Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

বিশ্বকর্মার আঙিনায় সহাবস্থান

হুগলির আরামবাগে রাজনীতির ময়দানে যুযুধান দুই দলের নেতা-কর্মীদের বিশ্বকর্মা পুজোর আঙিনায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে এলাকায়।

পাশাপাশি: বিজেপি ও তৃণমূলের পুজো মণ্ডপ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

পাশাপাশি: বিজেপি ও তৃণমূলের পুজো মণ্ডপ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:২৭
Share: Save:

গায়ে গায়ে দু’টি মণ্ডপ। একটির রং নীল-সাদা। অন্যটা গেরুয়া। অথচ, কোনও টক্কর নেই। ঢাক বাড়ছে। এক শিবিরের নেতা এসে অন্য মণ্ডপে গল্প করছেন!

হুগলির আরামবাগে রাজনীতির ময়দানে যুযুধান দুই দলের নেতা-কর্মীদের বিশ্বকর্মা পুজোর আঙিনায় শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান রীতিমতো চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে এলাকায়। আরামবাগ বাসস্ট্যান্ড চত্বরে তৃণমূলের বাসকর্মী সংগঠনের বিশ্বকর্মা পুজো হয় ছ’বছর ধরে। এ বার তার পাশেই পুজোর আয়োজন করেছে বিজেপির অসংগঠিত শ্রমিক সংগঠন। তাদের জায়গা করে দিতে তৃণমূলের নিজেদের পুজোর জায়গা অনেকটাই ছোট করে দিয়েছে। এ দিন পথচলতি মানুষ অবাক হয়ে শুনেছেন, একই বোলে বাজছে দুই পুজোর ঢাক।

সকালে তৃণমূল পরিচালিত পুজোর উদ্বোধন করেন আরামবাগের পুরপ্রধান স্বপন নন্দী। উদ্বোধন সেরে তাঁকে ‘বিজেপির বিশ্বকর্মা’কে দীর্ঘক্ষণ প্রণাম করতে দেখা যায়। আবার দুপুরে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ নিজেদের দলের পুজো উদ্বোধন করতে গিয়ে তৃণমূলের বিশ্বকর্মার কাছে অনেকটা সময় কাটালেন। দু’পক্ষের নেতারা গল্পগুজবে মেতে উঠলেন। শুধু কাজে নয়, দু’পক্ষের নেতাদের গলাতেও সহাবস্থানের সুর এনেো দিয়েছেন বিশ্বকর্মা।

স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণচন্দ্র সাঁতরা বলেন, ‘‘শুধু উৎসব নয়, বছরভর এই স্বাস্থ্যকর পরিবেশই আমাদের সকলের কাম্য।’’ অন্য দিকে, বিজেপি নেতা বিমানবাবুর কথায়, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানেই বিশ্বাসী।’’

এই ‘সহাবস্থান’ বজায় রাখতে দুই দলের পুজোর ক্ষেত্রেই কিছু পরিকল্পনা বদল করতে হয়েছে। তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের কর্মকর্তা সফিকুল ইসলাম ওরফে মেজকা বলেন, ‘‘অন্যান্য বার গানের অনুষ্ঠান হয়। এ বার ওই অনুষ্ঠান রাখা হয়নি। যাতে ভিড়ে এ চত্বরে কোনও সমস্যা না হয়। শুধুমাত্র শনিবার বাস-শ্রমিকদের একটা করে হাঁড়ি, খুন্তি এবং হাতা দেওয়া হবে।’’ বিজেপির শ্রমিক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৌমেন পাল বলেন, ‘‘আমরাও উপহার দেওয়ার কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু কোনও প্রতিযোগিতার বাতাবরণ যাতে তৈরি না-হয়, সে জন্য ওই পরিকল্পনা বাতিল করেছি। নিষ্ঠা সহকারে পুজো আর প্রসাদ বিতরণ ছাড়া আর তেমন কোনও কর্মসূচি আমাদের নেই।’’

সব দেখেশুনে অনেকেই বিস্মিত হচ্ছেন। স্থানীয় এক প্রৌঢ় বলেন, ‘‘আরামবাগ মহকুমা জুড়েই বিজেপি এবং তৃণমূলের আকচা-আকচি চরমে। মারামারি-রক্তারক্তির বিরাম নেই। সেখানে দু’দলের এমন সহাবস্থান দেখে ভীষণ অবাক হয়েছি।’’

অনেকেই বলছেন, রাজনীতিতে নীতির লড়াই থাকুক। উৎসবের ময়দানে থাক এমনই নৈকট্য।

অন্য বিষয়গুলি:

Vishwakarma Puja BJP TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy