উদাসীন: মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে নিয়ে বিনা হেলমেটে বাইকে সওয়ার বাবা-মা। ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা। হঁশ নেই কারও। ছবি: সুশান্ত সরকার
গতবার প্রাণহানিতেও হুঁশ ফেরেনি! এ বার মাধ্যমিকের প্রথম দিনেই হুগলিতে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় জখম হল দুই পরীক্ষার্থী-সহ চার জন।
সোমবার পরীক্ষা সেরে বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ তারকেশ্বরের কেশবচকের দুই পরীক্ষার্থী মোটরবাইকে চেপে ফিরছিল। পুলিশ জানায়, একই বাইকে দুই উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীও ছিল। চাঁপাডাঙার নোড়তলা এলাকায় অহল্যাবাঈ রোডে বাইকটির সঙ্গে তারকেশ্বর-বাঁকুড়া রুটের একটি বাসের সংঘর্ষ হয়। তাতে বাইকে সওয়ার চার জনই ছিটকে পড়ে আহত হয়। অনিরুদ্ধ ধাড়া এবং বিপ্রজিৎ জানা নামে ওই দুই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী-সহ চার জনকেই তারকেশ্বর গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। পরীক্ষাকেন্দ্রে যেতে না পারলে ওই পরীক্ষার্থীদের হাসপাতালেই পরের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ দিন জেলার পান্ডুয়া, মগরা, বলাগড়, তারকেশ্বর-সহ নানা জায়গায় হেলমেট না-পরে মোটরবাইকে ঝড় তুলে পরীক্ষা দিতে যেতে দেখা গিয়েছে কিছু পরীক্ষার্থীকে। সকাল পৌনে ১১টা নাগাদ মহানাদ মোড়ে পান্ডুয়া-পোলবা রাস্তায় দেখা গেল, অন্তত ৪-৫ জন কিশোর বাইক চালিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে গেল। বেলা ৩টের পরে আত্তি মোড়ে একই দৃশ্য। মগরা ব্রিজের কাছে, কোরলায় অসম লিঙ্ক রোডেও ছবিটা একই ছিল। কোথাও আবার স্ত্রী-ছেলের মাঝে মেয়েকে বাইকে বসিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দিয়েছেন বাবা। পরীক্ষা শেষেও একই দৃশ্য। এই ভাবেই কার্যত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার প্রথম দিনটা শেষ করেছে অনেকে। গত বছরের ২ মার্চ, মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষ দিন পান্ডুয়ায় এক কিশোর দুই সহপাঠী ছাত্রীকে মোটরবাইকে চাপিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে যাচ্ছিল। আত্তি মোড়ে জিটি রোডে বাইকটির সঙ্গে একটি ট্রাকের সংঘর্ষে তিন জনই মারা যায়। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। তার পরেও এ বার হুঁশ ফিরল না।
হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্কুলের সামনে পুলিশকর্মীরা অভিভাবকদের সচেতন করছেন, যাতে তাঁরা ছেলেমেয়েদের হাতে বাইক না দেন। নিজেরা বাইকে পৌঁছে দিলেও যেন চালক-আরোহী সকলের মাথাতেই হেলমেট থাকে।’’
পান্ডুয়া থানা সূত্রের দাবি, তিন্না মোড়ে জিটি রোডে হেলমেটবিহীন পরীক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের গাড়ি থামিয়ে সতর্ক করা হয়। তিন্নার বাসিন্দা এক ছাত্রকে তাঁর বাবা পৌঁছে দেন। কারও মাথাতেই হেলমেট ছিল না। ছেলেটির কথায়, ‘‘কাছেই স্কুল। তাই হেলমেট পরিনি।’’ পান্ডুয়ার তেতের পাড়ের এক ব্যক্তির মাথায় হেলমেট থাকলেও তাঁর পরীক্ষার্থী মেয়ের মাথায় ছিল না। তিনি বললেন, ‘‘পরের দিন থেকে ভুল করব না।’’
পান্ডুয়ার রানাগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল বারি বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে পরীক্ষার্থীদের অভিভাবকদের ডেকে বলে দেওয়া হয়, কেউ যাতে ছেলেদের হাতে বাইক না দেন। বাইকে পৌঁছে দিলে নিজেরা এবং ছেলেমেয়েরা সবাই যেন হেলমেট পরেন।’’
মাধ্যমিকের পরের দিনগুলিতে পরীক্ষার্থীদের মাথায় হেলমেট থাকবে তো? প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy