আনোখা বর্মা।
হাওড়ায় ফের ডেঙ্গিতে মৃত্যু হল এক শিশুকন্যার। এ বার উত্তর হাওড়ার মালিপাঁচঘরার ঘুসুড়িতে। বৃহস্পতিবার ভোরে কলকাতার ই এম বাইপাস সংলগ্ন মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যায় ঘুসুড়ির জে এন মুখার্জি রোডের বাসিন্দা, চার বছর সাত মাসের ওই শিশুটি। এর আগে ৩ অক্টোবর মৃত্যু হয়েছিল বেলগাছিয়ার এক বালিকার।
পরিবার সূত্রের খবর, গত শুক্রবার আনোখা বর্মা নামে ওই শিশুটির জ্বর আসে। তাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে তিন দিন পরে রক্ত পরীক্ষা করিয়েও কিছু ধরা পড়েনি। কিন্তু গত সোমবার শিশুটির বমি ও পেটের সমস্যা শুরু হলে তাকে তড়িঘড়ি সালকিয়ার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় বুধবার তাকে মুকুন্দপুরের বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ আনোখাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত্যুর কারণ হিসেবে চিকিৎসক ‘ডেঙ্গি শক সিন্ড্রোম’ বলেই উল্লেখ করেছেন।
এ দিন আনোখার বাবা সঞ্জয়বাবু জানিয়েছেন, তাঁর আরও দুই মেয়ে রয়েছে। বড় জনেরও জ্বর হয়েছে। কিন্তু জেলা স্বাস্থ্য দফতর বা পুরসভার পক্ষ থেকে কেউ খোঁজ পর্যন্ত নিতে আসেনি বলেই দাবি সঞ্জয়বাবুর। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় প্রতি বছর অনেকেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হন। কিন্তু পুরসভার পক্ষ থেকে সে ভাবে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। খোঁজ নিতেও আসেন না স্বাস্থ্যকর্মীরা।’’
এ দিন ডেঙ্গিতে শিশু-মৃত্যুর খবরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে গোটা ঘুসুড়ি এলাকা। পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে মহিলা স্বাস্থ্যকর্মীরা এলাকায় সমীক্ষা করতে গেলে স্থানীয়েরা তাঁদের হেনস্থা করেন বলে অভিযোগ। তাঁদের কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলা হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের পাল্টা অভিযোগ, ঘুসুড়ির যে জায়গায় ওই শিশুটির পরিবার বসবাস করে, সেখানে মশা মারার তেল বা ব্লিচিং নিয়ে আজ পর্যন্ত পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মী বা মশাদমন শাখার কাউকে এলাকায় দেখা যায়নি। ঘুসুড়ির ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রাক্তন তৃণমূল কাউন্সিলর সাবিত্রীদেবী সাহুরও অভিযোগ, ‘‘এই এলাকায় প্রতি বছর ডেঙ্গি হয়। অথচ এ বার মশা মারার তেল নিয়ে কেউ আসেননি। মশা তাড়ানোর ধোঁয়াও দেননি। বাসিন্দাদের অভিযোগ পুরসভাকে বারবার জানিয়েছি, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি।’’
হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা ভবানী দাস বলেন, ‘‘ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘটনা সরকারি ভাবে জানি না। তবে যদি ঘটে থাকে, সেখানে পুরসভার মশাদমন শাখা গেলে আমাদের পতঙ্গ বিশারদ যাবেন লার্ভা চিহ্নিত করতে। এ ক্ষেত্রে পুরসভাকে এগিয়ে আসতে হবে।’’ পুরসভার স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘যেখানে ঘটনাটি ঘটেছে সেখানে কর্মীরা যান না, এ কথা ঠিক নয়। ওই এলাকার মানুষ সচেতন নন বলেই প্রতি বছর ডেঙ্গি হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy