Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
100 Days Work

আমপানে গতি এল ১০০ দিনের কাজে

বছর দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ওই প্রকল্পে কঠোর ভাবে স্থায়ী সম্পদ তৈরি করতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করে।

ভদ্রেশ্বরের বিঘাটি পঞ্চায়েতের পালাড়ায় মজে যাওয়া পুকুর সংস্কারের কাজ চলছে। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ

ভদ্রেশ্বরের বিঘাটি পঞ্চায়েতের পালাড়ায় মজে যাওয়া পুকুর সংস্কারের কাজ চলছে। ছবি: কেদারনাথ ঘোষ

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০২০ ০৭:০৯
Share: Save:

আমপানে যা কিছু ক্ষতিগ্রস্ত, তা পুনর্গঠনে প্রশাসনের এখন বড় হাতিয়ার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্প। সে জন্য শিথিল হয়েছে নিয়ম। ফলে, যে কাজের ক্ষেত্র খুঁজতে পঞ্চায়েতগুলি আমপানের আগে হিমশিম খাচ্ছিল, এখন তা অনায়াসে মিলছে। বিশেষ করে স্বস্তি ফিরেছে হুগলি-সহ ঘূর্ণিঝড় কবলিত আট জেলার পঞ্চায়েত কর্তাদের।

বছর দুয়েক আগে কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর ওই প্রকল্পে কঠোর ভাবে স্থায়ী সম্পদ তৈরি করতে হবে বলে নির্দেশিকা জারি করে। ফলে, প্রকল্পের সূচনা থেকে টাকা খরচের অন্যতম মাধ্যম একই পুকুর বা খাল এবং মাটির রাস্তা বারবার সংস্কার-সহ কিছু কাজ করা নিষিদ্ধ হয়। গুরুত্ব দিতে বলা হয় নদী পুনরুজ্জীবন কাজ, জল সংরক্ষণ, প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ, বৃক্ষরোপণ, বৃক্ষপাট্টা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, উদ্যানপালন ইত্যাদি কাজে। কিন্তু ওই নির্দেশের ফলে কাজের ক্ষেত্র অনেক কমে গিয়েছে বলে হুগলির বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের কর্তাদের অভিযোগ ছিল।

করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের জেরে কিছুদিন বন্ধ ছিল ওই প্রকল্পের কাজ। পরে তা শুরু হলেও বেশি শ্রমিক লাগে এমন কাজে হাত দিতে পারছিল না পঞ্চায়েতগুলি। কারণ, দূরত্ব-বিধি মেনে সেই সব কাজ করাতে সমস্যায় পড়ছিল হুগলির বহু পঞ্চায়েত। এর মধ্যে আবার ফিরে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদের ওই প্রকল্পের কাজে লাগানো নিয়ে সরকারি নির্দেশে আতান্তরে পড়ে বহু পঞ্চায়েত। কারণ, কাজের ক্ষেত্র কম। সেখানে সকলকে কী ভাবে কাজ দেওয়া যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিল। সেই ছবিটাই বদলে দিল আমপান। ১০০ দিনের কাজে ওই ঘূর্ণিঝড় ‘পৌঁষ মাস’ এনে দিয়েছে বলে মনে করছেন হুগলি জেলা পঞ্চায়েত কর্তাদের একাংশ।

আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে হুগলির ১৮টি ব্লকই। অসংখ্যা গাছ এবং বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে গিয়েছে। পুকুর নষ্ট হয়েছে। দফারফা হয়েছে চাষের। নষ্ট হয়েছে চাষ, ঘরবাড়ি, স্কুল, প্রাণিসম্পদ-সহ আরও অনেক কিছু। এখন তারই পুনর্গঠন চলছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, এই পুনর্নির্মাণের কাজে কৃষি, কৃষিসেচ, সেচ, উদ্যানপালন, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং স্কুল শিক্ষাকেন্দ্র-সহ মোট ২৮টি ক্ষেত্রে কাজ করা যাবে। যে কাজগুলি অতীতে পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছিল এবং যে কাজগুলি একবার করলে তিন বছরের মধ্যে করা যাবে না বলে নির্দেশ ছিল, সেই সব কাজের ক্ষেত্রও খুলে দেওয়া হয়েছে।

১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে হুগলির নোডাল অফিসার অনির্বাণ বসু বলেন, “কাজের ক্ষেত্র অনেক খুলে গিয়েছে। আমপানে ক্ষয়ক্ষতি সংক্রান্ত ২৮টি ক্ষেত্রে কাজ করা যাবে বলে সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে। পঞ্চায়েতগুলির প্রকল্প তৈরি করতে আর সমস্যা হচ্ছে না। বহু শ্রমিককে কাজ দেওয়া যাচ্ছে।”

ইতিমধ্যে বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে মেলবন্ধনে প্রকল্প রূপায়ণের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। যেমন, পুকুর পাড় সংস্কার এবং মেরামতের জন্য জেলা মৎস্য দফতর থেকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা অবিলম্বে চিহ্নিত করে পাঠাতে বলা হয়েছে। একই ভাবে প্রাণিসম্পদ দফতরের পক্ষ থেকেও আমপানে বিধ্বস্ত জেলার মুরগি-সহ বিভিন্ন পশু-খামারের তালিকা চাওয়া হয়েছে। হুগলি জেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের এক কর্তা জানান, আপাতত ৩২২৭টি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে রিপোর্ট মিলেছে। জেলা মৎস্য আধিকারিক চিন্ময় চক্রবর্তী জানান, আমপানে জেলায় বেশ কিছু পুকুর পাড় ধসেছে। কিছু পুকুরের জল উপচে মাছ বেরিয়ে গিয়েছে। ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে ক্ষতিগ্রস্ত পুকুরের পাড় সংস্কার হবে। আপাতত ৭৫০০ ফুট পুকুর পাড় ক্ষতিগ্রস্ত বলে রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

100 Days Work Cyclone Amphan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy