প্লাস্টিক ব্যাগের বিপদ নিয়ে বোঝাচ্ছেন পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ডু। বৌবাজারে। (নীচে) পুকুরপাড়ে প্লাস্টিক-থার্মোকলের স্তূপ। ছবি: তাপস ঘোষ
পুরসভার ‘কর্পোরেশন’-এর তকমা রয়েছে। কিন্তু প্লাস্টিক-থার্মোকলের বাড়বাড়ন্তে আর পাঁচটা জায়গার মতোই হাঁসফাঁস অবস্থা চন্দননগর শহরের। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অবশেষে অভিযানে নেমে ক্রেতা-বিক্রেতাকে পাতলা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহারে জরিমানার নিদান দিলেন পুরকর্তারা। যা দেখে পরিবেশ সচেতন নাগরিকদের অনেকে মনে করছেন, দেরিতে ঘুম ভাঙল পুরসভার। কড়া হাতে ব্যবস্থা নেওয়া হলে সুফল মিলবে।
বৃহস্পতিবার শহরের লক্ষ্মীগঞ্জ বাজার, বৌবাজার, পালিকা বাজার এবং স্বপ্না বাজারে হানা দেন পুর কমিশনার স্বপন কুণ্ড-সহ অন্য পুর আধিকারিকেরা। দেখা যায়, খুল্লমখুল্লা চলছে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার। বিক্রেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়, তাঁরা যাতে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে সামগ্রী না দেন। ক্রেতাদেরও এ ব্যাপারে সচেতন করা হয়। প্লাস্টিক এবং থার্মোকলের বিপদ নিয়ে লিফলেট ছড়ানো হয়। কাগজ-কাপড় দিয়ে তৈরি প্রায় ১৮ হাজার ব্যাগ বিক্রেতাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় বলে পুর-কর্তৃপক্ষের দাবি। বিভিন্ন বাজার ঘুরে সরেজমিনে পরিস্থিতি দেখে পুর-কর্তৃপক্ষের নিদান, প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ব্যবহার আর বরদাস্ত করা হবে না। প্রয়োজনে জরিমানার রাস্তায় হাঁটবেন তাঁরা।
স্বপনবাবু বলেন, ‘‘এখন থেকে নির্দিষ্ট মাপের কম পুরু প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ ব্যবহার করা হলে বিক্রেতা এবং ক্রেতা—উভয়কেই জরিমানা করা হবে। পরিবেশবান্ধব জিনিসের তৈরি ব্যগ ব্যবহারে সবাইকে উৎসাহিত করা হবে। দূষণমুক্ত শহর গড়তে পুরসভা নানা পদক্ষেপ করছে। এই অভিযান তারই অঙ্গ। নজরদারি চলবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে প্রয়োজনে পরিবেশ আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’
অভিযোগ, যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যাগ, থার্মোকলের থালা পড়ে থাকায় শহর নোংরা হয়। নিকাশি ব্যবস্থায় প্রভাব পড়ে। দৃশ্যদূষণও হয়। এ দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেল, পুকুরের জলে, রাস্তার ধারে, বাজারের পাশে প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগের ছড়াছড়ি। বিভিন্ন বাজারে ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ক্রেতাদের চাপে তাঁরা প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ রাখতে বাধ্য হন।
বৌবাজারের আনাজ বিক্রেতা স্বপন দাসের বক্তব্য, ‘‘প্লাস্টিকের প্যাকেটে আনাজ দেওয়া প্রায় বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু এ নিয়ে খদ্দেরদের সঙ্গে ঝগড়া বেঁধে যায়। ক্রেতারা সচেতন হলেই হলেই সমস্যা মিটবে।’’ চন্দননগরের সর্ষেপাড়ার বাসিন্দা অনমিত্র বসু বলেন, ‘‘শহরকে দূষণমুক্ত করতে প্রত্যেকের এগিয়ে আসা উচিত। আমরা সাধারন মানুষ সচেতন হলেই দোকান-বাজারে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ, বিয়েবাড়িতে থার্মোকলের থালা-বাটির ব্যবহার রোখা যাবে। শুধু পরিবেশ নয়, এগুলো শরীরের পক্ষেও ক্ষতিকর।’’
এ শহরের বাসিন্দা, পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘দেরিতে হলেও পুরসভা যে উদ্যোগী হয়েছে, এটা ভাল। শুধু আবেদন করলে হবে না, ধারাবাহিক নজরদারি এবং নিষেধ অমান্য করলে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে কোনও লাভ হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy