প্রতীকী ছবি।
তৃণমূল-বিজেপি কর্মীদের হাতাহাতি ঘিরে বুধবার সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত উত্তপ্ত হল গোঘাটের দড়িনকুন্ডা এবং বকুলতলা এলাকা। অশান্তি থামাতে গিয়ে আক্রান্ত হয় পুলিশও। এমনকি দু’পক্ষ অভিযোগ জানাতে গিয়ে থানাতেও হাতাহাতি শুরু করে। ঘটনায় দুই পুলিশ কর্মী-সহ জখম হন ৬ জন।
আহতদের কামারপুকুর ব্লক হাসপাতাল এবং আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গ্রেফতার করা হয়েছে দড়িনকুন্ডা গ্রামের বিজেপি নেতা বিশ্বজিৎ মালিক এবং দলের সক্রিয় কর্মী পার্থ পালকে। পুলিশ জানায়, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার সূত্রপাত, বুধবার বিকালে। নকুন্ডা পঞ্চায়েত এলাকার বিভিন্ন গ্রামে গ্রামে বিজেপির পক্ষে আগামী ২১ তারিখে দলের রাজ্য নেতা জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার সমর্থনে মাইক প্রচার চলছিল। প্রচার সেরে সন্ধ্যায় গাড়ি নিয়ে দড়িনকুন্ডা গ্রামে নেতা-কর্মীরা ফেরার পথে গোলমাল বাধে। দড়িনকুন্ডা গ্রামের বিজেপি নেতা ধৃত বিশ্বজিৎ মালিকের অভিযোগ, “রাস্তায় আমাদর গাড়ি ঘিরে মারধর এবং প্রচার গাড়ি ভাঙচুর করে তৃণমূলের ছেলেরা। তাদের মারে পার্থ জখম হয়।”
অন্য দিকে তৃণমূলের পক্ষে স্থানীয় নেতা শেখ মনতাজুলের অভিযোগ, “বিজেপির ছেলেরাই প্রথম হামলা করেছে। গত জুলাই মাসে আমাদের সক্রিয় কর্মী লালাচাঁদ বাগকে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ ছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। সেই মামলা তুলে নিতে লালচাঁদের পরিবারের লোকদের চাপ দিচ্ছিল। এদিন লালাচাঁদের স্ত্রী রিনা মাঠে গরু চরিয়ে ফেরার সময় সেখানে তাকে মামলা তোলার জন্য খুনের হুমকি দেওয়া হয়।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই দুই ঘটনার পর দড়িনকুন্ডা গ্রামে দুই দলের নেতারা পৃথকভাবে থানায় অভিযোগ জানাতে আসেন রাতে। বিজেপির পক্ষে বিশ্বজিৎ মালিক, পার্থ পাল সহ দলের জনা পাঁচ ছেলে রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ থানায় পৌঁছে যান। আবার রাত ৯টা নাগাদ তৃণমূলের নেতারা নিহত লালচাঁদের স্ত্রী রিনাকে নিয়ে হাজির হন থানায়। অভিযোগ, থানা চত্বরেই তৃণমূলের দলবল বিজেপির লোকদের উপর চড়াও হয়ে মারধর শুরু করে। প্রহৃত বিজেপির ছেলেরা থানার কাছেই বকুলতলার নেতা-কর্মীদের খবর দিলে বিজেপির অনেকে মিলে জমায়েত হয়ে পাল্টা তৃণমূলের নেতা হামিদ আলিকে মারধর করে। সে সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পরে বিজেপির ছেলেরা থানা চত্বর থেকে বেরিয়ে বকুলতলায় দিকে যাওয়ার পথে ফের তৃণমূলের ছেলেরা হামলা করে বলে অভিযোগ। বিজেপির ছেলেরা ছত্রভঙ্গ হয়। বকুলতলায় বিজেপি নেতার শিশির রায়ের বাড়ি ভাঙচুর এবং কর্মী আদিত্য গোস্বামীকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। সেই সময় আদিত্যকে উদ্ধার করতে গেলে পুলিশের উপরও হামলা হয় বলে অভিযোগ। দুই পুলিশ কর্মী মুজিবর রহমান শেখ (এএসআই) এবং অমিত রায়(কনস্টেবল) জখম হন। আহত পুলিশ কর্মীদের বৃহস্পতিবার কামারপুকুর ব্লক হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও বিজেপির আদিত্য গোস্বামী এবং তৃণমূলের হামিদ আলিকে আরামবাগ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদারের অভিযোগ, “বিজেপির যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারাই থানায় পুলিশের সামনে বসে অভিযোগ দায়ের করছিল। তাদের গ্রেফতার করতে বলেছিলাম। তা না করাতেই ওরা আমাদের মারধর করল। বকুলতলায় মোটরবাইক নেওয়ার সময়ও আমাদের ছেলেদের মারধর করা হয়েছে। পুরো ঘটনার জন্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তাই দায়ী।”
বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি বিমান ঘোষ বলেন, “গোঘাট বিধায়ক দাঁড়িয়ে থেকে ওই হিংসার মদত দিয়েছেন। পুলিশ নিষ্কিয় তো বটেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy