Advertisement
E-Paper

সম্ভ্রমের দৃষ্টি উৎসাহ জোগাচ্ছে হাওড়া কোয়রান্টিনে

করোনা-যুদ্ধে শামিল হওয়ায় শুধু ওই স্টেডিয়ামের আশপাশেই নয়, প্রতিবেশীদের কাছেও তাঁদের সম্মান বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ।

করোনা পরীক্ষা করাতে ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক প্রতিবন্ধী কিশোর। তার আত্মীয়, হাওড়া জেলা হাসপাতালের কর্মীকে ইতিমধ্যেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

করোনা পরীক্ষা করাতে ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক প্রতিবন্ধী কিশোর। তার আত্মীয়, হাওড়া জেলা হাসপাতালের কর্মীকে ইতিমধ্যেই কোয়রান্টিনে পাঠানো হয়েছে। নিজস্ব চিত্র

দেবাশিস দাশ

শেষ আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২০ ০৪:২১
Share
Save

করোনা সংক্রমণ মোকাবিলায় জীবন বাজি রেখে পরিষেবা দিয়েও আক্রান্ত হচ্ছেন তাঁরা। কোনও জায়গায় তাঁদের বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে। কোথাও আবার পাড়ায় ঢুকলে অচ্ছুত করে রাখা হচ্ছে তাঁদের। চার দিক থেকে আসা এমন খবরের মাঝে উল্টো ছবির সাক্ষী থাকছেন ‌হাওড়ার ডুমুরজলা ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৈরি কোয়রান্টিন কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা।

করোনা-যুদ্ধে শামিল হওয়ায় শুধু ওই স্টেডিয়ামের আশপাশেই নয়, প্রতিবেশীদের কাছেও তাঁদের সম্মান বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। এমনই দাবি তাঁদের। এই সম্মান কাজে উৎসাহ জোগাচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, “সেন্টার থেকে ফেরার সময়ে স্বাস্থ্য দফতর গাড়ি দিতে না-পারলে পাড়ার বাসিন্দারাই খবর পেয়ে মোটরবাইক নিয়ে চলে আসছেন।” কারও ক্ষেত্রে আবার প্রতিবেশীরা বাড়ি এসে নিজের থেকেই পরিস্থিতি কেমন জানতে চাইছেন। বিভিন্ন ভাবে সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছেন অনেকে। “এই সম্মানটুকুই মনে থেকে যায়। যেন যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফেরা বীর সেনা আমরা’’— বলছিলেন এক কর্তব্যরত চিকিৎসক।

‘‘প্রতিবেশী ও পরিচিতদের থেকে এই ব্যবহার পেয়ে সত্যিই অভিভূত। আমরা যে অচ্ছুত নই, এটা না-ভাবাই আমাদের মনোবল বাড়িয়ে দিয়েছে’’— বলছেন ডুমুরজলায় ওই কোয়রান্টিন কেন্দ্র শুরুর দিন থেকে যুক্ত জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক অফিসার।

লকডাউনের সময়ে প্রয়োজনে ঘর থেকে বেরোনো মানুষ ড্রেনেজ ক্যানাল রোড দিয়ে যাওয়ার সময়ে এক বার হলেও থমকে দাঁড়াচ্ছেন হাওড়ার একমাত্র কোয়রান্টিন কেন্দ্র ডুমুরজলা স্টেডিয়ামের দিকে। কেন্দ্রের সিস্টার ইন-চার্জ রাইকমল চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কাজের শেষে বাড়ি ফেরার পরে আত্মীয়, প্রতিবেশীদের থেকে যে ব্যবহার পাচ্ছি, তাতে এ কাজ করতে গর্ব হচ্ছে।’’

সংক্রমণের মোকাবিলায় লকডাউন ঘোষণার আগেই জেলা প্রশাসন ও পুরসভায় চেষ্টায় স্টেডিয়ামের পিছনের সব ঘর নিয়ে ১১০ শয্যার কোয়রান্টিন কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছিল। এর পর থেকে রোগীদের ভিড় বাড়তে থাকে সেখানে। গত কয়েক দিনে এক হাজারেরও বেশি মানুষ এখানে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে এসেছেন। স্টেডিয়ামের গেটের বাইরে নিয়ম মেনে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে অসংখ্য মানুষকে। প্রত্যেকে যাতে নিয়ম মেনে এক মিটার অন্তর দাঁড়ান, তা দেখভাল করছেন চ্যার্টাজিহাট থানার পুলিশকর্মীরা।

স্টেডিয়ামের লবিতে তৈরি হয়েছে হেল্প ডেস্ক। তার পাশের অফিস ঘরকে অস্থায়ী ভাবে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের অফিস করা হয়েছে। সেখানে বসেই স্বাস্থ্য দফতরের এক অফিসার জানালেন, করোনার উপসর্গ নিয়ে যাঁরা আসছেন তাঁদের পরীক্ষা করা হচ্ছে। চিকিৎসকেরা বুঝলে তখনই কাউকে ভর্তি করে নিচ্ছেন। পরিস্থিতি বুঝে পরে তাঁকে হাওড়া জেলা হাসপাতাল বা সত্যবালা আইডি হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘এই কেন্দ্রে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার পোশাক মজুত আছে। তবে আরও শয্যা প্রয়োজন। প্রশাসনকে তা জানিয়েছি।’’

এই সব প্রয়োজনের কথা পাশে রেখেই আপাতত লড়াইয়ে প্রস্তুত ডুমুরজলা কোয়রান্টিন কেন্দ্রের কর্মীরা।

Coronavirus in West Bengal Dumurjala Stadium Quarantine Center

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।