হাওড়ার দাশনগর থানার এক পুলিশ অফিসারকে ‘ক্লোজ’ করল হাওড়া পুলিশ কমিশনারেট। অভিযোগ, ‘ঘুষ’ চাওয়ার প্রতিবাদ করায় এক যুবককে ওই অফিসার বেধড়ক মারধর করেছিলেন। কমিশনারেট সূত্রে খবর, ওই অফিসারের নাম মৃণালকান্তি দে। তিনি দাশনগর থানার
সেকেন্ড অফিসার।
হাওড়ার পুলিশ কমিশনার গৌরব শর্মা মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। এসিপি (দক্ষিণ) তদন্ত করছেন। আপাতত ওই অফিসারকে ক্লোজ করা হয়েছে।’’ যদিও ওই পুলিশ অফিসার তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা যাবতীয় অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, গত বৃহস্পতিবার হাওড়ার শানপুর এলাকার একটি পুরনো খাতা-বই, কাগজ, লোহার ছাঁট ইত্যাদি বিক্রির দোকান থেকে মালিক ও তাঁর ভাইকে চোরাই মাল রাখার অভিযোগে গ্রেফতার করে দাশনগর থানার পুলিশ। যে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয় তাঁদের নাম অরবিন্দ সাহু ও গোবিন্দ সাহু। অভিযোগ, ধৃতদের থেকে চোরাই মালপত্র উদ্ধার না হলেও তাঁদের থানায় নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে প্রথমে ৫ লক্ষ টাকা চাওয়া হয়। পরে ২ লক্ষ টাকায় পুলিশের সঙ্গে রফা হয় বলে ধৃতদের দাবি। ধৃতদের পরিবারের তরফে অভিযোগ করা হয়, দুই ভাইয়ের গ্রেফতারি এড়াতে বন্ধু-বান্ধবের থেকে ধার করে ১ লক্ষ টাকা তাঁরা থানায় দিয়েও দেন। কিন্তু পুরো টাকা না দিতে পারায় বড়ভাই অরবিন্দকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে গোবিন্দকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
এই ঘটনার প্রতিবাদ করতে সোমবার সকালে দাশনগর থানায় যান ওই দুই যুবকের পারিবারিক বন্ধু তথা এলাকার তৃণমূলকর্মী জয়ন্ত সাঁতরা। টাকা নেওয়ার পরেও কেন অরবিন্দকে ছাড়া হল না এই নিয়ে জয়ন্ত প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, এর পরেই সোমবার রাতে পুলিশ জয়ন্তকে তাঁর এলাকা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করে। এমনকি তাঁকে মারধর করার পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে কোমরে দড়ি বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয়। তাঁর ঘনিষ্ঠ এক দলীয় কর্মীকে অন্যায় ভাবে আটক করে পুলিশ মারধর করছে খবর পেয়ে বেশি রাতে দাশনগর থানায় লোকজন নিয়ে ছুটে যান শিবপুর কেন্দ্রের তৃণমূল বিধায়ক জটু লাহিড়ী। প্রতিবাদে রাস্তায় বসে অবরোধ করেন শাসক দলের বিধায়ক।
জটুবাবুর এই অবরোধের জেরে হাওড়া-আমতা রোড যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরে পদস্থ পুলিশকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে বিধায়ককে দোষী পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। রাতেই ছেড়ে দেওয়া হয় জয়ন্তকে। ঘুষ চাওয়ার প্রতিবাদ করায় তাঁকে থানায় নিয়ে গিয়ে মারধর করার অভিযোগে ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন জয়ন্ত।
রাস্তা অবরোধ করে দলের নীতির বিরুদ্ধে কাজ করলেও কোনও আফশোস নেই হাওড়ার বর্ষীয়ান তৃণমূল বিধায়ক জটুবাবুর। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘‘ঘুষ নেওয়ার প্রতিবাদ করায় এক যুবককে মৃণালকান্তি দে নামে থানার সেকেন্ড অফিসার বেধড়ক মারধর করেছেন। এর আগেও সাধারণ মানুষকে নানা ভাবে হেনস্থা করা ও ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ রয়েছে ওই পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতেই আমি রাস্তা অবরোধ করেছিলাম।’’
সব অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার মৃণালবাবু। তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ উঠছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। কাউকে মারধর করা হয়নি। আমাদের কাছে আসা নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে গ্রেফতার করেছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy