Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
Bird Migration

সংস্কারে হয়নি, কচুরিপানা ঢাকা সাঁতরাগাছি ঝিল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে শীতের পরিযায়ী পাখিরা

সাধারণ ভাবে কোনও জলাশয়ে সামগ্রিক আয়তনের ৩০ শতাংশের কাছাকাছি এলাকায় কচুরিপানা থাকলে তা জলচর পাখিদের পক্ষে আদর্শ পরিবেশ। কিন্তু এখন সাঁতরাগাছি ঝিলের বেশিরভাগ অংশ পানায় ঢাকা!

কচুরিপানায় ঢাকা সাঁতরাগাছি ঝিল।

কচুরিপানায় ঢাকা সাঁতরাগাছি ঝিল। —নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২৩:১৩
Share: Save:

শীত পড়লেও হাওড়ার সাঁতরাগাছি ঝিলে দেখা নেই পরিযায়ী পাখিদের। ঝিল সংস্কার না হওয়ার কারণেই অতিথি হাঁসের দল এখনও আসছে না বলে মনে করছেন স্থানীয়দের একাংশ।

সাঁতরাগাছি স্টেশনের পাশেই রয়েছে ১৩ একরের জলাশয়। এই ঝিলটি ‘সাঁতরাগাছি পাখিরালয়’ নামে পরিচিত। কারণ গত তিন দশক ধরে শীতের শুরুতে এখানে আসে ঝাঁকে ঝাঁকে পরিযায়ী পাখির দল। হিমালয়ের পাদদেশ থেকে লেসার হুইসলিং টিল (ছোট সরাল) এমনকি, সুদূর সাইবেরিয়া থেকে নর্দার্ন পিন টেল হাঁসেরা আসে এখানে। যা দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ। আসেন পাখিপ্রেমীরা। ক্যামেরাবন্দি করেন পাখিদের ছবি। কলকাকলিতে এক অন্যরকম পরিবেশ তৈরী হয় সাঁতরাগাছি ঝিলে।

কিন্তু এ বছর এখনও সেই পাখিদের দেখা নেই। কারণ হিসাবে স্থানীয়দের একাংশ মনে করছেন ঝিল ঠিক মতো পরিষ্কার না হওয়ার কারণে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে পাখিরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, গত কয়েক বছর ধরে পুজোর পরেই ঝিল পরিষ্কার করে পাখিদের নিরাপদ আস্তানা গড়ে দেওয়া হত ঝিলে। এ বছর সেখানে সেই কাজ হয়নি। ঝিলের জল ঢেকে রয়েছে কচুরিপানায়। এলাকার নোংরা জল গিয়ে মিশছে জলে। লোহার জাল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল ঝিল। সেই বেড়া ভেঙে গিয়েছে। নোংরা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে ঝিলে। সব মিলিয়ে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এলাকার মানুষজন জানান অবিলম্বে এই ঝিলের প্রতি নজর দিক প্রশাসন। তা না হলে এখান থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্য কোথাও চলে যাবে পরিযায়ী পাখির দল। যেমন নব্বইয়ের দশকে তারা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল আলিপুর চিড়িয়াখানার জলাশয় থেকে।

হাওড়ার পুর প্রশাসক সুজয় চক্রবর্তী জানান ঝিলটি রেলের। সংলগ্ন এলাকা পুরসভার। তাই রেলের সঙ্গে কথা বলে ঝিলটি সংস্কার করে পাখিদের অনুকূল পরিবেশ যাতে তৈরী করা যায় তার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতি বছর সাঁতরাগাছি ঝিলে পরিযায়ী পাখি সুমারি করে কলকাতার পাখি পর্যবেক্ষকদের সংগঠন প্রকৃতি সংসদ। সংগঠনের সহ-সম্পাদক অপূর্ব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সাধারণ ভাবে আমরা জানুয়ারিতে পরিযায়ী পাখি সুমারি করি সাঁতরাগাছিতে। এ বছর ৪ জানুয়ারি সুমারি হবে। পরিযায়ীদের উপস্থিতি কেমন, সে সংক্রান্ত তথ্য সুমারির পরেই জানা যাবে।’’

তিনি জানান, সাধারণ ভাবে কোনও জলাশয়ে সামগ্রিক আয়তনের ৩০ শতাংশের কাছাকাছি এলাকায় কচুরিপানা থাকলে তা হাঁস-সহ জলচর পাখিদের পক্ষে আদর্শ পরিবেশ। কিন্তু এখন সাঁতরাগাছি ঝিলের বেশিরভাগ অংশই কচুরিপানায় ঢাকা! গত ছ’বছর ধরে কলকাতার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাঁতরাগাছি ঝিলে কচুরিপানা সাফাইয়ের কাজ করে। এ বছর সেই কাজ হয়নি বলে জানিয়েছেন সংগঠনের কর্ণধার অর্জন বসু রায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা রাজ্য জীববৈচিত্র পর্ষদের আর্থিক সহাযোগিতায় এই কাজ করতাম। এ বছর পর্ষদ থেকে কোনও অর্থসাহায্য না মেলায় কচুরিপানা সাফাইয়ের কাজ হয়নি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bird Santragachi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy