ফাইল চিত্র।
ব্যতিক্রম শুধু ডোমজুড়!
আমপানের পরে দেড় মাস পার। কিন্তু এ পর্যন্ত ওই ঘূর্ণিঝড়ে হাওড়ার বাকি ১৩টি ব্লকে মোট কত ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তের কাছে ক্ষতিপূরণের কত টাকা গিয়েছে এবং তার কতটা ফেরত এসেছে, সেই হিসেব এখনও কষে উঠতে পারল না জেলা প্রশাসন। টাকা ফেরতের প্রশাসনিক প্রক্রিয়া কী ভাবে শুরু হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টাস্ক ফোর্স ব্যস্ত সংশোধিত তালিকা তৈরির কাজে। এ পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন ভাবে কিছু ক্ষেত্রে ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তেরা নিজেরাই ব্লক অফিসে গিয়ে টাকা ফেরত দিয়ে এসেছেন। ফলে, টাকা ফেরানোর সরকারি আশ্বাসে ভরসা রাখছেন না বিরোধীরা।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির করা প্রথম দফার যে তালিকা নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল, তাতে জেলায় সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার নাম ছিল। একমাত্র ডোমজুড় ব্লক থেকে পাওয়া হিসেব অনুযায়ী, ১৫ জন ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্ত টাকা ফেরত দিয়ে গিয়েছেন। বাকি ব্লকগুলি থেকে এ সংক্রান্ত কোনও হিসাব মেলেনি।
জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘প্রথম তালিকার ভিত্তিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে টাকা বিলিই হয়নি। বড়জোড় ৩০ শতাংশ হয়েছে। যে অল্পসংখ্যক মানুষ টাকা পেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে যদি কেউ ভুয়ো থাকেন, তা হলে টাস্ক ফোর্সের রিপোর্টের ভিত্তিতে তাঁদের কাছ থেকে টাকা ফেরত নেওয়া হবে। সেই প্রক্রিয়া বিভিন্ন ব্লকে চলছে। অনেকে নিজে থেকেই টাকা ফেরত দিয়েছেন।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে, প্রথম তালিকার ভুয়ো ক্ষতিগ্রস্তদের চিহ্নিত করা ছাড়াও বিডিও-র নেতৃত্বে গড়া টাস্ক ফোর্সের আরও একটি দায়িত্ব ছিল। তালিকা থেকে ভুয়ো নাম বাদ দেওয়া এবং তাঁদের মধ্যে যাঁরা ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন, তা ফেরত নেওয়া। তদন্ত করে রাজ্য সরকারের নির্দেশমতো গত ২ জুলাই বিভিন্ন ব্লকে টাস্ক ফোর্স চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, আগের তালিকায় থাকা বহু নাম বাদ গিয়েছে। নতুন আবেদনকারীর নাম উঠেছে। কিন্তু কত জনের কাছ থেকে টাকা ফেরানো হচ্ছে, ডোমজুড় ছাড়া তার হিসাব অন্য কোনও ব্লকে নেই।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের দাবি, নতুন আবেদন জমা নিতে গিয়েই আগের তালিকা যাচাইয়ের কাজটি কার্যত ভণ্ডুল হয়ে যায়। প্রতি ব্লকে গড়ে ১০ হাজার করে নতুন আবেদনপত্র জমা হয়। মাত্র পাঁচ দিনের মধ্যে সেইসব আবেদন যাচাই করে দ্বিতীয় তালিকা তৈরি করতে হয়। সেটি করতে গিয়েই কালঘাম ছুটে যায় ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের। ফলে, প্রথম তালিকার ক্ষেত্রে যে সব নাম নিয়ে অভিযোগ উঠেছে, শুধুমাত্র সেগুলি যাচাই করেছে টাস্ক ফোর্স। অথচ, কথা ছিল তালিকার প্রতিটি নাম ধরে ধরে সরেজমিন তদন্ত করা হবে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত না হলে তালিকা থেকে নাম বাদ যাবে। তিনি ক্ষতিপূরণ পেয়ে থাকলে সেই টাকা তাঁর কাছ থেকে ফেরত নেওয়া হবে। বেশির ভাগ ব্লকেই প্রথম তালিকার ক্ষেত্রে এটা করা হয়নি বলে মানছেন জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কেউ কেউ। তাই হিসাবও মিলছে না।
এই টাকা ফেরত নেওয়ার সরকারি আশ্বাসকে বিরোধীরা মানুষের চোখে ধুলো দেওয়ার চেষ্টা হিসেবে দেখছেন। জেলা সিপিএম সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘ফেরত নেওয়ার জন্য তো আর টাকা দেওয়া হয়নি। এটা নির্বাচনের কাজে লাগানোর জন্য পরিকল্পিত ভাবেই দেওয়া হয়েছে।’’ একই সুর কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রের গলায়। বিজেপি নেতা শিবশঙ্কর বেজ জানান, টাকা ফেরতের দাবিতে তাঁরা আন্দোলনে নামবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy