Advertisement
E-Paper

Panchla: প্রশাসন ঠুঁটো, চাঁদা তুলে রাস্তা গড়ছেন গ্রামবাসী

বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতি বর্ষার মরসুমে এ দৃশ্য বারবার ফিরে এসেছে পাঁচলার বনহরিশপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। তিন মাস ধরে ভুগতে হয়েছে গ্রামবাসীদের।

গত বছর বর্ষায় রাস্তা উধাও (বাঁ দিকে) ফাইল ছবি। চাঁদা তুলে তৈরি হচ্ছে সেই রাস্তা।

গত বছর বর্ষায় রাস্তা উধাও (বাঁ দিকে) ফাইল ছবি। চাঁদা তুলে তৈরি হচ্ছে সেই রাস্তা। নিজস্ব চিত্র।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০২২ ০৭:৩৩
Share
Save

রাস্তায় একবুক জল। জামাকাপড় ব্যাগে ভরে গামছা পরে রাস্তা পেরোচ্ছেন গ্রামবাসী।

গত বেশ কয়েক বছর ধরে প্রতি বর্ষার মরসুমে এ দৃশ্য বারবার ফিরে এসেছে পাঁচলার বনহরিশপুর পঞ্চায়েত এলাকায়। অন্তত তিন মাস ধরে ভুগতে হয়েছে গ্রামবাসীদের। ফের বর্ষার মরসুম আসছে। এ বার পরিত্রাণ চান তাঁরা। তাই নিজেরাই চাঁদা তুলে প্রায় দেড় কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারে নেমে পড়েছেন।

পুঁটিখালি বড়বাঁধ থেকে পুঁটিখালি মাঝেরপাড়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার লম্বা এবং প্রায় ২০ ফুট চওড়া ওই মাটির রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরেই বেহাল। পঞ্চায়েত সমিতির তা সংস্কার করার কথা। কিন্তু এখনও করেনি। গ্রামবাসীদের দাবি, ‘দিদিকে বলো’-তে ফোন, বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি, ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কাছে বার বার আবেদন জানানো হলেও কোনও কাজ হয়নি। তাই নিজেরাই হাত লাগিয়েছেন।

রাস্তাটি গিয়েছে নিচু জমির বুক চিরে। বর্ষার সময়ে জমিতে জল জমে যায়। নিকাশি খাল সংস্কার না হওয়ায় গোটা বর্ষার মরসুমে প্রায় তিন মাস ধরে জল আর বের হতে পারে না। জল ভেঙেই গ্রামবাসীদের যাতায়াত করতে হয়। এই তিনমাস ছেলেমেয়েরা স্কুলেও যেতে পারে না। যাঁরা কাজে যান, তাঁরা বড় রাস্তায় উঠে গামছা ছেড়ে ফের জামাকাপড় পরেন। সবচেয়ে বেশি অসুবিধা হয় অসুস্থ ও প্রসূতিদের। ডুলি বানিয়ে তাতে তাঁদের চাপিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। ডুলিতেই অনেক প্রসূতি সন্তানের জন্ম দিয়েছেন বলে গ্রামবাসীরা জানান।

এই রাস্তার দু’ধারে বসবাস করে প্রায় ৭০টি পরিবার। বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় ৩০০। তাঁদের মধ্যে জাকির মল্লিক, সইদুল মিদ্দা, শেখ হারুন রসিদ, আসলাম আলিরা জানান, সামনেই বর্ষা। ফের যাতে তাঁদের জলে ডুবে থাকা রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে না হয় সে জন্যই নিজেদের উদ্যোগে রাস্তা সংস্কারের কাজে নেমেছেন।

সইদুল বলেন, ‘‘আমরা যেমন নিজেরা চাঁদা দিয়েছি, তেমনই আশেপাশের গ্রামেও গিয়েছি চাঁদা তুলতে। সবাই সাধ্যমতো চাঁদা দিয়েছেন। বর্ষাকালে আমাদের কষ্টটা সবাই নিজের চোখে দেখেছেন। তাই চাঁদা দিতে কেউ কার্পণ্য করেননি। মাত্র পনেরো দিনে উঠেছে লক্ষাধিক টাকার চাঁদা। তাতেই মাটি কাটার যন্ত্র ব্যবহার করে রাস্তার পাশের খাল দিয়ে মাটি তুলে ১২ ফুট চওড়া রাস্তাবানানো হচ্ছে।’’

হারুন রশিদ বলে‌ন, ‘‘রাস্তা যথেষ্ট উঁচু করা হয়েছে। আশা করি, এই বর্ষায় আর আমাদের বুক জল ভেঙে বড় রাস্তায় উঠতে হবে না।’’

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, রাস্তা যেমন সংস্কার করা হয়নি, তেমনই সংস্কার হয়নি নিকাশি ব্যবস্থারও। হারুন বলেন, ‘‘নিকাশি ব্যবস্থাসংস্কার না হওয়ায় জমিতে কানা দামোদর নদ থেকে জল আসে না। আবার বর্ষাকালে জল বেরোতে পারে না। জোড়া ফাঁসে শত শত বিঘা জমির চাষ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আমরা নিকাশি ব্যবস্থা সংস্কারেরও দাবি করেছি। সেটাও মানা হয়নি।’’

এখন অবশ্য রাস্তা নিয়েই ব্যস্ত গ্রামবাসী। জাকির বলেন, ‘‘এরপরে আমরা ফের চাঁদা তুলব। সেই টাকায় ইট পাতা হবে। মনে করলে রাস্তার দাবিতে আন্দোলন করতাম। কিন্তু আমরা বিকল্প পথ নিয়েছি। নিজেরাই কিছুটা কাজ করে আমরা প্রশাসনকে দেখিয়ে দিতে চাই, রাস্তার প্রয়োজন আমাদের কতটা। এখনও আমরা চাই আমাদের সেই ইতিবাচক মনোভাবকে স্বীকৃতি দিয়ে সরকারই রাস্তার বাকি কাজটুকু করে দিক।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

villagers road constrution

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।