ক্ষোভ: একশো দিনের কাজের শ্রমিকদের বিক্ষোভ। মঙ্গলবার গোঘাটের বেঙ্গাই এলাকায়। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
কাজই করতে হল না। তৃণমূলের মিছিলে যাওয়ার শর্তে একদিনের হাজিরা পেলেন ১০০ দিন কাজ প্রকল্পের শ্রমিকরা। ঘটনাটি গোঘাট-২ ব্লকের বেঙ্গাই পঞ্চায়েতের।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার। বেঙ্গাই ১৬ নম্বর সংসদের শ্রমিকরা জানান, ডিজেল-পেট্রলের দামবৃদ্ধি নিয়ে ওই দিন বিকালে তৃণমূলের মিছিল কর্মসূচি ছিল। শ্রমিকদের দাবি, ওই সংসদের সদস্য বাসব চট্টরাজ বলেছিলেন, যাঁরা মিছিলে যাবেন, তাঁদের ১০০ দিন কাজ প্রকল্পের একটি রোজ দেওয়া হবে।
সেই অনুযায়ী মঙ্গলবার সকালে কাজের ক্ষেত্রে এসে সুপারভাইজারদের কাছে বিষয়টা জানিয়ে মাস্টাররোলে নাম তোলার দাবি করেন শ্রমিকরা। একেবারেই কোনও কাজ না করায় ওই শ্রমিকদের মাস্টাররোলে নাম তুলতে আপত্তি তুলেছিলেন প্রকল্পের তদারকিতে থাকা তিন সুপারভাইজার। এরপরই বিক্ষোভ দেখান শ্রমিকরা। পরিস্থিতি সামাল দিতে পঞ্চায়েতের আর এক সদস্য তথা দলের অঞ্চল সভাপতি অনুপ মণ্ডল ঘটনাস্থলে এসে শ্রমিকদের হাজিরা খাতায় নাম তুলে দেওয়ার নির্দেশ দেন বলে অভিযোগ।
সুপারভাইজারদের পক্ষে মৃত্যঞ্জয় বাগ বলেন, “এই বিরাট দুর্নীতির দায় আমরা নিতে অস্বীকার করলে শ্রমিকরা বিক্ষোভ দেখান। বাধ্য হয়েই কাজ বন্ধ রেখে বিষয়টা বিধায়ক, এবং পঞ্চায়েতে জানাই। এই অপকর্মের সমস্ত দোষ যাতে আমাদের উপর না বর্তায় তাই বিষয়টা সবারইকে জানানো হয়।’’
শ্রমিকদের শর্ত দেওয়ায় অভিযুক্ত পঞ্চায়েত সদস্য বাসব চট্টোরাজ বলেন, “আমি এরকম কোন শর্ত দিইনি।” পঞ্চায়েতের উপপ্রধান জয়দেব কোনারের দাবি, ‘‘এই বিষয়টা নিয়ে বিধায়ক বলবেন। আমরা সমস্ত বিষয়টা তাঁকে জানিয়েছি।” বিধায়ক মানস মজুমদার বলেন, “পঞ্চায়েত সদস্য বাসব শ্রমিকদের বলেছিলেন মিছিলে গেলে মাংস-ভাত খাওয়াবেন। শ্রমিকরা ভুল বুঝে কাজের জায়গায় এসে গোলমাল করেন। পঞ্চায়েত থেকে তাঁদের হাজিরা দেওয়া হয়েছে।’’
তবে যিনি মীমাংসায় গিয়ে ছিলেন সেই পঞ্চায়েত সদস্য তথা দলের অঞ্চল সভাপতি অনুপ মণ্ডল বলেন, “শ্রমিকরা এমনই ক্ষিপ্ত ছিলেন যে হাজিরা দেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না। আমাদের সদস্য সত্যি যদি এরকম শর্ত দিয়ে থাকেন, তা অত্যন্ত অন্যায় হয়েছে। এখন শ্রমিকদের হাজিরা দেওয়ার বিষয়টা নিয়ে ব্লক প্রশাসন শেষ কথা বলবে।”
বিষয়টি নিয়ে গোঘাট-২-এর বিডিও অভিজিৎ হালদার বলেন, “সরকারি প্রকল্পে শ্রমিকরা কাজ না করলে একটা টাকাও পাবেন না।”
এই দুর্নীতি নিয়ে বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “তৃণমূল কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পে টাকাই নয়ছয় করছে। এখন দলের কর্মসূচি চালাতেও প্রকাশ্যে জোচ্চরি শুরু করছে। পুরো বিষয়টা আমরা রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় স্তরে জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy