কঙ্কালসার: এ ভাবেই রেলিংয়ের ধারে বেরিয়ে রয়েছে তার। নিজস্ব চিত্র
সাধারণ মানুষের দাবি থাকলেও পূর্ণাঙ্গ সংস্কার হয়নি। নতুন রেলিং তৈরির জন্য বছর খানেক আগে জীর্ণ ‘গার্ডওয়াল’ ভাঙার কাজ শুরু হয়েছিল শ্রীরামপুর উড়ালপুলে। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তে সেই কাজ বাতিল হয়। ইতিমধ্যে শুধু ছোটখাটো সংস্কার কাজ হয়েছে। ফলে, শ্রীরামপুর উড়ালপুলের হাল নিয়ে সাধারণ মানুষের আশঙ্কা অব্যাহত। সেতুটিতে গজিয়ে উঠেছে বট-অশ্বত্থ, আগাছা। দু’দিকের রেলিংয়ের কিছু জায়গায় ফাটল চওড়া হচ্ছে। উড়ালপুলের সব আলো জ্বলে না।
শ্রীরামপুরে জিটি রোড ধরে রেললাইনের উপরে ওই সেতু চালু হয় ২৮ বছর আগে। জায়গাটি ঘন বসতিপূর্ণ। সেতুর নীচ দিয়ে অটো-টোটো, সাইকেল-মোটরবাইক চলে। বহু দোকান রয়েছে। বাজারও বসে। উড়ালপুলের দু’পাশেই বাড়ি এবং আবাসন রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেতুটির নীচের অংশ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ে। রেলিং জীর্ণ। দীর্ঘদিন ধরেই ওই উড়ালপুলের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবি তুলছেন তাঁরা।
গত বছর মাঝেরহাটে সেতু দুর্ঘটনার পরে শ্রীরামপুর উড়ালপুলে সার্বিক সংস্কারের দাবি জোরালো হয়। সেই সময় সেতুর জীর্ণ রেলিং ভেঙে ফেলার কাজে হাত দেওয়া হয়েছিল। কথা ছিল, এক কোটি টাকা খরচ করে নতুন রেলিং (ক্র্যাশ ব্যারিয়ার) তৈরি করা হবে। কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের তরফে ওই রেলিং তৈরির বিষয়টি বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলে, সেই কাজ এগোয়নি। পরে অবশ্য ছোটখাটো মেরামতি করা হয়। গার্ডওয়ালের ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় নতুন করে প্লাস্টার করা হয়।
সার্বিক সংস্কারের প্রশ্নে পূর্ত দফতরের শ্রীরামপুরের সহকারী এগ্জিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুমিত দাস বলেন, ‘‘আপাতদৃষ্টিতে ওই উড়ালপুলে কোনও সমস্যা নেই। ছোটখাটো কিছু সংস্কার দরকার ছিল। সেই কাজ করে দেওয়া হয়েছে।’’ ওই দফতরের আধিকারিকদের বক্তব্য, আতঙ্কিত মতো পরিস্থিতি উড়ালপুলটির হয়নি। নীচের যে অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে, তা কংক্রিটের পাতলা স্তর। তাতে উড়ালপুলের ক্ষতির সম্ভাবনা নেই। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।
পূর্ত দফতরের বক্তব্যে স্থানীয় বাসিন্দারা সন্তুষ্ট নন। এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘ছ’-সাত মাস আগে রেলিংয়ের ধারে গজিয়ে ওঠা গাছ কাটা হয়েছিল। ফের তা গজিয়েছে। নীচের অংশে পলেস্তারা খসে পড়া কি ভাল স্বাস্থ্যের লক্ষণ?’’ স্থানীয় এক যুবকের কথায়, ‘‘এখান দিয়ে ভারী ট্রাক চলে। এত ভার বহন করার ক্ষমতা সেতুর আছে তো? এটাই তো পরীক্ষা করা দরকার বলে মনে হয়।’’ এই বক্তব্য অনেকেরই।
বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শ্যামল বসুরও অভিযোগ, ‘‘আসল সমস্যার সমাধান না করে শুধু সেতুতে জোড়াতাপ্পি দেওয়া হচ্ছে, রং করা হচ্ছে। ২৮ বছরের পুরনো সেতু কেন বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়ে পরীক্ষা করিয়ে পূর্ণাঙ্গ সংস্কার করা হচ্ছে না?’’ শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘সেতু নিয়ে নানা কাণ্ড ঘটছে। হইচই হচ্ছে। বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দিয়ে সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যাতে নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে পদক্ষেপের জন্য পূর্ত দফতরের কাছে আর্জি জানাব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy