প্রতীকী ছবি।
খবর পেয়ে চোখ কপালে ওঠে চাইল্ড লাইনের আধিকারিকদের। সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা যায়, টাকার বিনিময়ে এক নাবালিকাকে বিয়ে দিয়ে ভিন্ রাজ্যে পাঠিয়ে দেওয়ার বন্দোবস্ত সেরে ফেলেছেন বাবা-মা। মন্দিরে বিয়ে দিতে নিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা আগে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হোমে পাঠিয়েছে প্রশাসন। রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে শ্রীরামপুর শহরের হসপিটাল রোডে। মেয়েটির বয়স ১৪ বছর।
বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হুগলি জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) আধিকারিকরা। কমিটির চেয়ারপার্সন শুভাশিস নন্দী বলেন, ‘‘যা রিপোর্ট পেয়েছি, তাতে মেয়েটির ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়া হচ্ছিল টাকার বিনিময়ে। এটা হলে তো এক ধরনের পাচার! মেয়েটির সঙ্গে আমরা বিস্তারিত ভাবে কথা বলব। তার পরে প্রয়োজনীয় প্রশাসনিক পদক্ষেপ করা হবে।’’ এর পিছনে দালাল-চক্রের হাত থাকতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সরকারি দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, শনিবার রাতে সূত্র মারফত চাইল্ড লাইনে খবর আসে, রবিবার ওই কিশোরীকে বিয়ে দিয়ে রাজস্থানে পাঠানো হবে। চাইল্ড লাইনের তরফে প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট নানা দফতরে বিষয়টি জানানো হয়। রবিবার সকালে শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসকের দফতর, থানা এবং চাইল্ড লাইনের আধিকারিক মেয়েটির বাড়িতে যান। বাড়ির কাছেই তার বাবা-মা চায়ের দোকান চালান। প্রশাসনের দলটি তাঁদের সঙ্গে কথা বলে। যদিও, প্রথমে তাঁরা বিয়ের বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেন। তবে প্রশ্নের মুখে শেষ পর্যন্ত সত্যি স্বীকার করেন বলে প্রশাসন সূত্রের দাবি।
মেয়েটির আত্মীয়দের সঙ্গে কথা বলে সংশ্লিষ্ট দফতরের আধিকারিকরা জেনেছেন, মেয়েটি পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াকালীন ছেড়ে দিয়েছে। সম্প্রতি শ্রীরামপুরেরই বাসিন্দা এক দালাল মেয়েটির বাড়িতে যোগাযোগ করে বলেন, রাজস্থানের বাসিন্দা বছর ত্রিশের এক যুবকের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিলে নগদ দু’লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। মেয়ের বাবা-মা তাতে সম্মত হন। ঠিক হয়, রবিবার দুপুরে শেওড়াফুলির একটি মন্দিরে বিয়ে দেওয়া হবে। বিকেলে হাওড়া থেকে ট্রেন ধরে কিশোরীকে নিয়ে যুবকটি রাজস্থান রওনা হবেন। পরের দিন নগদ টাকা মেয়ের আত্মীয়দের হাতে তুলে দেওয়া হবে। তবে, শেষ মুহূর্তে মেয়ের বিয়ে দিতে না চাইলে তাঁর আত্মীয়দের ২০ হাজার টাকা দিতে হবে দালালকে। শনিবার রাতে দালাল মেয়ের শাড়ি-গয়না দিয়ে যান।
চাইল্ড লাইনের আধিকারিক সুস্মিতা কোলে বলেন, ‘‘টাকার বিনিময়ে মেয়েকে বিয়ে দিতে সম্মত হন বলে বাবা-মা সকলের সামনেই স্বীকার করেন। একথাও জানান, যে যুবকের সঙ্গে বিয়ের কথা বলা হয়, তাঁকে তাঁরা চোখে দেখেননি। তার পুরো ঠিকানাও জানেন না। শুধু জানেন, বিয়ের পরে মেয়েকে নিয়ে যুবকটি রাজস্থানে চলে যাবেন।’’ অভাবের কারণেই তাঁরা ওই শর্তে রাজি হন বলে কিশোরীর বাবা-মায়ের দাবি। ওই কিশোরী প্রশাসনিক আধিকারিকদের জানায়, সে বিয়ে করতে চায় না। বাবা-মায়ের কথায় রাজি হয়। বাড়ি থেকে উদ্ধারের পরে তাকে সিডব্লিউসি-র নির্দেশে হোমে পাঠানো হয়েছে। আজ, সোমবার তাকে ওই কমিটির সামনে হাজিরকরানোর কথা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy