শুধু রং নয়, চাহিদা মুখোশেরও। ছবি: সুব্রত জানা।
চাহিদা থাকলেও জোগান নেই ভেষজ রঙের। অগত্যা ফের রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত রঙের দিকেই মুখ ফেরাতে হচ্ছে ক্রেতাদের। আর একদিন পরেই বসন্ত উত্সব। অথচ বাজারে গিয়ে মনের মতো পরিবেশ ও স্বাস্থ্য সহায়ক ভেষজ রং না পেয়ে স্পষ্টতই হতাশ ক্রেতারা।
গত কয়েক বছর ধরেই রঙের বাজারে চাহিদা বেড়েছে ভেষজ আবিরের। যা মূলত বিভিন্ন ফুলের পাপড়ি থেকে তৈরি। কারণ অনেকে বলছেন, রাসায়নিক রং নিয়ে নানা অভিযোগ থাকে। তাতে ক্ষতি হয় স্বাস্থ্যের। তাই ক্ষতিকর রাসায়নিক রং বা আবিরের বদলে ভেষজ আবির দিয়ে দোল খেলার চল শুরু হয়েছিল বহু দিন আগেই। যদিও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেষজ আবির বৃহত্তর বাজার দখল করতে পারেনি। পাশাপাশি ভেষজ আবির নিয়ে তেমন প্রচারও ছিল না। তা ছাড়া সাধারণ আবিরের চেয়ে ভেষজ আবিরের দামও চড়া। দীর্ঘদিন ধরেই দোলে রঙের কারবার করছেন এমন এক ব্যবসায়ী জানালেন, সাধারণ আবির যেখানে ১০০ গ্রাম ৫ থেকে ১০ টাকা। সেখানে ওই পরিমাণ ভেষজ আবিরের দাম ২৫ থেকে ৩০ টাকা বা তার চেয়েও বেশি।
কিন্তু এ বছর রঙের বাজারের ছবিটা একটু অন্যরকম। বাজারে ইতিমধ্যে নানরকম রঙের জোগানও চলে এসেছে। তবে দোকানে সে ভাবে ভিড় চোখে পড়েনি। এ ব্যাপারে বাগনান বাজারের এক দোকানদারের বক্তব্য, “মাধ্যমির পরীক্ষা চলছে তো, তাই। তবে কাল থেকে দেখবেন ভিড় হচ্ছে।” পাশাপাশি এ কথাও জানাতে ভুললেন না যে দোকানে আসা ক্রেতাদের অনেকেই ভেষজ রঙের খোঁজ করছেন। আর এক দোকানদারের কথায়, “ভেষজ আবিরের দাম বেশির জন্য কম পরিমাণে নিয়ে আসি। যদিও বিক্রি না হয় তা হলে তো লোকসান আমাদেরই। তবে এ বার অনেকেই দোকান এসে খোঁজ করছেন ওই আবিরের।”
হঠাত্ই ভেষজ আবিরের দিকে ঝোঁক বাড়ার কারণ?
ব্যবসায়ীদের কথায়, এ নিয়ে আগের চেয়ে প্রচার বেড়েছে। বেড়েছে মানুষের সচেতনতা। তা ছাড়া চিকিত্সকেরাও রাসায়নিক পদার্থ মেশানো রঙের পরিবর্তে ভেষজ রং ব্যবহারের উপর জোর দিচ্ছেন। এ সব কারণে আগের চেয়ে চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু জোগান সে ভাবে বাড়েনি। বাগনান গ্রামীণ হাসপাতালের বিএমওএইচ ইন্দ্রনীল রায় বলেন, “রাসায়নির রং বা আবির ব্যবহার করলে যাঁদের অ্যালার্জি রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে নানা সমস্যা হতে পারে। তা চাড়া চামড়ারও ক্ষতি হতে পারে। তাই ওই ধরনের রং এড়িয়ে চলাই ভাল।” স্কুলশিক্ষিকা সোমা দাসের বক্তব্য, “দোল খেলতে ভালবাসি। ছোটদের জন্য রং কিনতে হয়। কিন্তু পাছে চোখে, মুখে রং ঢুকে ক্ষতি হয় তাই রাসায়নিক মেশানো আবির, রং কিনতে ভরসা পাই না। তা ছাড়া চিকিত্সকেরাও ভেষজ রং ব্যবহারের উপরেই জোর দেন। এ বারও দোকান থেকে ভেষজ রংই কিনেছি।” তবে সোমাদেবীর মতো অনেকেই ভেষজ রং দোকানে কিনতে গিয়েও না পেয়ে হতাশ হয়েছেন। দোকানদারদের একটাই উত্তর, জোগান নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy