ভিড়: মাংস কিনতে ভিড় বৈদ্যবাটীর একটি দোকানে। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ
যেন প্রথাগত ছুটির দিন! দুপুরে মাংস-ভাত হবে না!
করোনা মোকাবিলায় দেশ জুড়ে রবিবার ‘জনতা কার্ফু’ কর্মসূচি ডেকেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বাকি দেশ এবং রাজ্যের অন্যান্য জেলার মতো হুগলিতেও সাড়া পড়েছিল। রাস্তাঘাট সুনসান। দোকানপাটের ঝাঁপ বন্ধ। শুধু কয়েকটি এলাকায় এক শ্রেণির মানুষের ভিড় দেখা গেল মুরগির মাংসের দোকানগুলিতে।
সতর্কতা উপেক্ষা করেই চুঁচুড়ায় জিটি রোডের ধারে কয়েকটি মুরগির দোকানে রীতিমতো ভিড় উপচে পড়ে সকাল থেকে। লাইন দিয়ে মাংস কেনেন মানুষ। তাতে বহু শহরবাসী আশঙ্কিত হলেন। জরুরি পরিস্থিতিতেও এই ভিড় নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এক ক্রেতার জবাব, ‘‘রবিবার একটু ভাল খেতে ইচ্ছে করে। সারা সপ্তাহে এই দিনটাই তো ছুটি। মাংস বিক্রি হচ্ছে জানতে পেরে বেরিয়ে পড়লাম।’’ আর এক ক্রেতা বলেন, ‘‘খাসির মাংসের যা দাম, ছেঁকা লাগছে। তাই মুরগি মাংসের দোকানেই এলাম।’’
বৈদ্যবাটী রেলগেট, চৌমাথায় কয়েকটি মুরগির দোকানের ভিড় অবশ্য পুলিশ গিয়ে সরিয়ে দেয়। শ্রীরামপুর, পান্ডুয়াতেও মুরগির দোকান খোলা থাকতে দেখা গিয়েছে। আরামবাগ শহরে চারটি খাসি এবং কিছু মুরগির দোকান খোলা ছিল। মুরগির দোকানে করোনার ‘সুরক্ষা বিধি’ না মানার অভিয়োগ ওঠে। স্থানীয় মানুষ বিষয়টি পুলিশের গোচরে আনেন। পুলিশ এসে জমায়েত নিয়ন্ত্রণ করে দোকান বন্ধের অনুরোধ করে। সকালে হিন্দমোটর স্টেশন সংলগ্ন ক্লাব ভাড়া নিয়ে একটি শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে প্রায় আড়াইশো জনের খাওয়া-দাওয়ার তোড়জোড় চলছিল। বিষয়টি জানতে পেরে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করেন। পুলিশ জমায়েত বন্ধের নির্দেশ দেয়।
‘জনতা কার্ফু’র মধ্যে উল্টো ছবি হরিপালের সহদেব পঞ্চায়েতেও। এ দিন একশো দিনের কাজ প্রকল্পে সেখানে তিনটি পুকুর খননের কাজে শামিল হন বহু গ্রামবাসী। এক যুবক প্রতিবাদ করায় তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এই ব্যাপারে প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, সহদেব পঞ্চায়েতের চক অনন্তপুর, রাধাকৃষ্ণপুর এবং গোসা এলাকায় ওই কাজ হয়। অভিযোগ, জমায়েত হলেও শ্রমিকদের মাস্ক দেওয়া হয়নি। সুকুমার পণ্ডিত নামে স্থানীয় এক যুবকের অভিযোগ, ‘‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই কাজ বন্ধ রাখার অনুরোধ করেছিলাম। উল্টে ওঁরা আমাকে মারধর করেন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে পঞ্চায়েতে প্রধান তথা হরিপাল ব্লক তৃণমূল সভাপতি দেবাশিস পাঠকের দাবি, ‘‘কেউ মারধর করেননি।’’ বিষয়টি নিয়ে বিডিও (হরিপাল) তপন হাঁটি মুখ খুলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, ‘‘যা বলার জেলার আধিকারিকরা বলবেন।’’ জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্তারা ‘খোঁজ নেব’ বলে দায় সেরেছেন।
খানাকুল এবং গোঘাটেও কয়েকটি জায়গায় ১০০ দিনের কাজ নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। গোঘাট-১ ব্লকের নকুন্ডা গ্রামের বাসিন্দা শ্যামল কুণ্ডু বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসন করোনা নিয়ে উদাসীন। কোন যুক্তিতে একসঙ্গে একশো থেকে তিনশো জনকে দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে?’’ পরে অবশ্য ব্লক প্রশাসনের তরফে শ্রমিকদের কাজ বন্ধ রাখার আনুরোধ করা হয়। ব্লক প্রশাসনের বক্তব্য, এই প্রকল্পের আইন অনুযায়ী শ্রমিকেরা কাজ চাইলে তাঁদের তা দিতে হবে। শ্রমিকদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজ হচ্ছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy