সমীর সরকার।
সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে ‘কাটমানি-পোস্টার’-এর তদন্তে আরও একজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। আটক করা হল পুলিশ অফিসার সমীর সরকারকেও। শনিবার রাতেই সমীরবাবুকে শ্রীরামপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। আগেই ওই ঘটনায় ধৃত পুলিশের ভাড়াগাড়ির চালক অমিয় খামরুইয়ের সঙ্গে সমীরবাবুকে মুখোমুখি বসিয়ে জেরা করেন তদন্তকারীরা। পোস্টার-কাণ্ডে সমীরবাবুর ভূমিকা নিয়ে তদন্তকারীরা নিশ্চিত হতে চাইছেন।
চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ন কবীর জানিয়েছেন, ওই অফিসারকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সেখান থেকে ঠিক কোন তথ্য উঠে আসে, তা দেখা হচ্ছে। তার উপরই নির্ভর করছে পরবর্তী পদক্ষেপ। সমীরবাবু এ নিয়ে কথা বলতে চাননি। ‘ব্যস্ত আছি’ বলে তিনি রবিবার ফোন কেটে দেন। তবে, গোটা ঘটনায় শাসকদল কিছুটা অস্বস্তিতে। কারণ, এমনিতেই জেলায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জেরবার শাসক-শিবির। এই ঘটনায় কোন নেতার নাম তদন্তে উঠে আসে, তা নিয়েও উদ্বেগে রয়েছেন অনেকে।
গত ২৯ জুলাই গভীর রাতে ‘পুলিশ’ স্টিকার সাঁটা একটি বোলেরো গাড়িতে চেপে এসে কয়েক জন শ্রীরামপুর, শেওড়াফুলি স্টেশন-সহ বিভিন্ন জায়গায় সাংসদের নামে ওই পোস্টার লাগায় বলে অভিযোগ। তাতে অশ্লীল কথাও লেখা ছিল। সিসিক্যামেরার ফুটেজ দেখে গাড়িটি চিহ্নিত করে পুলিশ। পরে চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে গাড়িটি আটক করা হয়। গ্রেফতার করা হয় ওই গাড়ির চালক অমিয় খামরুইকে। তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, ভাড়াগাড়িটি চড়তেন জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে (ডিআইবি) সাব-ইনস্পেক্টর পদে কর্মরত সমীরবাবু। অমিয়কে জেরা করে পুলিশ রিষড়ার বাসিন্দা মহম্মদ মোস্তাফাকেও শনিবার গ্রেফতার করে। তিনি পুলিশের ফাইফরমাস খাটতেন। পুলিশের দাবি, মোস্তাফা ২৯ জুলাই রাতে ওই গাড়িতেই ছিলেন। ধৃত দু’জনেই জেরায় জানিয়েছে, ওই রাতে গাড়িতে সমীরবাবুও ছিলেন।
অমিয়কে জেরা করার পরেই চন্দননগর কমিশনারেটের পক্ষ থেকে সমীরবাবুকে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানো হয়েছিল। আলোচনার জন্য তাঁকে ডাকাও হয়েছিল। কিন্তু কিছুতেই তিনি সাড়া দেননি বলে পুলিশের দাবি। এরপরেই শনিবার তাঁকে আটক করা হয়। আগে অবশ্য সমীরবাবু দাবি করেছিলেন, তিনি ওই রাতে গাড়িতে ছিলেন না।
তৃণমূলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এই ঘটনায় দলেরও কারও নাম জড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সমীরবাবু বরাবরই জেলার এক তাবড় নেতার ঘনিষ্ঠ। কিন্তু গত লোকসভা ভোটে সমীরবাবুর ভূমিকা যথাযথ ছিল না। সেই সময় তিনি জাঙ্গিপাড়ার ওসি ছিলেন। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্ব ভোটে ওই অফিসারের অতি সক্রিয়তা নিয়ে সাংসদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে সাংসদ তখনকার মতো স্থানীয় নেতাদের আশ্বস্ত করেন। ভোট মিটতেই ওই অফিসারকে সরিয়ে জেলা পুলিশের কম গুরুত্বের জায়গায় বদলি করা হয়। তাতেই ওই অফিসার বিরক্ত হন বলে তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি। তাঁদের অনুমান, সেই রাগে সমীরবাবু সাংসদের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেন।
এ নিয়ে সাংসদ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি এখন পুলিশের কোর্টে। যে ঘটনার তদন্ত চলছে, তা নিয়ে মন্তব্য করা অনুচিত।’’ জাঙ্গিপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘ওই পুলিশ অফিসারের ভূমিকা নিয়ে নানা কারণেই প্রশ্ন থাকছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy