Advertisement
১১ জানুয়ারি ২০২৫

গোঘাটে দিঘির পাড় দখল নিয়ে সংঘর্ষে আহত ২৮

দিঘির পাড় দখল করাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে গোঘাটের ধুলেপুর এবং শ্যামবাটি গ্রামের মধ্যে। শনিবার সকালের এই ঘটনায় দু’পক্ষের মোট ২৮ জন আহত হন। গোলমাল থামাতে গেলে শ্যামবাটি গ্রামের বাসিন্দা তথা গোঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মৃণাল আলুকে ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৭ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৪
Share: Save:

দিঘির পাড় দখল করাকে কেন্দ্র করে মারামারি হয়েছে গোঘাটের ধুলেপুর এবং শ্যামবাটি গ্রামের মধ্যে। শনিবার সকালের এই ঘটনায় দু’পক্ষের মোট ২৮ জন আহত হন। গোলমাল থামাতে গেলে শ্যামবাটি গ্রামের বাসিন্দা তথা গোঘাট ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের মৃণাল আলুকে ফেলে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয় বলে অভিযোগ। মৃণালবাবু-সহ দু’পক্ষের মোট ১৩ জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় আরামবাগ হাসাপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। পুলিশ জানায়, দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে। ঘটনাস্থলে যান গোঘাটের বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘দিঘির বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন। তার মধ্যেই যাঁরা অশান্তি বাঁধালেন, তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গোঘাট ১ ব্লকের কুমুড়শা পঞ্চায়েতের ধুলেপুর মৌজায় ৩ একর ৫৬ শতক জায়গা জুড়ে রয়েছে ‘বিলাত দিঘিটি’। এটি প্রায় দেড়শো বছরের। দিঘি লাগোয়া ধুলেপুর ও শ্যামবাটি গ্রামের মানুষদের দাবি, দিঘিটি তাঁদের গ্রামের দেবতার সম্পত্তি হিসেবে রেকর্ডভুক্ত। ধুলেপুরর মানুষের কাছে দিঘিটি যেমন শান্তিনাথের দেবোত্তর সম্পত্তি, তেমনি শ্যামবাটি গ্রামের মানুষের কাছে তা শীতলনারায়ণের দেবোত্তর সম্পত্তি। দুই গ্রামের সেবাইত তথা শরিকদের কাছে দিঘিটির মালিকানা নিয়ে ১৯০০ সাল থেকে মামলা এবং পাল্টা মামলা চলছে। এই মামলার মাঝেই দুই গ্রামের শরিকেরা দিঘির দখলদারি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন। কখনও পাড়ে গাছ লাগানো বা অন্যভাবে ব্যবহারকে কেন্দ্র করে। আবার কখনও মাছ চাষ করাকে কেন্দ্র করেও সংঘর্ষ হয়েছে। ১৯৩৪ সাল নাগাদ দিঘিটি ধুলেপুর গ্রামের শান্তিনাথের পক্ষে রায় হয়। শেষবার ২০০৬ সালে শ্যামবাটি গ্রামের সেবাইতরা কিছু পুরনো রেকর্ড জোগাড় করে দিঘিটি নিজেদের গ্রামের দেবতার দাবি করে ফের মামলা দায়ের করেন। সেই মামলাটি এখনও চলছে।

এ দিন শ্যামবাটি গ্রামের শরিকেরা দিঘির পশ্চিমপাড়ে ধানের গাদা করে খামার করতে এলে ঝামেলার সূত্রপাত হয়। সকাল ৯টা নাগাদ তা দেখে ধুলেপাড়ার কয়েকজন এসে প্রতিবাদ করেন। অভিযোগ, তাঁদের শ্যামবাটি গ্রামের লোকজন মারধর করে তাড়িয়ে দেন। তারপরেই ধুলেপুরের গ্রামের মহিলা-পুরুষ লাঠি-সোটা নিয়ে দিঘি সংলগ্ন শ্যামবাটি গ্রামে চড়াও হয়ে মারধর এবং ভাঙচুর করেন বলে পাল্টা অভিযোগ অভিযোগ ওঠে।

শ্যামবাটি গ্রামের সেবাইতদের মধ্যে নবরাম পালুইয়ের অভিযোগ, ‘‘দিঘির মালিকানা নিয়ে মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। তার আগেই ধুলেপুরের শরিকেরা জোর করে সেখানে মাছ চাষ করছেন। পশ্চিমপাড় দখল করে গাছ লাগাচ্ছেন। প্রতিবাদ করলে বাড়িতে চড়াও হয়ে মারধর করা হচ্ছে। এ বার আমরাও তাই দিঘির পশ্চিমপাড়ে ধানের গাদা করে খামার করেছিলাম। তাতেই ওঁরা লাঠি রড নিয়ে হামলা চালালেন।’’ আর ধুলেপুর গ্রামের শরিকদের পক্ষে অরূপ রায় বলেন, ‘‘মামলায় হেরে গেলেও শ্যামবাটি গ্রামের মানুষেরা অন্যায়ভাবে দিঘিটি বারবার নিজেদের দখলে রাখতে চাইছেন। এ বার একটু বাড়াবাড়ি করায় প্রতিবাদ করা হয়েছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

8 injured clash bank of a pond
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy