Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
করোনা নিয়ে স্বস্তি হুগলি জেলােতও
Coronavirus in West Bengal

শেষ তিন দিনে দৈনিক সংক্রমণ একশোর নীচে

পরিসংখ্যান দেখে স্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তবে, তাঁরা ঢিলে দিতে নারাজ।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:৪০
Share: Save:

চ‌লতি মাসের শুরুতে হুগলিতে করোনা সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। তার পরে ফের তা কিছুটা মাথাচাড়া দেয়। তবে মাস যত শেষের দিকে এগোচ্ছে, দৈনিক সংক্রমণ কমছে। গত রবি থেকে মঙ্গল— এই তিন দি‌নে সংক্রমিতের সংখ্যা একশোর নীচে। অ্যাক্টিভ আক্রান্তের রেখচিত্রও নিম্নগামী।

পরিসংখ্যান দেখে স্বস্তিতে জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা। তবে, তাঁরা ঢিলে দিতে নারাজ। সে কারণেই সাধারণ মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে বিন্দুমাত্র শিথিলতা না দেখান, সে দিকে জোর দেওয়ার কথা বলছেন তাঁরা। এ ব্যাপারে সংক্রমণের পরবর্তী ধাপের আশঙ্কা সম্পর্কেও মানুষকে সচেতন করে দিতে চাইছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সংক্রমণ কমছে বলে আত্মতুষ্ট হওয়ার কারণ নেই। বাইরে বেরোলে সবাই যাতে মাস্ক ব্যবহার করেন এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখেন, সেই অনুরোধ করছি।’’ জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও-ও বলেন, ‘‘সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সে জন্য সাধারণ মানুষের আরও বেশি সচেতন হওয়া প্রয়োজন।’’

গত পয়লা ডিসেম্বর এই জেলায় অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন ৭৫৯ জন। তার পরে ওই রেখচিত্র কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী হয়। গত ১২ তারিখে অ্যাক্টিভ আক্রান্তের সংখ্যা ১২৫১ জনে পৌঁছয়। এর পর থেকে অবশ্য ফের তা নামছে। ১৯ তারিখে অ্যাক্টিভ আক্রান্ত ছিলেন এক হাজার জন। মঙ্গলবার তা ৮১১-তে নেমেছে। গত রবি, সোম এবং মঙ্গলবার দৈনিক সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল যথাক্রমে ৭৬, ৯৫ এবং ৬৫ জন। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘অনেক দিন পরে টানা তিন দিন সংক্রমণ দুই অঙ্কে সীমাবদ্ধ রইল। এটা ভাল লক্ষণ।’’

জেলাশাসক জানান, গোড়া থেকেই সংক্রমণ বাগে আনতে পরিস্থিতি অনুযায়ী পরিকাঠামো তৈরির দিকে নজর দেওয়া হয়েছিল। এখনও তাই করা হচ্ছে। কোথায় সংক্রমণ হচ্ছে, কোন হাসপাতাল বা সেফ হোমে কত জন আছেন, যাবতীয় তথ্য প্রতিনিয়ত বিশ্লেষণ করা হচ্ছে প্রযুক্তির সাহায্যে। গত এক সপ্তাহ ধরে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালেই আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ফলে, এ ব্যাপারে কলকাতা নির্ভরতা কমেছে। অপেক্ষাকৃত দ্রুত রিপোর্ট মিলছে। এই মূহূর্তে এখানে দৈনিক শ’খানেক পরীক্ষা করা হচ্ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই তিন-চারশো করা হবে। আরটিপিসিআর এবং র্যাএপিড মিলিয়ে দৈনিক দুই থেকে আড়াই হাজার পরীক্ষা করা হচ্ছে বলে প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি।

হুগলিতে কোভিড চিকিৎসার হাসপাতাল ৫টি। সংক্রমণ কমলেও এখনই কোনও হাসপাতাল ছেড়ে দিচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর। শুধুমাত্র শ্রীরামপুর শ্রমজীবী হাসপাতালের ১০টি সিসিইউ এবং ৩০টি সাধারণ শয্যা ছেড়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। জেলায় ‘সেফ হাউস’ রয়েছে পাঁচটি। সেখানে খুব কম সংখ্যক রোগী রয়েছে। সেগুলিও আপাতত চালু রাখা হচ্ছে।

সংক্রমণ কমার কারণ হিসেবে চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন, অনেকে সংক্রমিত হয়ে যাওয়ায় সংক্রমণের শৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে। অনেকের বক্তব্য, উপসর্গ না থাকলে পরীক্ষা করার ঝোঁক কমেছে। আগে সংক্রমিতের সংস্পর্শে আসা লোকজনের পরীক্ষা কার্যত বাধ্যতামূলক ছিল। এখন সে সবের বালাই নেই। প্রশাসনের এক কর্তাও বলছেন, ‘‘করোনা-আতঙ্ক কমেছে। অনেকটাই গা-সওয়া হয়ে গিয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Infection Rate
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE