Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
চাষে সাড়া মিলেছে ভালই

বর্ষার পেঁয়াজ চাষের বীজ আর বিনামূল্যে নয় চাষিদের

গত বছর চাষিদের উত্‌সাহিত করতে হুগলিতে বিনা পয়সায় দেওয়া হয়েছিল বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষের বীজ। এর ফলও মিলেছিল। ভাল লাভ পেয়েছিলেন জেলার চাষিরা। তবে এবছর আর বিনা পয়সায় বীজ পাচ্ছেন না চাষিরা। পেঁয়াজের বীজ পেতে চাষিদের কিলোপ্রতি ৫০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০১:৫৫
Share: Save:

গত বছর চাষিদের উত্‌সাহিত করতে হুগলিতে বিনা পয়সায় দেওয়া হয়েছিল বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষের বীজ। এর ফলও মিলেছিল। ভাল লাভ পেয়েছিলেন জেলার চাষিরা। তবে এবছর আর বিনা পয়সায় বীজ পাচ্ছেন না চাষিরা। পেঁয়াজের বীজ পেতে চাষিদের কিলোপ্রতি ৫০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে।

হুগলি উদ্যান পালন দফতর সূত্রের খবর, নাসিক থেকে আনা এগ্রিফাউন্ড ডার্ক রেড প্রজাতির ওই পেঁয়াজ বীজের দাম কিলো প্রতি ১২৫০ টাকা। এ জন্য চাষিদের কিলোপ্রতি ৫০০ টাকা করে দিলেও ৭৫০টাকা করে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। আরামবাগ মহকুমায় আরামবাগ ব্লকে ইতিমধ্যেই বীজ দেওয়া শুরু হয়েছে। জেলা উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু নন্দন বলেন, “হুগলি জেলার জন্য এ বছর ৬০০ কিলোগ্রাম বীজের কোটা পাওয়া গিয়েছে। ওই বীজে মোট ৬০০ বিঘায় চাষ করা যাবে। গত দু’বছর চাষিদের বিনা পয়সায় বীজ দেওয়ার পর এই প্রথম চাষিদের ভর্তুকিতে বীজ কিনতে হবে।” উদ্যান পালন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সালে পরীক্ষামূলকভাবে মাত্র ১৫ বিঘার মতো জমিতে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন হুগলি জেলার বলাগড়, পোলবা এবং চিনসুরা-মগরা ব্লকের কয়েক জন চাষি। তাতে ব্যাপক সাফল্য মেলায় গত বছর চাষের এলাকা বেড়ে প্রায় ১১০ হেক্টরে পৌঁছেছিল। এ বছর সেই এলাকা অবশ্য কমে দাঁড়িয়েছে ৬০০ বিঘায়।

কিন্তু বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষে সাফল্য মেলার পরও কেন কমে গেল চাষের এলাকা?

উদ্যান পালন দফতরের আধিকারিক দফতরের জেলা আধিকারিক জানান, এর আগে চাষিদের বিনামূল্যে বীজ সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু এ বার তাঁদের বীজ পেতে কিলোপ্রতি ৫০০ টাকা করে দিতে হচ্ছে। এই অবস্থায় দাম দিয়ে বীজ কিনে চাষ করতে চাষিরা কতটা উদ্যোগী হবেন সে কথা মাথায় রেখেই চাষের এলাকা কম রাখা হয়েছে। চাষিরা কেমন সাড়া দেন তা দেখে পরবর্তী সময়ে চাষের এলাকা বাড়ানো হবে।” দফতরের আশা বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষে সাফল্য ধরে রাখতে পারলে মহারাষ্ট্র থেকে পেঁয়াজ আমদানি কমে গিয়ে পেঁয়াজে স্বনির্ভর হতে পারবে রাজ্য। বর্ষায় সাধারণত পেঁয়াজের দাম থাকে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কিলো। স্থানীয়ভাবে উত্‌পাদন হলে দামও কমবে। যেখানে জমি উঁচু হওয়ার কারণে সেচের মাধ্যমে কষ্টেসৃষ্টে আমন ধান ফলান চাষিরা, অতিরিক্ত খরচ করে লাভ পান না এমনকী কেউ কেউ জমি ফেলেও রাখেন, সেই সব জমিতে বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষের প্রচলন করে বিকল্প চাষে চাষিদের উত্‌সাহিত করার লক্ষ্যে ২০১২ সাল থেকে প্রচার চালাচ্ছে উদ্যান পালন দফতর। প্রকল্পটি রাষ্টীয় কৃষি বিকাশ যোজনার অন্তর্গত।

পেঁয়াজের যে প্রজাতি চাষ করার সুপারিশ করা হয়েছে তার নাম এগ্রিফাউন্ড ডার্ক রেড। বীজ ফেলার সময় আষাঢ় থেকে শ্রাবণ মাসের প্রথম সপ্তাহ। চারার বয়স ৫ সপ্তাহ হলেই জমিতে বসানো যাবে। উঁচু বেলে দোয়াঁশ মাটি যুক্ত জমি এই চাষের জন্য সবচেয়ে ভাল। অন্য মাটি যুক্ত জমি হলে জল নিকাশি ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে হবে। ফসল তোলা যাবে ১২০ থেকে ১৩০ দিনের মাথায়।

বর্ষাকালীন পেঁয়াজ চাষে লাভ?

গত দু’বছরে বিনা পয়সায় বীজ পেয়ে চাষ করেছিলেন এমন চাষিদের বক্তব্য, যা লাভ হয়েছে তাতে তাঁরা খুশি। সেচের প্রয়োজনই হয়নি। এমনই একজন গোঘাটের সুবলচন্দ্র সাঁতরা বলেন, “গত বছর বর্ষায় ৬ কাঠা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলাম। কাঠাপিছু এক কুইন্টাল করে পেঁয়াজ পেয়েছিলাম। মোট খরচ হয়েছিল ৪ হাজার টাকা। গড়ে ১৬ টাকা কিলো দরে বিক্রি করে ৫ হাজার টাকার উপরে লাভ হয়েছিল।” জেলা উদ্যান পালন দফতরের হিসাবে, বিঘা পিছু ১০০ মণ-এরও (৪০ কেজিতে ১ মণ) বেশি ফলন পাওয়া যাবে। বিঘা পিছু খরচ প্রায় ২০ হাজার টাকা। মূল খরচ সার ও অনুখাদ্য প্রয়োগ, আগাছা ও রোগপোকা নিয়ন্ত্রণ এবং পেঁয়াজ রোপণ ও তোলার শ্রমিকের খরচ।

অন্য বিষয়গুলি:

onion seeds southbengal arambagh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy