E-Paper

বড় ও ছোট বাড়ির জগদ্ধাত্রীতে মাতে নারিট

দুটি বাড়ি আলাদা হলেও আদতে দুই পরিবারই একই বংশের। পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় চারশো বছর আগে কনৌজ থেকে পাঁচটি ব্রাহ্মণ পরিবার হুগলির শিয়াখালায় বসবাস শুরু করেন।

ছোট বাড়ির প্রতিমা।

ছোট বাড়ির প্রতিমা। নিজস্ব চিত্র।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:১০
Share
Save

পাশাপাশি দুটি জমিদার বাড়ি। দুটি পৃথক প্রবেশ দ্বার। একটির মাথায় লেখা ‘বড় বাড়ি’। অন্যটিতে লেখা ‘ছোট বাড়ি’। বড়বাড়ির গৌরব কবি নবকৃষ্ণ ভট্টাচার্যকে কেন্দ্র করে। আর ছোট বাড়ির গর্ব কলকাতার সংস্কত কলেজের এক সময়ের অধ্যক্ষ মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্নকে নিয়ে। আমতার নারিট গ্রামে এই দুই নক্ষত্রের বাড়িতে পাশাপাশি দুটি জগদ্ধাত্রী পুজো নিয়ে মেতে ওঠেন গ্রামবাসীরা। এই পুজোর সব পর্ব এক দিনেই সারা হয়।

দুটি বাড়ি আলাদা হলেও আদতে দুই পরিবারই একই বংশের। পরিবারের সদস্যরা জানান, প্রায় চারশো বছর আগে কনৌজ থেকে পাঁচটি ব্রাহ্মণ পরিবার হুগলির শিয়াখালায় বসবাস শুরু করেন। কয়েক বছর পরে বর্ধমানের মহারাজা নারিট গ্রামে তাঁদের কিছু জমি দেন। তখন ওই দুই পরিবার শিয়াখালা থেকে নারিটে এসে জমিদারি পত্তন করেন। দুটি পরিবারের একটি পরিচিত হয় বড় বাড়ি এবং অন্যটি ছোট বাড়ি হিসাবে। দুটি পরিবারেরই পদবি ছিল ভট্টাচার্য। দুটি পরিবার পাশাপাশি জমিদারি মহাল তৈরি করে।

সাড়ে তিনশো বছর আগে এই দুটি বাড়িতেই চালু হয় দুর্গাপুজো যা বড় বাড়ি ও ছোট বাড়ির পুজো নামে পরিচিত। দুটি পুজোই এখনও সাড়ম্বরে হচ্ছে। তার জন্য রয়েছে স্থায়ী দুর্গা দালান। আর প্রায় দেড়শো বছর আগে দু’বাড়িতে শুরু হয় জগদ্ধাত্রী পুজো।

জগদ্ধাত্রী পুজো চালুর কারণ হিসাবে ছোট বাড়ির এক সদস্য তপন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমাদের পরিবারের এক সময়ের কর্তা মহেশচন্দ্র ন্যায়রত্নই প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজো চালুর প্রস্তাব দেন। তাঁর যুক্তি ছিল, দুর্গাপুজোর সময়ে এই পরিবারের অনেক মেয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন না। তাঁরাও যাতে পুজোর আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সেই কারণেই শুরু জগদ্ধাত্রী পুজোর। এই পুজোয় মেয়েদের সঙ্গে হাজির থাকেন জামাইরাও। তপনবাবু বলেন, ‘‘এ কারণেই আমাদের বাড়ির পুজো ‘মেয়ে-জামাইয়ের পুজো’ নামেও পরিচিত।’’ একই সুর বড় বাড়ির তরফে অনাদি ভট্টাচার্যের গলাতেও।

পুজো উপলক্ষে দুটি বাড়ি আলোয় সেজে উঠেছে। দুর্গাপুজোর স্থায়ী দালানে বসানো হয়েছে দু্টি জগদ্ধাত্রী প্রতিমাকে। তপন বলেন, ‘‘একটা সময়ে দুটি পরিবারের মেয়ে-জামাইরাই পুজোর যাবতীয় আয়োজন করতেন। এখন আর সেই দিন নেই। পরিবারের সদস্যরা তো দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে রয়েছেন। ফলে সব কাজ আমাদেরই করতে হয়। তবে মেয়ে-জামাইরা ঠিক চলে এসে পুজোর হাল ধরেন। বাড়ির বৌয়েরাও দায়িত্ব সামলান।’’

ঐতিহ্য আর পুজোর সৌরভে নিজেদের সেঁকে নিতে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা। সুরজিৎ হাজরা নামে এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘দুর্গাপুজোর থেকে কম আনন্দ হয় না ওই দুই বাড়ির পুজো। ভোগ খেতে যাওয়া, প্রতিমা দর্শনের অনুভূতিই আলাদা।’’

গ্রামবাসী ষাটোর্ধ্ব দুর্গাপ্রসাদ হাজরা বলেন, ‘‘আগে এই পুজোর কত জাঁক ছিল! দিন বদলাচ্ছে। তেমন দিন কি আর ফিরে আসবে? তবু এই পুজো এখনও আমাদের গ্রামেরই পুজো।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Amta

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

ক্যানসেল করতে পারবেন আপনার সুবিধামতো

Best Value
প্রতি বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
প্রতি মাসে

৪২৯

১৬৯

প্ল্যানটি সিলেক্ট করে 'Subscribe Now' ক্লিক করুন।শর্তাবলী প্রযোজ্য।