অভিযুক্ত: এই সংস্থার বিরুদ্ধেই উঠেছে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে বেনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তদন্ত শুরু হয়েছে আমতার একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার বিরুদ্ধে। ওই সংস্থা রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতরের কাছ থেকে মহিলাদের বিভিন্ন বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পেয়েছিল। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, তাঁদের প্রথম বর্ষের প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে গেলেও কোনও শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। তাঁদের নামে যে ভাতা বরাদ্দ হয়েছিল তা তুলে নেওয়ার জন্য জাল আধার কার্ড করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে তাঁদের চাকরি দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। আমতা-১ বিডিওর কাছে কয়েকজন শিক্ষার্থী অভিযোগ জানান। বিডিও লোকনাথ সরকার বলেন, ‘‘অভিযোগ গুরুতর। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
রাজ্য কারিগরি শিক্ষা দফতরের উদ্যোগে গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ‘উৎকর্ষ বাংলা প্রকল্প’টি চালু হয়েছে। যে সব যুবক-যুবতী রাজ্যের প্রথাগত কারিগরি প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার সুযোগ পাননি তাঁদের জন্যই বিকল্প এই প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ উদ্যোগে এই প্রকল্প। সরকার সরাসরি প্রশিক্ষণ দেয় না। এই দায়িত্ব দেওয়া হয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে। রাজ্য সরকারের হয়ে বিষয়টি দেখভাল করে কারিগরি শিক্ষা দফতরের অধীন পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটি ফর স্কিল ডেভেলপমেন্ট (পিবিএসএসডি)।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে নির্বাচন করে প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেয় পিবিএসএসডি। তবে দায়িত্ব পেতে গেলে সংস্থাগুলিকে কিছু শর্ত পালন করতে হয়। তার মধ্যে অন্যতম হল, যাঁরা সংস্থা থেকে উত্তীর্ণ হবেন তাঁদের চাকরি বা বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। ন্যূনতম ৫০ শতাংশ প্রার্থীর চাকরির ব্যবস্থা করা বাধ্যতামূলক। এই প্রশিক্ষণ নিতে কোনও খরচ লাগে না। উল্টে যাঁরা প্রশিক্ষণ নিতে আসবেন তাঁদের রাহা খরচ ও জলপানি বাবদ দৈনিক ৫০ টাকা করে দিতে হবে। এই টাকা অবশ্য দেবে রাজ্য সরকারই।
পিবিএসএসডি সূত্রের খবর, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থারগুলির সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা দফতরের সরাসরি যোগাযোগ থাকবে। তার ফলে প্রতিদিন কত ছাত্র-ছাত্রী প্রশিক্ষণ নিতে আসছেন তা কারিগরি শিক্ষা দফতর জানতে পারবে।
আমতার ওই সংস্থা ‘উৎকর্ষ বাংলা’ প্রকল্পে মহিলাদের বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পায়। তাদের টেলারিং, বিউটিশিয়ান এবং কম্পিউটার এই তিনটি বিষয়ে প্রশিক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, এক বছরের প্রশিক্ষণ শেষ হয়ে গেলেও তাঁদের শংসাপত্র দেওয়া হয়নি। তাঁদের কর্মসংস্থানের কোনও দিশা দেখানো হয়নি। বিউটিশিয়ান বিষয়ের ছাত্রীরা জানান, তাঁদের চাকুরি নয়তো ব্যবসা করার জন্য সহায়তার কথা বলা হয়েছিল। চাকরি তো হয়নি। উল্টে ব্যবসা করার জন্য যে জিনিস বিনামূল্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, দেওয়া হয়নি তাও।
কয়েকজন ছাত্রী জানান, কিছু আধার কার্ড দেখিয়ে ওই সংস্থার তরফে বলা হয় ছাত্রীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সংযোগ করিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই অ্যাকাউন্টে রাহা খরচ ও জলপানির টাকা চলে গিয়েছে। ছাত্রীদের অভিযোগ, কিন্তু অ্যাকাউন্টে কোনও টাকাও যায়নি।
ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্ণধার রাজকুমার দাস বলেন, ‘‘প্রশিক্ষণের দায়িত্ব পেলেও আমরাই সরকারের কাছ থেকে টাকা পাইনি। কারও আধার কার্ড জাল করা হয়নি। শিক্ষার্থীরা মিথ্যা অভিযোগ করছেন।’’
টাকা না পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে পিবিএসএসডি-র এক কর্তা জানান, টাকা পাওয়ার শর্ত হল ওই সংস্থা কতজনকে চাকরি দিতে পেরেছে। হয়তো ওই সংস্থা শর্ত পূরণ করতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy