—ফাইল চিত্র।
নির্বাচন কমিশনের তত্ত্বাবধানে ৬ মে হাওড়ায় লোকসভা ভোট। তাই হাওড়া আদালত-চত্বরে পুরকর্মী-আইনজীবী সংঘর্ষে পুলিশের লাঠি চালানোর ঘটনা নিয়ে দায়ের হওয়া মামলায় এখনই কোনও নির্দেশ দেওয়া যথাযথ হবে না বলে মনে করছে কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপতি থোট্টাথিল ভাস্করন নায়ার রাধাকৃষ্ণন ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার এ কথা জানিয়ে ৮ মে মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছে। প্রশ্ন উঠছে, সে-ক্ষেত্রে রাজ্য বার কাউন্সিল কি ৮ মে পর্যন্ত আইনজীবীদের কাজ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করবে? আজ, বৃহস্পতিবার বিকেলে কাউন্সিলের বৈঠকে পদক্ষেপ ঠিক করার কথা। কাউন্সিল সূত্র জানাচ্ছে, ডিভিশন বেঞ্চ ৮ মে শুনানির দিন ধার্য করায় অধিকাংশ সদস্য ওই দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করার পক্ষে মত দিতে পারেন।
গত ২৪ এপ্রিল হাওড়া পুরসভার সামনে গাড়ি রাখা নিয়ে পুরকর্মী ও আইনজীবীদের সংঘর্ষের জেরে অবরোধ হয়। অবরোধকারী আইনজীবীদের সরাতে গিয়ে পুলিশ লাঠি চালায়। পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে, আদালতের মধ্যে ঢুকে তারা লাঠি চালিয়েছে, কাঁদানে গ্যাসের শেল পাঠিয়েছে। ওই ঘটনার প্রতিবাদে হাওড়া আদালতের আইনজীবীরা সে-দিন থেকেই কাজ বন্ধ রাখেন। দোষীদের গ্রেফতারের আগে পর্যন্ত রাজ্যের অন্যান্য আদালতের আইজীবীদের কাজ বন্ধ রাখতে অনুরোধ করেছে বার কাউন্সিল। সেই কর্মবিরতি চলছে।
সোমবারের শুনানিতে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের ডিজি, হাওড়ার পুলিশ কমিশনার, হাওড়া থানার ওসি ও হাওড়া পুরসভার কমিশনারকে পৃথক ভাবে হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চ। সেই অনুযায়ী রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত পৃথক পৃথক হলফনামা পেশ করেন। হাইকোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় যুক্ত হতে হাওড়া আদালতের আইনজীবীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দিন আবেদন জানান আইনজীবী সপ্তাংশু বসু। ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন মঞ্জুর করে এবং আদালতে পেশ করা হলফনামা নিয়ে বক্তব্য থাকলে পাল্টা হলফনামা দাখিলের অনুমতি দেয়।
হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলও এই মামলায় যুক্ত হয়েছেন। তাঁর আইনজীবী জয়দীপ কর জানান, প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এ দিন পুলিশ ও রাজ্য প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে, বিচার বিভাগের কোনও অফিসারের নির্দেশ বা অনুরোধ ছাড়া হাওড়া আদালতে যাতে অনধিকার প্রবেশ না-হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী পুলিশ কাজ করবে এবং আইনজীবীদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হলে প্রশাসন হস্তক্ষেপ করবে, এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই।
প্রধান বিচারপতি রাধাকৃষ্ণন হাওড়া আদালতের অচলাবস্থা কাটাতে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির একটি প্রশাসনিক কমিটি গড়ে দিয়েছেন। সেই কমিটির বাকি সদস্যেরা হলেন বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত, বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি মহম্মদ মুমতাজ খান। পাঁচ বিচারপতি গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে হাওড়া আদালতের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে যান। বিচারপতি সেন হাওড়ার আদালতের দায়িত্বে থাকা ‘জোনাল জজ’। আদালত সূত্রের খবর, বিচারপতিরা হাওড়া আদালতের আইনজীবীদের প্রতিনিধিদের জানিয়ে এসেছেন, বিচারপ্রার্থীরা আইনি পরিষেবা পাচ্ছেন না। আইনজীবীরা কাজ বন্ধ রাখায় অসুবিধায় পড়েছেন অসহায় বিচারপ্রার্থীরা। তাঁদের দুর্ভোগ দূর করাই এখন প্রধান উদ্দেশ্য। অচলাবস্থা কাটাতে এগিয়ে আসতে হবে। কে দোষী, কে নির্দোষ, তার বিচার যথাসময়ে যথাস্থানে হবে। আইনজীবীদের প্রতিনিধিরা বিচারপতিদের জানিয়েছেন, তাঁরা যা চাইছেন, আজ, বৃহস্পতিবারের বৈঠকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy