বেহাল: নতুন সেতু তৈরি হলে ভেঙে ফেলা হবে পুরনো এই বিদ্যাসাগর সেতু। নিজস্ব চিত্র
দামোদর নদের উপরে হুগলির চাঁপাডাঙায় বিদ্যাসাগর সেতুর অবস্থা বেহাল। তার পরিবর্তে পাশেই তৈরি হবে নতুন সেতু। এর পাশাপাশি, চাঁপডাঙ্গা থেকে আরামবাগ পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার অংশে রাস্তা সম্প্রসারিত করে চার লেন করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ওই কাজ করবে রাজ্য সরকারের হাইওয়ে কর্পোরেশন ডিভিশন। পুরো কাজে খরচ হবে ৪২৭ কোটি টাকা।
ওই সেতু এবং রাস্তার বিষয়ে প্রশাসনিক পদক্ষেপের খুঁটিনাটি আলোচনা নিয়ে করতে হুগলির জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বুধবার আরামবাগ ও চন্দননগরের মহকুমাশাসক এবং সংশ্লিষ্ট বিডিও-দের সঙ্গে বৈঠক করেন। তারকেশ্বরে ওই বৈঠকের পরে জেলাশাসক বলেন, ‘‘রাজ্য হাইওয়ে কর্পোরেশন নতুন সেতু তৈরি করবে। ওই কাজে যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থা কোনও সমস্যায় না পড়ে, প্রশাসনের তরফে সেটা দেখার দায়িত্ব আমাদের। সেই সংক্রান্ত পদক্ষেপের বিষয়ে রূপরেখা চূড়ান্ত করতেই প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সব বিভাগের অফিসারদের নিয়ে বৈঠক করা হল।’’
তারকেশ্বর থেকে জয়কৃষ্ণপুর বাজার হয়ে দামোদর নদের ওই সেতু দিয়েই বিভিন্ন রুটের বাস যায় আরামবাগ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায়। আরামবাগের উপর দিয়ে চণ্ডীতলা, ডানকুনি হয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন রুটে কলকাতাগামী বাসও এই সেতুর উপর দিয়ে যায়। ফলে, শুধু আরামবাগ নয়, বাঁকুড়া, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়ার ক্ষেত্রেও সড়ক পথে কলকাতার সঙ্গে যোগসূত্র চাঁপাডাঙার এই সেতু। এ হেন গুরুত্বপূর্ণ সেতুটির একাংশ মাস ছয়েক আগে বসে যায়। তখন ওই সেতুর উপর দিয়ে যান চলাচল সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। বিষয়টি প্রশাসনের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মেরামতির পরে সেতুটি ফের খুলে দেওয়া হলেও অবস্থা বুঝে পূর্ত দফতরের পদস্থ কর্তারা নতুন সেতু তৈরির প্রস্তাব দেন রাজ্য সরকারকে। এর পরেই চটজলদি নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ। কাজের সময়সীমা ধরা হয়েছে ৩০ মাস।
রাজ্য হাইওয়ে কর্পোরেশনের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘দু’টি পর্যায়ে কাজ হবে। প্রথম পর্যায়ে সেতু-সহ রাস্তা সম্প্রসারণ করা হবে। কাজ চলাকালীন পুরনো সেতু দিয়েই গাড়ি চলবে। নতুন সেতু চালু হলে পুরনোটি ভেঙে ফেলা হবে।’’
প্রশাসন সূত্রের খবর, রাস্তা সম্প্রসারণ করতে হলে পূর্ত দফতরের জমির উপরে বেশ কিছু দখলদারকে সরাতে হবে। ওই রাস্তার উপর যে সব বেআইনি নির্মাণ ও দোকানঘর রয়েছে, পূর্ত দফতর তাদের মালিকদের সঙ্গে কথা বলবে। ইতিমধ্যেই প্রায় আড়াইশো জনকে নোটিস ধরানো হয়েছে পুর্ত দফতরের জায়গা ছেড়ে দেওয়ার জন্য। এই পরিস্থিতিতে প্রমাদ গুনছেন ব্যবসায়ীদের একাংশ। চাঁপাডাঙা-সহ বেশ কিছু জায়গায় বেআইনি নির্মাণ করে ব্যবসা ফেঁদে বসেছেন অনেকে। চাঁপাডাঙা এবং তালপুর ব্যবসায়ী সমিতির তরফে জেলাশাসককে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এই বিষয়ে হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ব্যবসায়ীদের উপরে সহানুভূতিশীল। সম্প্রতি চণ্ডীতলার কালীপুরে সরস্বতী নদীর উপরে সেতু তৈরির কাজে আলোচনা করেই সমস্যা মেটানো হয়েছে। কিন্তু যাঁরা পূর্ত দফতরের জমি দখল করে ব্যবসা করছেন, তাঁদের নিয়েই সমস্যা। বেআইনি নির্মাণের ক্ষেত্রে তো রাজ্য সরকার তো কোনও সরকারি সুযোগ-সুবিধা দিতে পারে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy