Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Arrest

ব্যাঙ্ক লুটে গ্রেফতার জেল পালানো আসামি-সহ ৪

শুক্রবারের ওই ব্যাঙ্ক ডাকাতির তদন্তে নেমে চার জনকে গ্রেফতারের পরে এমনই দাবি চন্দননগর কমিশনারেটের।

গ্রেফতার চার দুষ্কৃতী। উদ্ধার হওয়া টাকা এবং আগ্নেয়াস্ত্র (ইনসেটে)। শনিবার চুঁচুড়ায়। ছবি: তাপস ঘোষ

গ্রেফতার চার দুষ্কৃতী। উদ্ধার হওয়া টাকা এবং আগ্নেয়াস্ত্র (ইনসেটে)। শনিবার চুঁচুড়ায়। ছবি: তাপস ঘোষ

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২০ ০৩:৫৪
Share: Save:

উত্তরপাড়ার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক লুটের ঘটনার মূল চক্রী ওড়িশার জেল থেকে পালানো এ রাজ্যের এক দুষ্কৃতী!

শুক্রবারের ওই ব্যাঙ্ক ডাকাতির তদন্তে নেমে চার জনকে গ্রেফতারের পরে এমনই দাবি চন্দননগর কমিশনারেটের। ওই রাতেই উত্তরপাড়ার ভদ্রকালী খেয়াঘাটের কাছে একটি মলের পিছনের নির্জন ডেরায় তিন দুষ্কৃতী লুটের টাকার ভাগ করছে, এই খবর পেয়ে হানা দেয় পুলিশ। হাতেনাতে ধরা পড়ে সঞ্জয় পাসোয়ান ওরফে ছোটু, তাপস দাস ওরফে গোপাল এবং সঞ্জীব পাসোয়ান ওরফে সঞ্জু নামে তিন দুষ্কৃতী। তারা উত্তরপাড়ারই বাসিন্দা। তাদের জেরা করে চতুর্থ জনের নাম জানতে পেরে তদন্তকারীর প্রথমে কিছুটা অবাক হয়ে যান। কারণ, প্রীতম ঘোষ নামে ওই দাগি দুষ্কৃতীকে বেশ কয়েক বছর ধরে পুলিশ খুঁজছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের কাছ থেকে লুটের প্রায় ১৮ লক্ষ টাকার মধ্যে ১০ লক্ষ ৮ হাজার ৩৫০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়াও তাদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। হুগলি ছাড়াও হাওড়া এবং দুই ২৪ পরগনায় বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্ক এবং পেট্রোল পাম্পে ডাকাতির ঘটনায় প্রীতম অভিযুক্ত। এমনকি, ২০১৪ সালে ওড়িশাতেও একটি পাম্প ডাকাতির ঘটনাতে সে অভিযুক্ত। ধরা পড়ে সেখানে তাকে হাজতবাস করতে হলেও সে জেল থেকে পালায়। তারপর তার আর কোনও খোঁজ মেলেনি।

তদন্তকারীদের দাবি, প্রীতমের সঙ্গে বাকি তিন জনের পূর্ব পরিচয় ছিল। জেরায় প্রীতম জানিয়েছে, ওড়িশায় জেল থেকে পালানোর পরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সে নাম ভাঁড়িয়ে লুকিয়ে ছিল। গত বৃহস্পতিবার সে বিহার থেকে সাইকেল চালিয়ে উত্তরপাড়ায় পৌঁছয়। ফিরেই ডাকাতির ছক কষে।

শুক্রবার রাতে ভদ্রকালী খেয়াঘাটের কাছে পুলিশ পৌঁছনোর আগেই নিজের টাকার ভাগ নিয়ে প্রীতম এক শাগরেদের মোটরবাইকে উত্তরপাড়া ছেড়ে চম্পট দেয়। পরে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর থেকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। সেখানে তার শ্বশুরবাড়ি। বহু বছর আগে রবীন্দ্রনগরেই ভাড়া থাকত প্রীতম।

চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘লুটের বাকি টাকা উদ্ধারের চেষ্টা হচ্ছে। আগ্নেয়াস্ত্রটি প্রীতমের থেকে পাওয়া গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া বাইকেই ওরা ডাকাতি করতে গিয়েছিল। বাইকটি প্রীতমের এক পরিচিতের। লুট করে পালানোর সময়ে একটি টাকার বান্ডিল পড়ে গিয়েছিল বলে শোনা যাচ্ছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনার আর কেউ যুক্ত কিনা, তা-ও জানার চেষ্টা চলছে।’’

একটি বাইকে চড়ে এসে চার দুষ্কৃতী শুক্রবার দুপুরে উত্তরপাড়ার ওই ব্যাঙ্কে আসে। একজন বাইরে পাহারায় তাকে। বাকি তিন জন গ্রাহক সেজে ঢোকে। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তারা ব্যাঙ্ককর্মী ও গ্রাহকদের একটি ঘরে আটকে রেখে লুটপাট চালায়। ব্যাঙ্কের ভল্ট খুলে টাকা হাতিয়ে চম্পট দেয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও সহযোগিতা করে।

ওই ব্যাঙ্কের সিনিয়র ম্যানেজার অনুপ কুণ্ডু জানান, লকডাউনের জেরে বেশ কিছুদিন ধরেই ব্যাঙ্ককর্মীদের উপস্থিতি অনিয়মিত হয়ে পড়েছিল। তার মধ্যেই নিরাপত্তারক্ষী না-আসার সুযোগ নিয়েই দুষ্কৃতীরা ওই ঘটনা ঘটিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Arrest Dacoity Bank Loot
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy