Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪
হাওড়া তৃণমূলে ফাটল চওড়া হল, অভিমত
Get Together

‘গেট টুগেদার’-এ ব্রাত্য ৩ বিধায়ক

রবিবার দুপুরে ওই ‘গেট টুগেদার’-এর আয়োজন হয় সাঁতরাগাছির একটি রিসর্টে।

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ০৬:০৮
Share: Save:

হাওড়া জেলার তৃণমূল বিধায়কদের ‘গেট টুগেদার’ হয়ে গেল রবিবার। ডাক পেলেন না তিন জন। বালির বৈশালী ডালমিয়া, ডোমজুড়ের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং উত্তর হাওড়ার লক্ষ্মীরতন শুক্ল। যে ঘটনায় বিধানসভা ভোটের মুখে হাওড়ায় দলের ফাটল আরও চওড়া হল বলেই মনে করছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একটা বড় অংশ।

রবিবার দুপুরে ওই ‘গেট টুগেদার’-এর আয়োজন হয় সাঁতরাগাছির একটি রিসর্টে। উদ্যোক্তা ছিলেন মূলত জেলা সদর তৃণমূলের চেয়ারম্যান তথা রাজ্যের সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায়। জেলায় মোট ১৬টি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। তার মধ্যে আমতা বাদ দিয়ে বাকি ১৫টিই রয়েছে তৃণমূলেরই দখলে। ওই অনৃষ্ঠানে ওই তিন জনকে বাদ দিয়ে গ্রামীণ ও সদর মিলিয়ে বাকি বিধায়কদের সবাইকেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল বলে দলীয় সূত্রের খবর।

খাওয়া-দাওয়া তো ছিলই। তার সঙ্গে ছিল রাজনৈতিক বক্তৃতা। আমন্ত্রিত বিধায়কদের সিংহভাগই হাজির ছিলেন। যাঁরা আসেননি তাঁরা ব্যক্তিগত কারণ দেখান। অনেকে নিজের কেন্দ্রে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে থাকতে হবে বলে আসতে পারেননি বলে জানান। বক্তৃতায় সবাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেন। শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে তাঁরা জানিয়ে দেন কোনও ‘দাদার আনুগত্য’ তাঁরা মানবেন না।

কিন্তু কেন ডাকা হল না তিন জনকে?

অরূপের দাবি, ‘‘অনেক দিন ধরেই ভাবছিলাম, বিধায়করা একসঙ্গে বসে একটু আড্ডা দেব। সবাইকে ডাকার সিদ্ধান্ত হয়নি। ঠিক হয়েছিল, শুরুর দিন থেকে যাঁরা তৃণমূল করছেন, তাঁদেরই ডাকা হবে। আমি সদরের বিধায়কদের আমন্ত্রণ করি। গ্রামীণ এলাকার বিধায়কদের আমন্ত্রণ করার দায়িত্ব দেওয়া হয় উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজাকে।’’

অরূপের দাবি শুনে রাজীব ও বৈশালী কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। রাজীব বলেন, ‘‘এমন অনেক বিধায়ককে ডাকা হয়েছিল, যাঁরা ১৯৯৮ সালে কোন দলে ছিলেন, তা সবাই জানেন। অরূপবাবুর বিবেক যা চেয়েছে, তাই তিনি করেছেন। হাওড়ার মানুষ সব দেখছেন। সবই বুঝছেন। কী আর বলব।’’

বৈশালীদেবী বলেন, ‘‘গেট টুগেদারের যিনি আয়োজক, তিনিই বলতে পারবেন কেন আমাদের ডাকা হয়নি। তবে এ ভাবে দলের মধ্যে বিভাজন আরও বাড়ানো হচ্ছে। অনেকেই যে দলের কাজকর্ম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ্যে আনছেন তা তো আর এমনি এমনি নয়। যথেষ্ট কারণ আছে।’’ লক্ষ্মীরতন বিশেষ মন্তব্য করতে চাননি। শুধু জানান, বিযয়টিকে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

রাজীব-অরূপের ঠান্ডা লড়াই জেলা তৃণমূলে নতুন নয়। রাজীবের ক্ষোভ নিরসন করতে তাঁর সঙ্গে রবিবারই দলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর বৈঠকে বসেছিলেন। কাকতালীয় ভাবে এ দিনই অরূপের উদ্যোগে ওই অনুষ্ঠান হল।

জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের একটা বড় অংশের মত হল, দুই নেতার ফাটল মেটা তো দূরের কথা, তা যে ক্রমশ চওড়া হচ্ছে তার প্রমাণ এই অনুষ্ঠান। যদিও অরূপের দাবি, ‘‘দলে কো‌নও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। এই গেট টুগেদারের সঙ্গে রাজনীতিরও কোনও সম্পর্ক নেই। নিছক আড্ডা।’’

বৈঠকে যে সব বিধায়ক হাজির ছিলেন, তাঁদেরও একই দাবি, এর সঙ্গে জেলায় কোনও বিশেষ নেতার প্রতি আনুগত্যের প্রমাণ দেওয়া বা কারও প্রতি অনাস্থা প্রকাশের সম্পর্ক নেই। নিছক আড্ডার মেজাজেই তাঁরা ‘গেট টুগেদারে’ গিয়েছিলেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Get Together TMC MLA
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy