Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

সদ্যোজাতকে অন্যের হাতে, নালিশ গুড়াপে

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গুরুতর অভিযোগ। অনুসন্ধান করে যত দ্রুত সম্ভব উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। এসিএমওএইচ (সদর) বন্দনা সরকার এবং বিএমওএইচ-কে (ধনেখালি) বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুড়াপ শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:৫০
Share: Save:

নিয়মবিরুদ্ধ ভাবে এক সদ্যোজাতকে অন্য লোকের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ উঠল হুগলির গুড়াপের একটি নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জেনে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক দফতরের হস্তক্ষেপে শিশুটিকে হোমে পাঠানো হয়েছে। নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানানো হয়েছে।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘গুরুতর অভিযোগ। অনুসন্ধান করে যত দ্রুত সম্ভব উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। এসিএমওএইচ (সদর) বন্দনা সরকার এবং বিএমওএইচ-কে (ধনেখালি) বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।’’ শিশুর হাতবদলের বিষয়টি ওই নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ মানছেন। তবে, তাঁদের দাবি, অবিবাহিত এক তরুণী শিশুটির জন্ম দেন। তিনি বা তাঁর বাড়ির লোকেরা শিশুটিকে নিতে চাননি। বিষয়টি জেনে নার্সিংহোমে ভর্তি এক রোগীর আত্মীয় শিশুটিকে নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। নার্সিংহোমের তরফে প্রণব মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিশুটিকে বাঁচানোর জন্যই সাত-পাঁচ না ভেবে ওই নিঃসন্তান দম্পতির হাতে তুলে দেওয়া হয়। এটি হয়তো ভুল হয়েছে। কিন্তু অন্য কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। টাকার বিনিময়েও তা করা হয়নি।’’ ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতিতে তাঁরা সতর্ক থাকবেন বলেও তিনি জানান।

চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির (সিডব্লিউসি) চেয়ারপার্সন শুভাশিস নন্দী বলেন, ‘‘শুধুমাত্র আবেগের বশে কেউ যেন অন্যের বাচ্চাকে কোনও জায়গা থেকে গ্রহণ না করেন। দত্তক নেওয়ার সরকারি ব্যবস্থা রয়েছে।’’

প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি গুড়াপের ওই নার্সিংহোম থেকে সদ্যোজাতের হাতবদলের বিষয়ে সূত্র মারফত খবর আসে চাইল্ড লাইনে। তারা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটিকে (সিডব্লিউসি) বিষয়টি জানায়। ওই দফতরের নির্দেশে জেলার শিশু সুরক্ষা ইউনিট তদন্তে নামে। অভিযোগের সারবত্তা প্রমাণিত হয়। জানা যায়, শিশুটির জন্ম মাসখানেক আগে। ওই নার্সিংহোমের তরফে গত ৩১ অক্টোবর পান্ডুয়ার বাসিন্দা নিঃসন্তান এক দম্পতির হাতে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়েছে। ওই দম্পতিকে খুঁজে বের করা হয়। দিন কয়েক আগে তাঁরা শিশুটিকে নিয়ে ওই সিডব্লিউসি-তে আসেন।

ওই কমিটি জানায়, শিশুটির ব্যাপারে উপযুক্ত প্রমাণ দাখিল করতে পারেননি ওই দম্পতি। কেবলমাত্র জন্মের শংসাপত্রের একটি ফটোকপি জমা দেওয়া হয়। তবে, যে ভাবে সেটি লেখা, তা যথাযথ নয়। শিশুটিকে যে নার্সিংহোম থেকে পেয়েছেন, তা দম্পতি স্বীকার করেন। এ-ও জানান, নার্সিংহোমের এক কর্মীর মাধ্যমে তাঁদের সঙ্গে সেখানকার সংশ্লিষ্ট লোকজনের যোগাযোগ হয়েছিল। তবে, নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ কোনও টাকা নেননি।

এই ভাবে যে অন্যের শিশুকে নেওয়া যায় না, সে ব্যাপারে ওই দম্পতি বোঝান সিডব্লিউসি-র সদস্যেরা। শিশুটিকে বিশেষ হোমে পাঠানো হয়। বিষয়টিতে নার্সিংহোমের ভূমিকা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানিয়ে সিডব্লিউসি-র তরফে জেলার মুখ্য স্বাস্ব্য আধিকারিকের (সিএমওএইচ) দফতরে ই-মেল করা হয়েছে। সোমবার সেই ই-মেলের প্রাপ্তি স্বীকার করেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।

অন্য বিষয়গুলি:

Scam Child Exchange Nursing Home
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE