প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা নির্বাচনের কয়েকদিন আগে এলাকার এক তৃণমূল নেতার গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় অভিযুক্তদের অন্যতম ছিলেন পাঁচলার বন হরিশপুর পঞ্চায়তের মিদ্যাপাড়ার এক যুবক। ভোটে আইএসএফের হয়ে খেটেছিলেন তাঁরা। মামলায় আগাম জামিন পেলেও এতদিন ঘরছাড়া ছিলেন ওই যুবক। মঙ্গলবার বিকেলে লুকিয়ে বাড়িতে ঢোকার আগেই তাঁকে ধরে ফেলে গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠল ওই নেতা এবং তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে।
মারধরে জখম আলাউদ্দিন মিদ্যা নামে ওই যুবককে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতালের ভর্তি করানো হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে এবং বিরোধীদের উপরে ‘হেনস্থা’ বন্ধ করার দাবিতে এ দিন পাঁচলা থানায় স্মারকলিপি দেয় ফরওয়ার্ড ব্লক। চেষ্টা করেও ওই তৃণমূল নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। মোবাইলে মেসেজ পাঠালেও তিনি কোনও উত্তর দেননি।
পাঁচলার তৃণমূল বিধায়ক গুলশন মল্লিকের দাবি, ‘‘আলাউদ্দিন আমাদের দলের ওই নেতার গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছিল। সেই রাগেই হাতেনাতে ধরে নেতার লোকজন তাকে চড়চাপড় মেরেছে। তাকে বেঁধে রাখা হয়নি। নেতাই মারের হাত থেকে বাঁচায়।’’
পুলিশ জানিয়েছে, আলাউদ্দিনের সঙ্গে কিছু ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে ওই নেতা ও তাঁর লোকজনে ঝামেলা হচ্ছে এই খবর পেয়ে সে দিন ঘটনাস্থলের দিকে বাহিনী রওনা দিয়েছিলেন। তবে, ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে বেঁধে রাখা অবস্থায় দেখা যায়নি। বেঁধে রাখার কোনও সাক্ষীও মেলেনি। জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘আলাউদ্দিন যদি অভিযোগ দায়ের করেন, তা হলে মামলা রুজু করে তাঁকে বেঁধে রাখার ঘটনার
তদন্ত হবে।’’
আলাউদ্দিন বলেন, ‘‘সুস্থ হলেই এফআইআর করব। সে দিন আমাকে দু’ঘণ্টা বাদাম গাছে বেঁধে রেখে চড়-কিল-ঘুষি মারা হয়। গ্রামে পুলিশ ঢুকছে এই খবর ওই নেতা পেতেই তড়িঘড়ি বাঁধন খুলে দেওয়া হয়। তারপরে আমিই যে গাড়ি পুড়িয়েছি তা জোর করে স্বীকার করিয়ে ভিডিয়োগ্রাফি করে আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমরা সংযুক্ত মোর্চার হয়ে কাজ করেছি বলেই গাড়ি পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগ আনা হয়েছে।’’
আলাউদ্দিন জরির কারিগর। তাঁকে কাজ দেওয়ার জন্য এক ওস্তাগর মঙ্গলবার তাঁর বাড়িতে আসেন। দাদা তাঁকে ফোনে খবর পাঠিয়ে বাড়িতে আসতে বলেন। সেই কারণেই তিনি বাড়িতে ফিরছিলেন বলে আলাউদ্দিন জানান। এতদিন ওই নেতার হুমকিতে তিনি ঘরছাড়া ছিলেন বলে অভিযোগ।
গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় মোট অভিযুক্ত ১৫ জন। আলাউদ্দিন-সহ সকলেই আগাম জামিন পেয়েছেন। তবে, সেই ঘটনা বা আলাউদ্দিনের আক্রান্ত হওয়া নিয়ে স্থানীয় আইএসএফ নেতৃত্ব কোনও মন্তব্য করতে চাননি। মোর্চা নেতৃত্ব তাঁর পাশে নেই বলে খেদ প্রকাশ করেছেন আলাউদ্দিন। ভোটে পাঁচলার আইএসফ প্রার্থী আব্দুল জলিল বলেন, ‘‘আমি এখন রাজনীতির বাইরে।’’
তবে, আইএসএফ-এর সঙ্গে জোটের প্রতিবাদে পাঁচলার ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব এ বারের নির্বাচনে বসে গিয়েছিলেন। তাঁদের অবশ্য পাশে পেয়েছেন আলাউদ্দিন। ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ফরিদ মোল্লা বলেন, ‘‘আলাউদ্দিনদের ভুল বুঝিয়ে সংযুক্ত মোর্চার হয়ে নির্বাচনে খাটানো হয়েছিল। এখন আর কেউ তাঁদের পাশে নেই। নির্বাচনে জিতে যে ভাবে শাসক দল বিরোধীদের উপরে আক্রমণ শানাচ্ছে তাতে একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বসে থাকা যাবে না।’’ বিরোধীদের উপরে হামলার অভিযোগ মানেননি গুলশন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy