Advertisement
২৪ ডিসেম্বর ২০২৪
Bandel

যিশুর ক্রস-এ চুম্বন নিষেধ ব্যান্ডেল চার্চে

পর্যটকেরা আপাতত পাবেন না মাথায় হাত ছুঁইয়ে ‘ফাদার’দের আশীর্বাদও।

হাতে গোনা ভক্ত ব্যান্ডেল চার্চে

হাতে গোনা ভক্ত ব্যান্ডেল চার্চে

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২০ ০৮:১৪
Share: Save:

‘পবিত্র’ জলে হাত ধোয়া বন্ধ।

শ্রদ্ধা জানাতে যিশুর মূর্তি বা ক্রস-এ চুম্বনও বারণ।

পর্যটকেরা আপাতত পাবেন না মাথায় হাত ছুঁইয়ে ‘ফাদার’দের আশীর্বাদও।

করোনাভাইরাস সংক্রান্ত সাবধানতায় এমনই বেশ কিছু পদক্ষেপ করলেন হুগলির তথা এ রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র ব্যান্ডেল চার্চের কর্তৃপক্ষ। ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইমামবাড়া এবং কামারপুকুর শ্রীরামকৃষ্ণ মঠেও। ব্যতিক্রম তারকেশ্বর। সোমবারও থিকথিকে ভিড় দেখা গেল ওই শৈবতীর্থে।

হুগলির ওই চার পর্যটনকেন্দ্রেই বেশি ভিড় জমে। তবে, কয়েক দিন ধরেই ব্যান্ডেল চার্চ এবং ইমামবাড়া কার্যত পর্যটকশূন্য। সোমবার সকালেও চার্চের প্রার্থনা-কক্ষে কাউকে দেখা যায়নি। করোনা-আতঙ্কের জেরেই পর্যটকেরা আসছেন না বলে মনে করছেন অনেকে। চার্চ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দলবদ্ধ ভাবে পর্যটকদের ঢুকতেও নিষেধ করা হয়েছে। অনেকে একসঙ্গে এলেও গেট থেকে ঢুকতে হবে প্রত্যেকের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব রেখে। এতদিন প্রার্থনার আগে ‘পবিত্র’ জলে হাত ধুতে হত। এখন সেই জল রাখা বন্ধ করা হয়েছে। পর্যটকেরা যিশুর মূর্তি বা ক্রসে শুধু দূর থেকে প্রণাম জানাতে পারবেন। চার্চে ছড়িয়ে থাকা নানা মূর্তিতে হাত দিয়ে পর্যটকদের শ্রদ্ধা জানানোও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের পরে চার্চ বন্ধ হলে গোটা চত্বর জীবাণুনাশক ছড়িয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে।

চার্চের ফাদার ফ্রান্সিস বলেন, ‘‘করোনা-আতঙ্কে অন্য সময়ের তুলনায় পর্যটকের সংখ্যা কমে গিয়েছে। যে হেতু বহু মানুষের সমাগম হয়, সে জন্য চার্চের পক্ষ থেকে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। এই ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রতিদিন প্রার্থনাও চলছে।’’

ব্যান্ডেল চার্চের কাছেই ইমামবাড়া। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, দলবদ্ধ ভাবে পর্যটকদের ঢুকতে বারণ করা হয়েছে। বেশি ভিড় জমে ইমামবাড়ার ‘জরিঘর’ এবং ‘ঘড়িঘর’-এ। দু’টি ঘরই আপাতত বন্ধ থাকছে।

এ দিন থেকে বেলুড় মঠে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে বসে ধ্যান-সন্ধ্যারতি দেখা, প্রসাদ বিতরণ এবং প্রেসিডেন্ট মহারাজকে প্রণাম— অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন মঠ কর্তৃপক্ষ। একই পথে হেঁটে এ দিন কামারপুকুর মঠ কর্তৃপক্ষও বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দেন, অনির্দিষ্টকাল মঠে দুপুরের প্রসাদ বিতরণ বন্ধ থাকবে। ভক্তেরা দলবদ্ধ ভাবে মন্দিরে আসতে পারবেন না। একে একে প্রবেশ করে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দিরে প্রণাম সারতে পারবেন। সন্ধ্যারতির সময় ভক্তেরা মন্দিরে বসতেও পারবেন না। ১৪ এপ্রিলের পর পরিস্থিতি অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এ দিন সবে ভক্তদের ভিড় জমছিল মঠে। দুপুরের প্রসাদ পেতে কুপনের লাইনও শুরু হয়েছিল। তখনই ওই বিজ্ঞপ্তি মঠের সর্বত্র সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। তবে, দূরদূরান্ত থেকে আসা ১১০ জন ভক্তের জন্য দুপুরের প্রসাদের ব্যবস্থা করা হয়। মঠের অধ্যক্ষ স্বামী লোকোত্তরানন্দ বলেন, “করোনাভাইরাসে যাতে কেউ আক্রান্ত না হন, বা ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, সে বিষয়ে আমরা সাবধানতা অবলম্বন করেছি। অতিথিশালার বুকিং বন্ধ রাখা হয়েছে। সেখানে থেকে যাওয়া ভক্তদের অতিথিশালা খালি করতে বলা হয়েছে। তবে, ভিন্‌ রাজ্য বা বিদেশ থেকে যে সব ভক্ত এসে রয়েছেন, তাঁদের যে দিন ফেরার টিকিট কাটা আছে, সে দিনই ফিরে যাবেন। এ ক’দিন তাঁদের প্রসাদও দেওয়া হবে।’’

মঠ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভক্তদের দুপুরে প্রসাদ দেওয়া বন্ধ হলেও নিয়মমতো প্রতিদিন ৭০-৮০ জন দুঃস্থ বৃদ্ধবৃদ্ধা তা পাবেন। তবে তাঁদের বসিয়ে খাওয়ানো হবে না। হাতে হাতে প্রসাদ দেওয়া হবে। মঠের দাতব্য চিকিৎসালয়, স্থানীয় মহিলাদের স্বনির্ভরতার প্রশিক্ষণও চলবে। ভক্তদের তাঁরা সাবধান করছেন বলে জানিয়েছেন ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা ত্বহা সিদ্দিকী।

এ সবের মধ্যে তারকেশ্বর মন্দির কেন ঢিলেঢালা? কেন এ দিনও থিকথিকে ভিড়?

আগামী ১ এপ্রিল থেকে গাজনের মেলা শুরু হবে তারকেশ্বরে। প্রতি বছর হাজার হাজার মানুষ সেই মেলায় শামিল হন। প্রশ্ন উঠছে, সেই মেলার আয়োজন নিয়েও। তারকেশ্বরের পুরোহিতমণ্ডলীর সদস্য সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আগামী শুক্রবার এ বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব। মন্দিরের ব্যাপারে সে দিনই পরবর্তী কর্মসূচি চুড়ান্ত হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bandel Religion Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy