প্রতীকী ছবি।
স্থায়ী শ্রমিকদের বেতন হওযার কথা ছিল সোমবার। কিন্তু সে দিন সকালে এসে তাঁরা দেখলেন, কারখানার গেটে তালা ঝুলছে। হাওড়ার সাঁকরাইলের আলমপুরের ওই কেবল কারখানা বন্ধ হওয়ায় পুজোর মুখে বেকায়দায় পড়লেন এখানকার শ’চারেক শ্রমিক।
কারখানাটি চার দশকের পুরনো। এখানে তৈরি কেবল সরবরাহ করা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী বিভিন্ন সংস্থায়। বর্তমানে এখানে ৮০ জন স্থায়ী এবং ৩২০ জন ঠিকাশ্রমিক আছেন। কারখানা সূত্রের খবর, কয়েক বছর ধরেই কারখানাটি বেহাল। রবিবার রাতে দেওয়া ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর বিজ্ঞপ্তিতে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, ক্রমাগত লোকসান সামলাতে না পেরেই এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। শ্রমিকদের অবশ্য দাবি, এই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কোনও চেষ্টাই করেননি মালিকপক্ষ। হঠাৎ করে কারখানা বন্ধ করে দেওয়া হবে, তাঁরা ভাবতে পারেননি। অবিলম্বে কারখানা খোলা এবং বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা কারখানার সামনে জড়ো হন। কর্তৃপক্ষের তরফে কেউ অবশ্য আসেননি।
কারখানার দু’জন মালিক। একজন বিনোদ গুপ্ত। অপর জন জ্যোতি গুপ্ত। বিনোদবাবুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি এ বিষয়ে কোনও
মন্তব্য করব না।’’
কারখানা সূত্রের খবর, এখানে তৈরি কেবলের চাহিদা থাকলেও কয়েক বছর ধরে উৎপাদন কমছিল। চাহিদা অনুযায়ী জোগান দেওয়া যাচ্ছিল না। ফলে, লোকসান বাড়তে থাকে। শ্রমিক কমিয়েও লাভের মুখ দেখা যাচ্ছিল না। শ্রমিকদের বেতন অনিয়মিত হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এমন হয় যে, স্থায়ী কর্মীদের বেতন দু’টি কিস্তিতে দিতে হয়েছে। কখনও তা দিতে নির্ধারিত তারিখ পেরিয়ে গিয়েছে। অস্থায়ী শ্রমিকদের দু’মাসের বেতন বকেয়া। অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকরা অবসরকালীন পাওনা ঠিকমতো পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ। ঋণ শোধের জন্য ব্যাঙ্কের তরফে তাগাদার চিঠি আসছে। তবে প্রতিকূল পরিস্থিতি সত্ত্বেও আগে কোনও দিন কারখানা বন্ধ হয়নি বলে শ্রমিকেরা জানান।
কারখানার আইএনটিইউসি নেতৃত্ব পরিস্থিতির জন্য মালিক পক্ষকেই দুষছেন। সংগঠনের সম্পাদক মনোজ কোলে বলেন, ‘‘আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সব রকম সহযোগিতা করেছি। কিস্তিতে বা নির্ধারিত তারিখের পরে বেতন মেনে নিয়েছি। কেবলের চাহিদা থাকায় আমরা চেয়েছিলাম কর্তৃপক্ষ পুঁজি ঢালুন। কোনও পরামর্শেই মালিকপক্ষ কান দেননি।’’
মনোজবাবু জানান, ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর সিদ্ধান্ত মালিকপক্ষের তরফে রবিবার রাতে তাঁদের জানানো হয়েছিল। তাঁরা কর্তৃপক্ষকে বলেন, পুজোর মুখে যেন এই সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ কর্ণপাত করেননি। তিনি বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে ফের মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা বলব। তার পরেও কারখানা খোলা না হলে শ্রম দফতরের দ্বারস্থ হব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy