নজরদারি: নিগৃহীতার বাড়ি থেকে দূরে পুলিশ প্রহরা। নিজস্ব চিত্র
কেটে গিয়েছে পাঁচটি দিন। দুই অভিযুক্ত গ্রেফতার হয়েছে। বাড়ির কাছে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। তবু হামলায় আশঙ্কায় ভুগছেন হাওড়ার বাগনানের গোপালপুর গ্রামের সেই নিগৃহীতা তরুণী। বাবাকে নিয়ে বেশির ভাগ সময় কাটাচ্ছেন পাশের মামার বাড়িতে। নিজের বাড়িতে যতক্ষণ থাকছেন, দরজা ভিতর থেকে তালাবন্ধ করে রাখছেন।
কিসের ভয়? তরুণী বলেন, ‘‘কথা ছিল আমাদের বাড়ির একেবারে সামনে পুলিশ থাকবে। কিন্তু পুলিশ আছে বাড়ি থেকে অনেকটা দূরে। মনে হচ্ছে যারা আমাকে নিগ্রহ করেছে এবং মাকে খুনে অভিযুক্ত তাদের বাড়িই পুলিশ পাহারা দিচ্ছে! অল্প সময়ের জন্য বাড়ি আসি। অচেনা ছেলেরা বাড়ির সামনে দিয়ে হুমকি দিয়ে যায়। বলে, আর আর কয়েকদিন পরেই বিধায়ক এসে উচিত শিক্ষা দেবেন। আমার কী দোষ?’’
এ সব কথা অবশ্য এখনও পুলিশকে জানাননি তরুণী। জেলা (গ্রামীণ)পুলিশ সুপার সৌম্য রায় বলেন, ‘‘নিরাপত্তার অভাবের কথা জানিয়ে ওই তরুণী বা তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে আমার কাছে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি। তাঁর বাড়ির সামনে পুলিশ প্রহরা আছে। তবুও বিষয়টি ফের খতিয়ে দেখা হবে।’’
গত ২৪ জুন রাতে ওই তরুণী বাড়ির ছাদে বসেছিলেন। বাগনান-২ পঞ্চায়েতের সদস্য রমা বেরার স্বামী কুশ এবং কুশের শাগরেদ বাচ্চু মণ্ডল পাশের সুপুরি গাছ বেয়ে উঠে তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। তরুণীর চিৎকারে তাঁর মা সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠছিলেন। কুশ ও বাচ্চু তাঁকে ধাক্কা মেরে ফেলে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। মহিলাকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরের দিন তিনি মারা যান। সে দিনই কুশ ও বাচ্চুকে পুলিশ গ্রেফতার করে। রমা ও তার স্বামী তৃণণূল কর্মী ছিলেন। দু’জনকেই বহিষ্কার করে তৃণমূল।
তরুণীর আরও অভিযোগ, পুলিশে এফআইআর করার পর থেকেই স্থানীয় তৃণমূল নেতারা তাঁকে বিষয়টি মিটমাট করে নেওয়ার প্রস্তাব দিচ্ছেন। কয়েকদিন আগে তদন্তে এসে দুই পুলিশ অফিসারও তাঁকে টাকা এবং চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। ওই প্রতিশ্রুতি আসলে টোপ বলে মনে করছেন ওই তরুণী। বাগনান থানার আইসি অমরজিৎ বিশ্বাসের দাবি, ‘‘ওই ধরনের কোনও প্রতিশ্রুতি তরুণীকে দেওয়া হয়নি।’’
বাগনানের তৃণমূল বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘তরুণীর পরিবারকে সব রকম পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছে। পুলিশকে বলা হয়েছে, তদন্তে যেন কোনও ফাঁক না রাখা হয়। বিজেপি আসলে ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে। তরুণীকে অনুরোধ করব তিনি যেন বিজেপির ফাঁদে না দেন।।’’
একই কথা জানান জেলা (গ্রামীণ) তৃণমূল সভাপতি পুলক রায়। এ নিয়ে বিজেপি নেতা প্রেমাংশু রানা বলেন, ‘‘ওই তরুণীকে তৃণমূলের হুমকি এবং পুলিশের পক্ষ থেকে টোপ দেওয়ার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলনে নামব।’’ সোমবার অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ বাগনান থানায় স্মারকলিপি দেয়। তরুণীর নিরাপত্তার দাবি জানিয়েছে সিপিএম এবং কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy