্দি-কাশির উপসর্গ দেখলে তাঁদের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ছবি: দীপঙ্কর দে
করোনা-সন্দেহভাজনদের লালারস পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহের মাত্রা বেড়েছে হুগলিতে। কিন্তু দ্রুত রিপোর্ট মিলছে কই?
জেলার মধ্যে চন্দননগর, শ্রীরামপুর, রিষড়া, ডানকুনির মতো কিছু এলাকায় ইতিমধ্যেই করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। তাঁদের সংস্পর্শে আসা বহু মানুষের লালারসের নমুনাও ইতিমধ্যে সংগ্রহ করা হয়েছে। এমনকি, চলতি মাসের ৫ তারিখে অজমের থেকে ফেরা জেলার ৩১ জনের একটি দলের প্রত্যেকেরও লালারসের নমুনা সে দিনই ধনেখালির মহেশ্বরপুরে স্বাস্থ্য দফতরের শিবিরে নেওয়া হয়। কিন্তু সেই রিপোর্ট এখনও পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন অনেকেই।
রিপোর্ট না-মেলায় অনেকেই বুঝতে পারছেন না, তাঁরা করোনা আক্রান্ত কিনা। তা ছাড়া, যাঁরা সাধারণ সর্দি-কাশিতে ভুগছেন, তাঁরাও বিভ্রান্ত। লালারসের নমুনা নেওয়া হলেও তাঁরাও বুঝতে পারছেন না, তাঁদের উপসর্গ আদৌ করোনার কিনা! তাঁদের অভিযোগ, স্বাস্থ্য দফতর দু’তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার আশ্বাস দিলেও তা মিলছে না।
উত্তরপাড়া জেনারেল হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকে গত এক সপ্তাহে ১০০ জনেরও বেশি সন্দেহভাজনের লালারস সংগ্রহ করে পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিক থেকেও গত এক সপ্তাহে অন্তত ১৫০ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। কিন্তু রিপোর্ট মেলেনি।
এ নিয়ে চন্দননগর মহকুমা হাসাপাতালের সুপার জগন্নাথ মণ্ডল বলেন, ‘‘কারও রিপোর্ট পজ়িটিভ হলে তো ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তা কলকাতা থেকে আসার কথা। যে ক্ষেত্রে রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’, সে ক্ষেত্রে তা পেতে কিছুটা সময় লাগছে।’’
রিপোর্ট পাওয়ার দীর্ঘসূত্রিতার কথা মানছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। দফতরের একটি সূত্রের খবর, এখন লালারস পরীক্ষার হার অনেক বেড়েছে। সেই তুলনায় পরীক্ষাগারের পরিকাঠামো সীমিত। সেই কারণেই সম্ভবত বাড়তি সময় লাগছে। এ নিয়ে অযথা তাড়াহুড়ো করে লাভ নেই।
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এখনও অজমের ফেরত ট্রেনযাত্রীদের রিপোর্ট আসেনি। রিপোর্ট কলকাতা থেকে এলেই তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পাঠানো হচ্ছে। করোনা পজ়িটিভ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
জেলায় করোনা হানা দেওয়ার প্রথম পর্বে পর্যাপ্ত হারে পরীক্ষা হচ্ছে না, এই অভিযোগ উঠেছিল। এ বার পরীক্ষা শুরু হলেও রিপোর্ট সময়মতো না-মেলায় অনেকেই দিশাহারা। গৃহবন্দি থাকতে থাকতে তাঁরা ক্লান্তও। অনেকেরই প্রশ্ন, কতদিন ধৈর্য ধরে বাড়িতে একটি ঘরে নিভৃতবাসে থাকা যায়?
শ্রীরামপুরের মিল্কি-বাদামতলা এলাকার বাসিন্দা শেখ আবুজা অজমের থেকে ফিরে বাড়িতেই নিভৃতবাসে রয়েছেন। তাঁর ক্ষোভ, প্রতিদিনই ভাবছি রিপোর্ট পাব। কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি পার হয়ে গেল। এখনও রিপোর্ট পেলাম না।’’ হরিপালের অনন্তপুর গ্রামের মফিজুর রহমানেরও একই ক্ষোভ, ‘‘গৃহবন্দি আছি। স্বাস্থ্য দফতর থেকে খোঁজও নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু রিপোর্ট তো হাতে পেলাম না। আরও কতদিন অপেক্ষা করব বুঝতে পারছি না। রিপোর্ট পেলে নিশ্চিন্ত হতে পারতাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy