উত্তপ্ত: গোলমালের সময় লাঠি হাতে লোকজন। —নিজস্ব িচত্র
একটি প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা দখল নিয়ে পান্ডুয়ার ক্ষীরকুন্ডি নিয়ালা-নামাজ পঞ্চায়েতের তৃণমূলের দুই নেতার কাজিয়া দীর্ঘদিনের। সেই কাজিয়াকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দুপুরে তপ্ত হল নিয়ালা পশ্চিমপাড়া এলাকা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে জখম হলেন অন্তত ২০ জন। চার জনের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাঁদের চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁদের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের সম্পাদক এবং তাঁর স্ত্রীও রয়েছেন। গোলমালের পরে এলাকায় পুলিশ টহল শুরু হয়।
যে দুই নেতার মধ্যে গোলমাল, তাঁদের মধ্যে আতাউল রহমান মণ্ডল ওরফে আনিস প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান সম্পাদক। অন্যজন ওই পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য শেখ মইনুদ্দিন। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ জানিয়েছে পুলিশকে। পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শুরু হয়েছে। প্রয়োজনে শান্তি-বৈঠক হতে পারে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রতিষ্ঠানের কে সম্পাদক হবেন, তা নিয়ে দুই নেতার বিবাদ দীর্ঘদিনের। এ দিন বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ নিয়ালা পশ্চিমপাড়ায় একটি টোটো করে প্রতিষ্ঠানের মিটিং হওয়ার কথা প্রচার করছিলেন কয়েকজন। আতাউল টোটোটি আটকান। তারপরেই গোলমালের সূত্রপাত।
মইনুদ্দিনের অভিযোগ, ‘‘টোটোতে আমার লোকজনকে মারধর করেন আতাউল। তিনি প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি, পুকুর ভাগের টাকা লুট করছেন। গ্রামবাসীই প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন।’’ অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন আতাউল। তাঁর দাবি, ‘‘আমি কাউকে মারধর করিনি। শুধু জানতে চেয়েছিলাম, আমি জানি না, প্রতিষ্ঠানের মিটিং কে ডেকেছে? এ প্রশ্ন করামাত্র মইনুদ্দিনের লোকজন রড দিয়ে আমার মাথায় মারে। ঘরে ঢুকে স্ত্রী-ছেলেকেও মারধর করেছে। আলমারি ভেঙে ব্যবসার কয়েক লক্ষ টাকা, সোনার গয়না, জরুরি কাগজপত্র নিয়ে পালায় মইনুদ্দিনের লোকেরা। আমার গাড়ির শোরুমে ভাঙচুর চালায়। প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য মার খেলাম। আমার কাছে সব প্রমাণ আছে। পুলিশকে দেব।’’
আতাউল এবং তাঁর স্ত্রী রাফিকা বেগম (পঞ্চায়েত সদস্যা) চুঁচুড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আতাউলের মাথায় আটটি এবং রাফিকার মাথায় চারটি সেলাই পড়েছে। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এই গোলমালকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে মানতে চাননি। পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ তথা ব্লক তৃণমুলের সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায় এবং পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমুলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলামের দাবি, ‘‘ওই প্রতিষ্ঠানের ক্ষমতা দখলকে কেন্দ্র করে গ্রাম্য বিবাদ হয়েছে। এখানে তৃণমূলের কোনও যোগ নেই।’’ আতাউল দলের ব্লক সভাপতির এবং মইনুদ্দিন দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতির অনুগামী বলে পরিচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy