প্রতীকী ছবি
তিন সপ্তাহ ধরে জমে থাকা বরফ গলল প্রশাসনের ঘরে। ফলে, আজ, শুক্রবার থেকে ফের খুলে যাচ্ছে শ্রীরামপুরের বাঙ্গিহাটিতে লোহার যন্ত্রাংশ তৈরির কারখানা। মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) সম্রাট চক্রবর্তী জানান, মালিক এবং শ্রমিক পক্ষের মধ্যে সমস্যা মিটেছে। শুক্রবার থেকে কাজ চালু হবে। দু’পক্ষই সম্মত হয়েছে।
কারখানা খোলা নিয়ে বৃহস্পতিবারের বৈঠকে মহকুমাশাসক (এসডিও) বাদেও উপস্থিত ছিলেন শ্রীরামপুরের উপ শ্রম-কমিশনার সুকান্ত রায়চৈধুরী, পিয়ারাপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ অনিমেষ হাজরা, আইএনটিটিইউসি নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায় এবং সিটু নেতা অসীম মুখোপাধ্যায়। ছিলেন কারখানা-মালিক সন্দীপ পোদ্দার এবং কয়েক জন শ্রমিকও। বৈঠকে শ্রমিক-নেতা এবং কারখানা কর্তৃপক্ষের মধ্যে যুক্তি-পাল্টা যুক্তির পর্ব চলে।
সব শুনে মহকুমাশাসক মালিকপক্ষকে পুরোদমে কারখানা খোলার কথা বলেন। সুকান্তবাবুর কাছে তিনি প্রস্তাব দেন, যে তিন সপ্তাহ কারখানা বন্ধ ছিল, শ্রম আইন অনুযায়ী বিষয়টি যুক্তিযুক্ত কিনা, তা দেখা হোক। আইনে যে বিষয়টি সঠিক, সবাইকে তা মানতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট বেতন সংক্রান্ত রায় দিলে সেই অনুযায়ী এপ্রিল মাসের মজুরি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আপাতত শ্রমিকরা ওই টাকা দাবি করবেন না। কারখানা খুলে যাওয়ায় শেডের কাজেও বাধা থাকবে না। মহকুমাশাসকের কথায় সব পক্ষই সম্মত হয়।
দিল্লি রোডের ধারে ওই কারখানায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ১৩০ জন শ্রমিক আছেন। লকডাউনে বেশ কিছুদিন কারখানা বন্ধ ছিল। পরে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে একটু একটু করে যখন উৎপাদন স্বাভাবিক হচ্ছে, তখন পরিস্থিতি বিগড়ে দেয় আমপান। কারখানা কর্তৃপক্ষের দাবি, গত ২০ মে ওই ঘূর্ণিঝড়ে শেড এবং যন্ত্রপাতির ক্ষতি হয়। সেগুলি মেরামতের জন্য তার এক দিন পরে কারখানায় ‘সাসপেনশন অব অপারেশন’ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। তাতে শ্রমিকেরা নতুন করে সমস্যায় পড়েন।
ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে তিনটি শ্রমিক সংগঠন। অভিযোগ, শেডের কাজ করতে লোকজনকে কারখানায় ঢুকতে বাধা দেন আন্দোলনকারী শ্রমিকরা। অবিলম্বে ‘সাসপেনশন অব অপারেশন’ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়। লকডাউন-পর্বে এপ্রিল মাসে শ্রমিকরা দৈনিক ৪ ঘণ্টা কাজের টাকা পেয়েছেন। ওই মাসে ৮ ঘণ্টার টাকা দাবি করা হয়। লকডাউনে আর্থিক লোকসানের কারণে কর্তৃপক্ষ তাতে সম্মত হননি। অচলাবস্থা চলতে থাকে। শ্রীরামপুর শ্রম দফতরে একাধিক বৈঠকেও জট খোলেনি। এ দিকে, শ্রমিকদের ‘ভূমিকা’য় ক্ষুব্ধ মালিকপক্ষ জেলাশাসকের দফতরে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানান। তার প্রেক্ষিতেই বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের দফতরে বৈঠক হয়।
কারখানার দরজা খোলার সিদ্ধান্তে শ্রমিকরা খুশি। এক শ্রমিকের কথায়, ‘‘খুব কষ্টে আছি। উৎপাদন চালু হলে সংসার একটু ভাল ভাবে চলতে পারে। প্রশাসন জট কাটিয়ে দেওয়ায় বাঁচলাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy