চলছে সাজানোর কাজ। ছবিটি তুলেছেন রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।
বছর তেইশ আগে বাহারি ফুল ও গাছ দিয়ে তৈরি তৈরি হয়েছিল পার্ক। কিন্তু দেখভালের অভাবে সেই সাজানো পার্ক কয়েক বছর পরেই নষ্ট হয়ে যায়। ২০০৭ সালে ডোমজুড়ের সেই পার্ককে নতুন করে তৈরি করা হয়। নাম দেওয়া হয় ‘তারাপদ দে পর্যটন কেন্দ্র’। কিন্তু ফের একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। ফের বেহাল হয়ে যায় পার্ক। এ বার তাকে ফের নতুন করে সাজিয়ে তুলে সেখানে ক্যাফেটেরিয়া তৈরিতে উদ্যোগী হল ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি। এতে সমিতির আয়েরও রাস্তা খুলল বলে সেখানকার কর্তাদের দাবি।
মফসস্লের তকমা ছেড়ে ডোমজুড় এখন প্রায় শহর। পঞ্চায়েত এলাকা থেকে বের করে এনে ডোমজুড়কে পুরসভার মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য প্রশাসনে আলোচনা চলছে। কিন্তু এই জনপদে এত দিন কোনও সরকার পরিচালিত বিনোদন পার্ক ছিল না। বেসরকারি উদ্যোগে কয়েকটি পার্ক থাকলেও সেখানে খরচ বেশি। তাই কয়েক বছর ধরে ‘তারাপদ দে উদ্যান’ সংস্কারের দাবি উঠছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা ব্লক প্রশাসনের কাছে এ বিষয়ে দরবার করেছিলেন।
এলাকার বাসিন্দাদের সেই দাবি মেনেই পার্কটি সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি। সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর চট্টোপাধ্যায় (টিঙ্কাই) এবং বনভূমি কর্মাধ্যক্ষ সজল ঘোষ (বীরু) জানান, দু’টি পর্যায়ে পার্কটির সংস্কার করা হবে। প্রথম পর্যায়ে পুরো পার্ক চত্বর পরিষ্কার, রাস্তা সারাই, ঝিলের পাড় বাঁধানো এবং ঝিলে স্পিডবোট চালু করা হবে। এর জন্য খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা। পরবর্তী পর্যায়ে পার্কে আধুনিক আলো, ছোটদের জন্য দোলনা-সহ বিভিন্ন খেলার ব্যবস্থা, পিকনিক স্পট ও ক্যাফেটেরিয়া তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই রাস্তা সারাই ও রং করার কাজ অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে।
সাজসজ্জা
• আধুনিক আলো
• স্পিডবোট
• ছোটদের খেলার জায়গা
• ক্যাফেটেরিয়া
• পিকনিক স্পট
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বর্ণালি ঘোষ বলেন, ‘‘পুরো কাজ শেষ হয়ে গেলে টেন্ডার ডেকে পেশাদার সংস্থাকে পার্কটি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সমস্যা হলে পঞ্চায়েত সমিতি নিজেও পুরো দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত। প্রবেশ মূল্য দিয়ে পার্কে ঢুকতে হবে।’’ ডোমজুড়ের বিডিও তমোঘ্ন কর বলেন, ‘‘পুরো উদ্যোগটাই পঞ্চায়েত সমিতির। ব্লক প্রশাসন তাদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্কটির আয়তন প্রায় এক একর। ভিতরে রয়েছে ইটের রাস্তা ও কিছু বসার জায়গা। রয়েছে একটি বড় জলাশয়। ১৯৯২ সালে ‘অরণ্য সপ্তাহ’ চলার সময়ে ডোমজুড় মতিঝিল এলাকায় পার্কটির প্রথম উদ্বোধন হয়। তখন সেখানে শুধুই ফুলের বাগান ছিল। পরে ২০০৭ সালে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির যৌথ উদ্যোগে পার্কটি সংস্কার করা হয়। এলাকার প্রয়াত সিপিএম নেতা তারাপদ দে’র নামে পার্কটির নাম রাখা হয়। দেখভালের জন্য এক জন কেয়ারটেকার নিয়োগ করা হয়। প্রতি শীতে এই পার্কটি পিকনিক স্পট হিসেবে ব্যবহৃত হতে শুরু করে। কিন্তু দেখভালের অভাবে আস্তে আস্তে নোংরা হতে থাকে পার্ক চত্বর। পার্ক থেরে কোনও স্থায়ী আয় না থাকায় স্থানীয় প্রশাসন এর সংস্কারে উদ্যোগী হয়নি। এ বার সেই পার্কটির মাধ্যমেই আয়ের নতুন রাস্তা তৈরি করতে চাইছে ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি।
এই উদ্যোগে সাধারণ মানুষ খুশি। তবে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির এই উদ্যোগকে আপাতত গুরুত্ব দিতে নারাজ রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা স্থানীয় বাসিন্দা, সিপিএম নেতা মোহন্ত চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, ‘‘ওই পার্কের কাঠামো আমাদের তৈরি করা। তাতে রং পড়ছে। এটা তো করারই কথা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy