কৃষিযন্ত্র কেনার জন্য তাঁরা সব মিলিয়ে তিন কোটি টাকারও বেশি ভর্তুকি পেয়েছেন বলে তদন্তকারীদের দাবি
কৃষিযন্ত্র কেনার জন্য সরকারি ভর্তুকির টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে হুগলির এক কৃষিকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। কৃষি দফতরের তদন্তকারীরা মনে করছেন, শুধু ওই আধিকারিকই নন, দুর্নীতির জাল বহুদূর বিস্তৃত। পিছনে অন্য কোনও বড় মাথাও রয়েছে।
তদন্তে নেমে ছয় ‘ক্রেতা’র নাম পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষি দফতরের অফিসাররা। ছ’জনের মধ্যে চার জন বলাগড়ের তিনটি এলাকার বাসিন্দা। বাকি দু’জনের বাড়ি পান্ডুয়ার জামগ্রামে। কৃষিযন্ত্র কেনার জন্য তাঁরা সব মিলিয়ে তিন কোটি টাকারও বেশি ভর্তুকি পেয়েছেন বলে তদন্তকারীদের দাবি। বলাগড়ের সংশ্লিষ্ট কৃষি সমবায় সমিতির ভূমিকা নিয়ে তাঁরা সন্দিহান।
শুক্রবারই আনন্দবাজারে ওই দুর্নীতি সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তারপরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। তবে, তদন্তের স্বার্থে এখনই বিস্তারিত কিছু বলতে নারাজ কৃষি দফতর। কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু বলেন, ‘‘তদন্তে সবটাই উঠে আসবে। আমি দফতরের অফিসারদের ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছি, সরকারি ভর্তুকি দেওয়ার প্রক্রিয়ায় আরও সতর্ক হতে হবে। বলাগড়ের কৃষি সমবায়ের ক্ষেত্রে যে সব অনিয়ম উঠে এসেছে, অন্য ক্ষেত্রে এমন কিছু রয়েছে কিনা, তা সবাইকে খুঁজে বের করতে হবে। যাঁরা অনিয়মের ঘটনায় জড়িত তাঁদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।’’
সরকারি প্রকল্প ‘কাস্টম হায়ারিং সেন্টার’-এ মাধ্যমে কৃষিযন্ত্র (ট্রাক্টর, ধান ঝাড়ার যন্ত্র ইত্যাদি) কিনতে পারেন সম্পন্ন চাষিরা। এ জন্য ওই চাষিদের আবেদন করতে হয় কৃষি দফতরে। যন্ত্রের দামের ২৫ শতাংশ টাকা দিতে হয় চাষিকে। ৩৫ শতাংশ টাকা ঋণ দেয় সমবায় সমিতি। বাকি টাকা (৪০%) ভর্তুকি দেয় রাজ্য সরকার। কৃষি দফতর চাষিদের আবেদন মঞ্জুর করার পরই গোটা প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। কেনার পরে কৃষিযন্ত্র ভাড়া দেন চাষিরা। সেই ভাড়ার টাকায় তাঁরা সমবায়ের ঋণ পরিশোধ করেন।
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, ২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষে ওই সরকারি প্রকল্পে বহু টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয় বলাগড়ের কিছু চাষিকে। ওই ব্লকেরই একটি সমবায় সমিতি মারফত ৩২টি ট্রাক্টর এবং ১৪টি ধান ঝাড়ার যন্ত্র কেনা হয়েছে বলে খাতায়-কলমে দেখানো হয়। কৃষি দফতরে দায়ের হওয়া একটি অভিযোগে জানানো হয়েছে, ওইসব কৃষিযন্ত্রের খাতায়-কলমে থাকা ‘ক্রেতা’রা পরস্পরের আত্মীয়। একটি ছোট এলাকায় অত কৃষিযন্ত্র কোথায় খাটছে আর কত টাকাই বা ভাড়া মিলছে, এমন প্রশ্নও তোলা হয়। কৃষিযন্ত্র কেনার ওই সব আবেদন চুঁচুড়া ধান্য গবেষণা কেন্দ্রের এক অফিসারই মঞ্জুর করেছিলেন বলে অভিযোগ।
ওই অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্ত চলছে। চলছে ওই সব কৃষিযন্ত্রের হদিসও। ‘ক্রেতারা’ সংশ্লিষ্ট সমবায়কে ঋণ পরিশোধ করছেন কিনা, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। বর্ধমানের মেমারি এবং কাটোয়ার ডিলারদের থেকেই খাতায়-কলমে কৃষিযন্ত্র কেনা হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy