গচ্ছিত টাকা ফেরত পেতে স্টেট ব্যাঙ্কের চন্দননগরের খলিসানি শাখার একাধিক গ্রাহক কিছুদিন আগেই নাকাল হওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন। এ বার এক তরুণীর কন্যাশ্রী প্রকল্পে জমা পড়া ২৫ হাজার টাকার মধ্যে ১০ হাজার টাকা লোপাট হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠল। খোওয়া যাওয়া টাকা ফেরত পেতে চন্দননগর আইন সহায়তা কেন্দ্রের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়েছেন তরুণী।
রিতি সিংহ নামে একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া ওই তরুণী ফটকগোড়া কালীতলা এলাকায় ভাড়া থাকেন। বাবা অমরনাথ সিংহ রিকশাচালক। মা প্রমীলাদেবী পরিচারিকার কাজ করেন। রিতি জানান, চার বছর আগে কন্যাশ্রী প্রকল্পে তাঁর নাম নথিভুক্ত হয়। ‘গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র’-এর মাধ্যমে ওই ব্যাঙ্কে তিনি অ্যাকাউন্ট খোলেন। গত বছর ২ ফেব্রুয়ারি অ্যাকাউন্টে ২৫ হাজার টাকা জমা পড়ে। তারঁ অভিযোগ, ছ’মাস পরে অ্যাকাউন্ট থেকে ১০ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়।
রিতির দাবি, ‘‘মোবাইলে টাকা ঢোকার বার্তা পাইনি। গত জানুয়ারি মাসে ব্যাঙ্কে পাশবই ‘আপডেট’ করাতে গিয়ে ওই টাকা জমা পড়ার কথা জানতে পারি। তখনই দেখি, কেউ ১০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছে।’’ তাঁর পরিবারের লোকজনের দাবি, ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হলেও সদুত্তর মেলেনি। প্রমীলাদেবী বলেন, ‘‘দিন কয়েক আগে শুনি, ওখানে আরও কয়েক জন প্রতারিত হয়েছেন। অভিযোগ জানিয়ে তাঁরা টাকা পেয়েছেন। এর পরেই সাহায্যের জন্য আইন সহায়তা কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করি।’’ ওই সংস্থার তরফে মঙ্গলবার স্টেট ব্যাঙ্কের বিভিন্ন দফতরে চিঠি দেওয়া হয়।
ব্যাঙ্ক সূত্রের দাবি, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের নির্দেশিকা অনুযায়ী ‘ব্যাঙ্কিং করসপনডেন্ট’ নিয়োগ করা হয়। ব্যাঙ্কের সঙ্গে সংযোগ রেখে তারা গ্রাহককে পরিষেবা দেয়। এখানেও এমন শাখা ছিল। বছর খানেক আগে কিছু অসঙ্গতি দেখে ব্যাঙ্কের তরফে তাদের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়। সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে ওই কেন্দ্র থেকেই কিছু হয়েছে কিনা, তা দেখতে হবে। ব্যাঙ্কের এক আধিকারিক বুধবার বলেন, ‘‘তরুণীর অভিযোগ হাতে পাইনি। পেলে তদন্ত করা হবে। অভিযোগ সত্যি হলে সংশ্লিষ্ট সংস্থার মাধ্যমে টাকা ফেরতের জন্য পদক্ষেপ করা হবে। এমন আগেও হয়েছে।’’
এর আগেও ওই ব্যাঙ্কে গচ্ছিত টাকা ফেরত পেতে একাধিক গ্রাহককে নাকাল হতে হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিস্তর দৌড়ঝাঁপের পরে তাঁরা টাকা পান। তবে সুদ মেলেনি। ওই ব্যাঙ্ক আধিকারিকের খেদ, ‘‘কোনও ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্কের সরাসরি যোগ নেই। অথচ, ব্যাঙ্কের সুনামে দাগ লাগছে। গ্রাহক ব্যাঙ্কে নিরাপদ। গ্রাহকদের অভিযোগ পেয়ে পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’
আইন সহায়তা কেন্দ্রের সম্পাদক বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষ গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র দেখে ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খোলেন না। খোলেন ব্যাঙ্ককে দেখে। তাঁদের টাকা সুরক্ষিত থাকবে না কেন? নিজেদের টাকা পেতে তাঁদের হয়রান হতে হবে কেন? ব্যাঙ্ক এর দায় এড়াতে পারে না। দোষীদের খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হোক। গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়া হোক সুদ-সমেত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy