ম্যাপে এলাকা চিহ্নিত করে তদারকি জেলাশাসকের। —নিজস্ব চিত্র।
সংক্রমণের সর্বমোট সংখ্যা বলছে, রাজ্যের ২৩টি জেলার মধ্যে হুগলি পঞ্চম স্থানেই রয়েছে। কিন্তু গত কয়েক দিনের দৈনিক পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা যাচ্ছে, বেশকিছু জেলার তুলনায় এখানে করোনা-সংক্রমণের মাত্রা কম। হুগলি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, পরিস্থিতির নিবিড় পর্যবেক্ষণ এবং সেইমতো ব্যবস্থা নেওয়ায় পরিস্থিতি অনেকটা বাগে আনা গিয়েছে। এ জন্য প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছেন তাঁরা।
জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘জেলার প্রতিটি এলাকার সংক্রমিতের তথ্য হাতে রাখা হচ্ছে। যেখানেই সংক্রমণ কিছুটা বেশি হয়েছে, সেখানেই নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সচেতনতা প্রচার বাড়ানো হয়েছে। আগামী দিনে এ ভাবেই আমরা কাজ করব।’’
সোমবার রাজ্য প্রশাসনের প্রকাশিত কোভিড বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, হুগলিতে মোট আক্রান্ত ৫৫৪২ জন। ওই দিন সকাল ৯টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় এই জেলায় ৬৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। ওই সময়ের মধ্যে ১৪টি জেলায় সংক্রমণ হুগলির থেকে বেশি। অর্থাৎ, হুগলি রয়েছে ১৫ নম্বরে। পূর্ব বর্ধমানে আক্রান্তের সংখ্যা হুগলির সমান। রবিবারের বুলেটিনে দৈনিক সংক্রমিতের নিরিখে হুগলি ছিল ১১ নম্বরে। ওই দিন এই জেলায় ১০৬ জন সংক্রমিত হয়েছিলেন। তার আগের কয়েক দিন হুগলি ৫ থেকে ৮ নম্বরে ঘোরাফেরা করেছে।
প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, আনলক-পর্ব শুরুর পর থেকে যখন সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে, তখন থেকেই বিশেষ পরিকল্পনার কথা চিন্তাভাবনা করা হচ্ছিল। সেই মতো জেলাশাসকের দফতরের একটি মিটিং হলকে কার্যত ‘কোভিড ওয়ার রুম’ বানিয়ে ফেলা হয়। সম্প্রতি সফটওয়্যার তৈরি করে কোভিডের যাবতীয় খুঁটিনাটি তথ্য হাতের মুঠোয় এনে ফেলা হয়েছে। মাউস ক্লিক করলেই সেই তথ্য ভেসে উঠছে ড্যাশবোর্ডে। গোটা জেলার পাশাপাশি মহকুমা, পুরসভা, পঞ্চায়েত এমনকী, বুথ ধরে ধরে কত জন সংক্রমিত, সেখানে কত পরীক্ষা হয়েছে, সংক্রমণের হারের রেখচিত্র নিমেষে মিলে যাচ্ছে। জেলার কোভিড হাসপাতাল বা সেফ হোমে কত শয্যা রয়েছে, তাও জানা যাচ্ছে। সমস্ত তথ্য নিয়মিত পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, ধরা যাক, কোনও জায়গায় সংক্রমণ বেশি হল। সেখানে স্থানীয় ভাবে লকডাউন করা হয়েছে। কেউ যাতে অকারণে না বার হন, তা নিয়ে নজরদারি চালানো হয়েছে। এ ভাবেই সেখানে সংক্রমণের মাত্রা কমেছে। বর্তমানে সংক্রমিতদের অধিকাংশই বাড়িতে থাকছেন। টেলি-মেডিসিন এবং ‘ডক্টর অন কল’-এর মাধ্যমে তাঁদের পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকেরা। এই ব্যাপারেও নজর রাখা হচ্ছে প্রশাসনের তরফে।
জেলা প্রশাসনকে স্বস্তি দিচ্ছে সংক্রমিত এবং মৃত্যুর হার। তাদের বক্তব্য, রাজ্যে পজ়িটিভিটির হার ১০ শতাংশ। হুগলিতে তা ৭ শতাংশের কম। এক সময় এখানে দৈনিক ১০০-২০০ জনের লালারসের নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছিল। পরে তা বাড়িয়ে ৪০০ করা হয়। এখন ওই সংখ্যা পৌঁছেছে দু’হাজারের উপরে। করা হচ্ছে র্যাপিড টেস্ট। দৈনিক ৩০০০ জনের পরীক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। জেলাশাসকের বক্তব্য, ‘‘পরীক্ষার সংখ্যার নিরিখে সংক্রমিতের হার বেশি নয়। পাঁচ হাজার বুথের মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশে সংক্রমণ হয়নি।’’ রাজ্যে করোনায় মৃত্যুর হার ২.০৮৪% । এই জেলায় তা দেড় শতাংশের কিছু বেশি।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে করোনা রোগীদের পরামর্শ দেওয়া বা চিকিৎসা নিয়ে সমন্বয়ের নানা অভিযোগ আসছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের আধিকারিকদের বক্তব্য, খামতির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জেলার চার মহকুমার মধ্যে শ্রীরামপুর এবং চন্দননগরে সংক্রমণ অপেক্ষাকৃত অনেক বেশি। এই দুই মহকুমায় বাড়তি নজর দেওয়া হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy