কলেজের গেটে পোস্টার। নিজস্ব চিত্র।
তিন দিন পরে শনিবার কলেজে এলেন বলাগড় বিজয়কৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখলেন, কলেজের চৌহদ্দিতে তাঁর বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে। কোনও পোস্টারে তাঁকে ‘বিজেপির দালাল’ বলা হয়েছে, কোনও পোস্টারে তিনি ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নামে কুরুচিকর মন্তব্যকারী’, কোনও পোস্টারে তাঁর পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে।
কলেজে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে বলে এ দিন বলাগড় থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন অধ্যক্ষ। ফলে, শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে কলেজ কর্তৃপক্ষের সংঘাতের আবহ জারি রইল। অধ্যক্ষের অবশ্য বক্তব্য, মঙ্গলবার বহিরাগত বহু লোক কলেজে হামলা করেছিল।
তিনি ওই সব লোকেদের কারণে নিরাপত্তার অভাবের কথা পুলিশকে জানিয়েছেন। ছাত্রছাত্রীদের বিরুদ্ধে তাঁর অভিযোগ নেই। পুলিশ জানিয়েছে, অধ্যক্ষের অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ দিন কলেজে পরীক্ষা ছিল। কলেজ সূত্রের খবর, অধিকাংশ পরীক্ষার্থী অনলাইনে পরীক্ষা দেন। কিছু পড়ুয়া কলেজে এসে পরীক্ষা দিয়েছেন। অধ্যক্ষ নিজের ঘরে বসে কাজ করেন। কোনও অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তৃণমূল নেতা তথা এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক অসীম মাঝি এবং যুবনেতা শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ফ্লেক্স কলেজের গেট থেকে সরানো নিয়ে মঙ্গলবার গোলমাল হয়। অধ্যক্ষের নির্দেশে ওই ফ্লেক্স শৌচাগারের সামনে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ‘অপমান’ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন টিএমসিপি সমর্থক কয়েক জন পড়ুয়া। অধ্যক্ষ এবং অন্য শিক্ষকদের ঘেরাও করা হয়। অভিযোগ, ওই রাতে অধ্যক্ষকে কার্যত নতিস্বীকার করে ওই ফ্লেক্স ফের বিক্ষোভকারীদের কথামতো যথাস্থানে রেখে দিতে হয়। সেই সময় বহিরাগতরাও তাঁকে হেনস্থা করে বলে অভিযোগ। তার পর থেকে অধ্যক্ষ তিন দিন কলেজে আসেননি। এ দিনও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা বিজয়কৃষ্ণ মোদকের
মূর্তি ঘিরে ওই দু’টি ফ্লেক্স লাগানো ছিল।
কলেজে টিএমসিপির নামে পোস্টার পড়লেও সংগঠনের জেলা নেতৃত্ব এর সঙ্গে বিশেষ জড়াতে চাননি। বিষয়টি নিয়ে তাঁরা কোনও রকম হস্তক্ষেপও করেননি। জেলা টিএমসিপি সভাপতি সোমবুদ্ধ দত্ত বলেন, ‘‘এটা স্থানীয় কোনও সমস্যা হতে পারে। আমার কাছে এ নিয়ে কেউ কোনও অভিযোগ জানাননি বা রিপোর্ট করেননি। করলে ঊর্ধ্বতন নেতৃত্বকে জানানো বা আমার তরফে যা করার, নিশ্চই করব।’’
তৃণমূল শিবিরের খবর, কলেজে উদ্ভূত পরিস্থিতির মূলে রয়েছে শাসক দলের দুই অংশের ‘লড়াই’। স্থানীয় বিধায়ক তথা কলেজের সভাপতি মনোরঞ্জন ব্যাপারী সরাসরি শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অসীম মাঝির দিকে আঙুল তুলে গোলমালের দায় তাঁদের উপরে চাপিয়েছেন। পাল্টা শান্তনু প্রশ্ন তুলেছেন বিধায়কের উদ্দেশ্য নিয়ে।
এই পরিস্থিতিতে জল কত দূর গড়ায়, সেটাই দেখার।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy