খণ্ডযুদ্ধ: টোটনের বাড়িতে অভিযান পুলিশের। ছবি: তাপস ঘোষ
চারদিকে শুধু সিসি ক্যামেরা! তার বাড়িতে, বাড়ির বাইরে, পাশের সুপুরি কারখানায়, রাস্তায়— সর্বত্র! সব তার নিজের খরচে বসানো।
চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরের ‘ত্রাস’ টোটন বিশ্বাসকে ধরতে শুক্রবার রাত থেকে দু’দফায় তার ডেরায় হানা দিয়ে চক্ষু চড়কগাছ পুলিশ অফিসারদের। এত সিসি ক্যামেরা! পুলিশ সে সব সরিয়ে দিলেও স্থানীয় লোকজন অবশ্য দাবি করেছেন, সম্প্রতি জামিন পেয়ে টোটন এলাকায় ফিরলেও পুলিশের বিশেষ নজরদারি ছিল না। থাকলে পুলিশ সিসি ক্যামেরার কথা আগেই জানতে পারত। পুলিশ অবশ্য নজরদারির অভাবের কথা মানেনি।
কে এই টোটন?
যাকে ধরতে পুলিশের অভিযান ঘিরে শুক্রবার রাত থেকে চুঁচুড়ায় ধুন্ধুমার হল, বছর চল্লিশের সেই টোটনের বিরুদ্ধে তোলাবাজি, খুন, বেআইনি জমি কারবার-সহ নানা অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। বছর দেড়েক আগে সে পুলিশের হাতে ধরা পড়ায় এলাকাবাসী স্বস্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু সম্প্রতি জামিন পেয়ে এলাকায় ফিরে ফের সে দৌরাত্ম্য শুরু করেছিল বলে অভিযোগ।
তদন্তকারীদের দাবি, দু’টি কারণে নিজের বাড়ি, সুপুরি কারখানা এবং আশপাশের এলাকা সিসিক্যামেরায় মুড়ে ফেলে টোটন। যাতে পুলিশের গতিবিধি দেখে সে পালাতে পারে এবং শত্রুপক্ষের উপরেও নজর রাখা যায়। রবীন্দ্রনগরেই টোটনের দাদা তারক কয়েক বছর আগে খুন হয়। এরপর থেকেই টোটন সাবধানী হয়ে যায়। শুক্রবার রাতেই পুলিশ যেতেই সিসিক্যামেরার মাধ্যমে তা দেখে ফেলে টোটনের দলবল। তার পরেই পুলিশকে লক্ষ করে গুলি চালায় তারা।
শনিবার চুঁচুড়া এবং হুগলি স্টেশন রোডের বিস্তীর্ণ এলাকা টোটোন এবং তার দলবল অচল করে দেয়। অবরোধে নামে কয়েকশো মানুষ। কী করে নিজের সমর্থনে টোটন এত শক্তি সঞ্চয় করল, তা-ও পুলিশকে ভাবাচ্ছে। কারণ, ওই দু’টি স্টেশন এলাকা এ দিন কার্যত বন্ধের চেহারা নিয়েছিল।
এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, টোটনের পিছনে একটি রাজনৈতিক দলের মদত রয়েছে। পুলিশও তা জানে। পুলিশ অবশ্য এ কথা মানেনি। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা জানার চেষ্টা করছি, টোটোনের পিছনে নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের মদত ছিল কিনা। না হলে সে এতটা শক্তি সঞ্চয় করল কী ভাবে?’’
বিজেপি এবং তৃণমূল— দুই দলই টোটনকে কোনও ভাবে মদত দেওয়ার কথা মানতে চায়নি। চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার বলেন, ‘‘তৃণমূল বরাবরই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। এক দুষ্কৃতীর কী করে অত লোকবল হল, আড়াল থেকে কারা কলকাঠি নাড়ল, পুলিশ তা খতিয়ে দেখুক।’’ প্রায় একই সুরে বিজেপির চুঁচুড়া মণ্ডলের সভাপতি সুবীর নাগের দাবি, ‘‘ওর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। আমরাই দুষ্কৃতী-রাজের বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। আমরা বারবার বলার পরেও পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় এ দিন এই ধুন্ধুমার হল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy