আমপানের ফলে বোরো ধানের ক্ষতির আশঙ্কা। বৃহস্পতিবার গোঘাটের রেজিস্ট্রি অফিসের মাঠে। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ
ছাড় পেলেন না চাষিরা। মাথায় হাত পড়ল তাঁদের।
আমপান লন্ডভন্ড করে দিল দুই জেলার চাষের খেত। বোরো ধান থেকে আনাজ, পান থেকে তিল— ঝড়ের থাবা থেকে বাদ গেল না কিছুই।
হুগলি জেলা কৃষি দফতরের হিসেবে, বাদাম এবং তিল চাষের প্রায় ৯৪ শতাংশ থেকে ৯৬ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আনাজ চাষেও ক্ষতির হার গড়ে ৯৪ থেকে ৯৫ শতাংশ। মুগ ডাল চাষে ক্ষতি প্রায় ৮০ শতাংশ। আর বোরো ধানের অধিকাংশই চাষির ঘরে ঢুকে গেলেও প্রায় ১২ শতাংশ মাঠে থেকে গিয়েছিল। সেই ধানে কল হয়ে গিয়ে সবই প্রায় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। পাটও ঘরে তোলা যাবে না বলে চাষিরা হাহাকার করছেন।
জেলা কৃষি দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ক্ষতির পরিমাণ জানতে সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যে কৃষকদের শস্যবিমা রয়েছে, তাঁদের টাকা দ্রুত দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
করোনার সঙ্গে এ বার আমপানে বিধ্বস্ত হলেন হাওড়া জেলার ফুল ও পান চাষিরা। একইসঙ্গে এখানকার বোরো চাষিরাও ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বাগনান-১ এবং ২ ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকায় ফুল চাষ হয়। এখন হচ্ছে বেল, জুঁই, রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস, আস্তারার চাষ। রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস, আস্তারা খুব নরম গাছ। সেই কারণে এই গাছ ধকল সহ্য করতে পারে না বলে চাষিরা জানিয়েছেন। ঝড়বৃষ্টিতে সব রজনীগন্ধা, গ্ল্যাডিওলাস এবং আস্তারা গাছ নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে তাঁরা জানান।
চাষিদের বক্তব্য, লকডাউন যখন ধীরে ধীরে শিথিল হচ্ছে, তখন তাঁরা ভেবেছিলেন এ বার বাজার পাবেন। কিন্তু আমপান চরম ক্ষতি করে দিল। বেল ও জুঁইয়ের কুড়ি ঝরে যাওয়ায় এই দুই ফুলও আর মিলবে না বলে চাষিরা জানান। ‘সারা বাংলা ফুল চাষি ও ফুল ব্যবসায়ী সমিতি’র রাজ্য সম্পাদক নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, নদিয়া এবং হাওড়া ফুল চাষের জন্য বিখ্যাত। এই জেলাগুলিতেই আমপান তাণ্ডব চালাল। ক্ষতি কী করে পূরণ হবে বুঝতে পারছি না।’’
হাওড়ার আমতা, বাগনান এবং উলুবেড়িয়ার বহু এলাকায় পান চাষ হয়। লকডাউনে উলুবেড়িয়ার কালীতলায় পানের বাজার বন্ধ। তাতে পান চাষিরা এমনিতেই ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বুধবারের আমপানে বেশিরভাগ বরজ উড়ে গিয়েছে। ফলে, পান চাষিরা কার্যত পথে বসেছেন। উলুবেড়িয়ার এক পানচাষি জানান, তিনি ভেবেছিলেন লকডাউন উঠলে ক্ষতি পুষিয়ে নেবেন। কিন্তু বরজটাই তো নেই!
জেলায় এ বার ৩৩ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয়েছিল। বেশিরভাগ ধান অবশ্য কাটা হয়ে গিয়েছে। যেগুলি মাঠে পড়ে আছে সেগুলি নষ্ট হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে কৃষি দফতরই। নষ্ট হয়ে গিয়েছে হাজার হাজার বিঘা জমির আনাজও। জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ক্ষতির পরিমাণ হিসাব করা হচ্ছে। ক্ষতিপূরণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্য সরকার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy