দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়িটি সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ।
ফের ‘লেন’ ভেঙে ঢুকে আসা একটি লরির সঙ্গে সব্জি বোঝাই পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে মৃত্যু হল দু’জনের। আহত হলেন ৮ জন।
সোমবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে সিঙ্গুরের রতনপুরের কাছে। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন বসন্ত ভৌমিক (৪৪) এবং শেখ সুজাত আলি হোসেন (৪২)। দু’জনেই সব্জি ব্যবসায়ী। বসন্তবাবু হরিপালের মহিষটিকরির বাসিন্দা ছিলেন। সুজাত আলির বাড়ি দাদপুরের সেকেন্দারপুরে। তাঁরা ওই পিকআপ ভ্যানেই ছিলেন। দুর্ঘটনার পরে দু’টি গাড়িই রাস্তা থেকে ছিটকে পাশের শুকিয়ে যাওয়া নয়ানজুলিতে গিয়ে পড়ে। জেলা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জখমদের অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল হলেই তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সপ্তাহ দুয়েক আগে মুর্শিদাবাদের দলীয় কর্মিসভা থেকে ফেরার পথে সিঙ্গুরে এই দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়েতে যে জায়গায় তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন, এ দিনের দুর্ঘটনাটি হয় তার এক কিলোমিটারের মধ্যেই। তবে, সেই দুর্ঘটনা ‘লেন’ ভাঙার কারণে না হলেও গত কয়েক বছরে এ দিনের মতোই দুর্ঘটনায় একাধিক প্রাণহানি হয়েছে। তবু, লরি-ট্রাকের ‘লেন’ ভাঙা বন্ধ হয়নি।
এ দিন দুপুর ১২টা নাগাদ খালি লরিটি ওই সড়কের বর্ধমানমুখী ‘লেন’ ধরে দ্রুত গতিতে যেতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টো দিকের কলকাতামুখী ‘লেনে’ ঢুকে পড়ে। সেই ‘লেন’ ধরে তখন কয়েক জন সব্জি ব্যবসায়ীকে নিয়ে পিকআপ ভ্যানটি হাওড়ার ধুলাগড়ে যাচ্ছিল। লরিটি সরাসরি ভ্যানটিকে ধাক্কা মারে। ভ্যানটির সামনের দিক পুরো দুমড়ে যায়। সংঘর্ষের বিকট আওয়াজে স্থানীয়েরা সঙ্গে সঙ্গেই চলে এসে উদ্ধারকাজে হাত লাগান। ঘটনাস্থলেই মারা যান বসন্তবাবু এবং সুজাত আলি। দুই গাড়ির চালক-সহ জখম আট জনকে প্রথমে সিঙ্গুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় পরে তাঁদের মধ্যে চার জনকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে এবং এক জনকে কলকাতার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। এই দুর্ঘটনার জেরে ওই সড়কের কলকাতামুখী ‘লেনে’ যান চলাচল বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে।
আহতকে পাঠানো হচ্ছে হাসপাতালে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বাশার আলি বলেন, ‘‘লরিটি দ্রুত গতিতে আসছিল। হঠাৎই দু’টি লেনের মাঝের নিচু অংশ পার হয়ে উল্টো দিকে চলে যায় লরিটি। তাতেই দুর্ঘটনা।’’ আহতদের মধ্যে স্বপন পাকিরা বলেন, ‘‘আমাদের পিকআপ ভ্যানটি আস্তেই চলছিল। লরিটার জন্যই দুর্ঘটনা হল।’’
তবে, সিঙ্গুর এবং সংলগ্ন এলাকায় ওই সড়কে বারবার দুর্ঘটনার পিছনে অন্য কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়েরা। তাঁদের মতে, দিনের বেলায় কলকাতায় ভিন্ রাজ্যের মালবাহী লরি-ট্রাক ঢোকা নিষেধ। তাই এতদিন ডানকুনি টোলপ্লাজার কাছে ওই সড়কের দু’ধারে লরি-ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকত। কিন্তু ডানকুনিতে বারবার দুর্ঘটনা ঘটায় সমালোচনার মুখে পড়ে পুলিশ সেখানে আর লরি-ট্রাক দাঁড়াতে দিচ্ছে না। কিন্তু সিঙ্গুরে তা ঠেকানো যায়নি। আর সেই কারণেও সিঙ্গুর এবং সংলগ্ন এলাকার ওই সড়কে বারবার দুর্ঘটনা ঘটছে।
সোমবার রতনপুর ছবি তুলেছেন দীপঙ্কর দে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy