স্মরণ: শরৎচন্দ্রের জন্মদিনে দেবানন্দপুরে সাহিত্যপ্রেমীরা। নিজস্ব চিত্র।
এর আগে বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাগনানের সামতাবেড়ে ‘শরৎচন্দ্র অ্যাকাডেমি’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন আমতার বিধায়ক অসিত মিত্র। বুধবার সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে এসে একই দাবি তুললেন তিনি।
এ দিন ছিল শরৎচন্দ্রের ১৪৪ তম জন্মবার্ষিকী। ওই উপলক্ষে সকাল থেকেই সামতাবেড়ে কথাশিল্পীর বাড়িতে নানা অনুষ্ঠান হয়। সকালে পানিত্রাস শরৎ স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে অনুষ্ঠান হয়। বিকেলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে শরৎচন্দ্র জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন কমিটি। আলোচনা, অঙ্কন প্রতিযোগিতা, ধাঁধা প্রতিযোগিতা, নাটক হয়। বহু মানুষ হাজির হন।
বিধায়ক অসিতবাবু বলেন, ‘‘এই বাড়িতেই সরকার একটি অ্যাকাডেমি গঠন করতে পারে। যেখানে লেখককে নিয়ে নানা তথ্য থাকবে। শরৎবাবুকে নিয়ে যাঁরা গবেষণা করতে চান তাঁরা তো বটেই, বাংলা সাহিত্যের ছাত্রছাত্রী এবং সাহিত্যানুরাগীরাও উপকৃত হবেন। আমি বিধানসভায় প্রসঙ্গটি তুলেছিলাম।’’ দক্ষিণ-পূর্ব রেলের দেউলটি স্টেশনের নামকরণ কথাশিল্পীর নামে করার দাবিও সম্প্রতি উঠেছে। ট্রেনপথে সামতাবেড়ে আসতে হলে দেউলটি স্টেশনে নামতে হয়। উলুবেড়িয়ার সাংসদ সাজদা আহমেদ বলেন, ‘‘রেল বোর্ডের কাছে আমি দেউলটি স্টেশনকে শরৎচন্দ্রের নামে করার দাবি জানিয়েছি।’’
বিধায়কের প্রস্তাব প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, এর আগেও এখানে নানা ধরনের প্রকল্প গড়ার পরিকল্পনা হয়েছিল। কিন্তু ওই জমি ও বাড়ি শরৎবাবুর ব্যক্তিগত সম্পত্তি, যা এখন লেখকের উত্তরাধিকারীদের হাতে আছে। তাঁদের আপত্তিতেই কোনও কাজ এগোয়নি। এ দিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখকের নাতি জয় চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনই মন্তব্য করতে পারব না। তবে পরিবেশ একই রকম রেখে যদি সরকার কোনও প্রকল্প হাতে নেয়, তা হলে আমাদের আপত্তি নেই। বহু ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, সরকার হাতে নিলে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক ভাবে হয় না।’’
সামতাবেড়ে শরৎচন্দ্রের বাড়ি হাওড়া জেলা তথা রাজ্যের অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র। রূপনারায়ণের তীরে মনোরম পরিবেশে ‘বাংলো’ ধরনের মাটির বাড়ি তৈরি করেছিলেন কথাশিল্পী। জীবনের শেষ ১২ বছর তিনি এখানে বসবাস করেন।
এখানে থাকাকালীন কলকাতায় একটি বাড়ি করেছিলেন। কিন্তু সামতাবেড়ের বাড়িটি ছিল তাঁর প্রিয়। এর প্রমাণ তিনি রেখে গিয়েছেন বহু ব্যক্তিগত চিঠিতে। এখানে থাকাকালীন তিনি লিখেছিলেন ‘শ্রীকান্ত-চতুর্থ পর্ব’, ‘বিপ্রদাস’, ‘শুভদা’-র মতো উপন্যাস। লেখা শুরু করেছিলেন ‘নারীর মর্যাদা’ শীর্ষক প্রবন্ধমালা। অগ্নিযুগের বহু বিপ্লবীর সঙ্গে কথাশিল্পীর যোগাযোগ ছিল। তাঁদের অনেকে এই বাড়িতে এসেছেন। সেই সময়ের জাতীয় রাজনীতি ও সাহিত্য জগতের বহু নক্ষত্রও এখানে এসেছিলেন।
হুগলির দেবানন্দপুরে কথা সাহিত্যিকের জন্মভিটেতেও বুধবার রীতিমতো সাজো সাজো রব ছিল। এখানে জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের সহযোগিতায় এবং জেলা পরিষদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠান হয়। ব্যান্ডেল স্টেশন থেকে লেখকের ভিটে পর্যন্ত প্রভাতফেরি হয়। স্কুল পড়ুয়া থেকে বিভিন্ন বয়সের মানুষ তাতে শামিল হন। পরে লেখককে নিয়ে আলোচনা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রলয় মজুমদার, বিধায়ক অসিত মজুমদার, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, জেলা সভাধিপতি মেহবুব রহমান প্রমুখ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy